মন্দিরের জমি দখল নিতে পুরোহিতের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা মামলা

প্রকাশিত: ১১:৫৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২১

মন্দিরের জমি দখল নিতে পুরোহিতের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা মামলা

Manual8 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাঘা ইউনিয়নের একটি মন্দিরের পুরিহতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনের দাবি, বাঘার এই মন্দিরের জমি দীর্ঘদিন ধরেই দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে একটি গোষ্টি। মন্দিরের জমি দখল নিতেই পুরোহিতকে ধর্ষণচেষ্টার মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

Manual6 Ad Code

শনিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেও এমনটি দাবি করা হয়। বাঘায় ধর্ষণচেষ্টার কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলেও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

Manual1 Ad Code

গিরিধারী জিউ মন্দিরে ভক্তবৃন্দের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্থানীয় বাসিন্দা লিংকন দেব।

বাঘার কালাকোনা গ্রামের গিরিধারী জিউ মন্দিরের পুরোহিত প্রাণগোবিন্দ দাস ওরফে ফরেস্ট চৌহান (৪৬)সহ দুজনকে আসামি ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন এই গ্রামেরই এক তরুণী। বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর ওইদিনই পুরোহিতকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।

এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে লিংকন দেব বলেন, ঘটনার বিষয়ে গণমাধ্যমে কথিত ভিকটিমের পরিবারের দেওয়া বক্তব্য ও এজাহারে দেওয়া বক্তব্যের মধ্যে কোনো মিল নেই।

তিনি বলেন, মন্দিরের সেবায়েত প্রাণগোবিন্দ দাস ও মন্দিরের ভূমিদাতার ছেলে দিপংকর দেবকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আসামী করে মামলা করা হয়। মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, ঘটনারদিন সন্ধ্যা ৭ টায় বাথরুমে যাওয়ার জন্য বের হলে তাকে ধর্ষণের চেষ্ঠা করা হয়। অথচ তাদের পরিবারই আবার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে- ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহনের জন্য সেবায়েতের কাছে গেলে তাকে ধর্ষণ চেষ্ঠা করা হয়।

Manual3 Ad Code

লিংকন দেব জানান, কথিত ঘটনার দুইদিন পর ১৫ এপ্রিল বিকালে পুরোহিতকে সুনাপুর চৌমুহনী অধীরের দোকান নামক বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় পুরোহিত বাজারে সবজি কিনতে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, কেউ অপরাধ করার পর স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না। আত্মগোপন করতেন। কিন্তু পুরোহিত স্বাভাবিকভাবেই বাজার করতে গেছেন। তা ছাড়া মামলায় সাক্ষি রাখা হয়েছে অন্য এলাকার লোকদের। ঘটনাস্থলের আশপাশের কাউকে সাক্ষি রাখা হয়নি।

লিংকন দেব আরও বলেন, ২০১৯ সালের ২৩ আগষ্ট মন্দিরের নির্মাণকাজে বাধা প্রদান করে ধর্ষণচেষ্টা মামলার বাদির পরিবার। তারা ২ লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করে। একই বছরের ২২ ডিসেম্বর মন্দিরে ঢুকে সেবায়েতকে তারা লাঞ্ছিত করে। চাঁদা দাবি ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় দায়েল করা মামলায় সিআইডি তদন্ত করে অভিযোগপত্রও প্রদান করেছে।

Manual7 Ad Code

জমি নিয়ো বিরোধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শুক্রবার গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল হাসান শুক্রবার বিকেলে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের কথা আমিও শুনেছি। তবে ওই পুরোহিতের চারিত্রিক সমস্যা আছে বলেও এলাকার অনেকে জানিয়েছেন। আরও কয়েকজন নারীকে তিনি কুপ্রস্তাব দেন। এমনকি যে তরুণী মামলা করেছেন তার বড় বোনকেও ওই পুরোহিত কুপ্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। সবকিছুই আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

ওসির ওই বক্তব্য প্রসঙ্গে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে আসা স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার যোগসাজশে মন্দিরের জায়গা দখলের জন্য স্থানীয় কিছু লোক এসব ঘটনা সাজিয়েছে। গোলাপগঞ্জ থানায় পুলিশ ওই নেতার নিয়ন্ত্রণে। ফলে পুলিশ কর্মকর্তারা তার কথা অনুযায়ী মিডিয়ায় বক্তব্য দিচ্ছেন।

সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার মুল রহস্য খোঁজে বের করার দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিজিত কুমার দাস, বিধান দেব, ঝলক দেব, টিপু দেব, সত্য রঞ্জন বিশ্বাস, উজ্জল দেব, নীরেশ চন্দ্র নম, রাহুল কান্তি দে প্রমুখ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..