সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২১
গোলাম সরওয়ার বেলাল, জৈন্তাপুর :: সিলেট গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং বন বিট একদিকে চলছে সমাজিক বনায়নের কাজ অপর দিকে চলছে টিলাকেটে পাথর বিত্রিুর মহোৎসব, আর এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বনের রক্ষক। বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম রাজু’র বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে বন বিভাগের জমি ও টিলা কেটে পাথর উত্তোলন, জায়গা দখল দেওয়া ও ভাড়া দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এসব অপর্কমের প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিবাদকারীদের হয়রানী করেন। অপকর্ম করতে গিয়ে তিনি এলাকায় একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন। বনের জমির উপর রয়েছে একাধিক কলোনী। রহস্যজনক কারণে দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের, নলজুরী, শান্তিনগর, সোনাটিলা, মোহাম্মদপুর, রহমতপুর কানাইজুরী, তামাবিল এলাকায় রয়েছে বন বিভাগের কয়েক হাজার একর জমি। সিলেট-তামাবিল-জাফলং মহাসড়কের দুই পাশে অনেক জমি বেদখল হয়ে যায়। বন বিভাগের এসকল জমিতে গড়ে উঠে স্টোন ক্রাশার মেশিন এবং পাথর-কয়লার রাখার ডাম্পিং ইয়ার্ড।
বন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম রাজু ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সারী রেঞ্জের অধিনে জাফলং বিট অফিসে যোগদানের পর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ভালো সাজতে তামাবিল ও মোহাম্মদপুরের কিছু জায়াগা উদ্ধার করেন এবং কিছু অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করেন। উচ্ছেদের পর হতে শুরু হয় তার অবৈধ ভাড়া বানিজ্য। তিনি সোনাটিলা মৌজায় প্রায় পনের-বিশ একর জমি প্রতি শতক বার্ষিক পনেরো হাজার টাকা হিসেবে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া প্রদান করেন। মোহাম্মদপুরে তিনি কয়েকটি স্টোন ক্রাশার বসানোর সুযোগ দেন। কর্মকর্তা নিজেই এলাকায় গড়ে তোলেন একটি নিজস্ব বাহিনী। আর বাহিনীর মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে রাতের আধারে গাছ কেটে তামাবিল রাস্তা হতে প্রায় পাঁচ’শ গজ ভেতরে পাথর রাখার ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি করে দেন।
সরেজমিনে, কানাইজুরি, নলজুরি এলাকায় বন ভূমি উজার করে টিলা কেটে পাথর উত্তোলণ করছে তার নিজস্ব বাহিনী। এসব পাথরের প্রতি গাড়ি ও ট্রলি হতে পাচ’শ হতে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত তিনি চাঁদা আদায় করেন। ইতোমধ্যে সংরক্ষিত বন এলাকায় অনেক বসতি গড়ে উঠেছে। এদেরকে উচ্ছেদ না করে তিনি প্রতিটি স্থাপনা ও বাড়ী হতে নিয়মিত মাসোহারা আদায় করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কেউ মাসোহারা না দিলে তাকে মিথ্যা মামলার আসামী করা হয়। লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে তাদের উপর হামলা করা হয়। শুধু তাই নয় হামলার শিকার অসহায় পরিবারকে দু একদিন পর গাছ কাটার মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। কর্মকর্তার ভয়ে কেউ মুখ খোলতে সাহস পায় না। জাফলংয়ের বেশির ভাগ মানুষই বন বিভাগের দায়েরকৃত ২৫-৩০টি মামলার আসামী হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম রাজু এসব অপকর্মের মাধ্যমে কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তিনি নিজ এলাকায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। কিছুদিন পুর্বে আট লক্ষ টাকা দামের একটি প্রাইভেট কার কিনেন। তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী এলাকাবাসী।
জহিরুল ইসলাম রাজু’র ভিডিও ক্লিপে শোনা যায়, আমি এই বিটে থাকাবস্থায় সাংবাদিক, পুলিশ, ডিজিএফআই, সিআইডি, সর্বশেষ গত রমজান মাসে আয়নুল ও কবির মিলে মাইটিভি‘র সাংবাদিককে নিয়ে আসে, তখন নিজে না খেয়ে লক্ষ টাকা দিয়ে ম্যানোজ করি।
সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ সাদ উদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ আমি সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাইনি। অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিট কর্মকর্তার স্বীকারোক্তি মূলক বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ দেখিনি। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হলাম, ভিডিও পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd