হবিগঞ্জে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২০

হবিগঞ্জে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হবিগঞ্জে বাহুবলে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। পিত্রালয়ের লোকজনের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ আর শ্বশুরালয়ের লোকজন বলছেন ‘আত্মহত্যা’। এ অবস্থায় ঘটনাটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল।

Manual8 Ad Code

জানা যায়, উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ফদ্রখলা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা হারুনুর রশিদের পুত্র সৌদি প্রবাসী শাহ আলম প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ে করেন একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মির্জাটুলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নুরুল ইসলামের কন্যা তানিয়া আক্তারকে। বর্তমানে তাদের ঘরে সামিউল ইসলাম নামে ২২ মাস বয়সি এক পুত্র সন্তান রয়েছে।

প্রতিবেশিরা জানান, গত শনিবার দিবাগত রাতে তাদের ঘরে ঝগড়া-ঝাটির শোর-চিৎকার শুনতে পান তারা। রবিবার দুপুরে শুনতে পান তানিয়া বিষপান করেছে। এরপর তাকে প্রথমে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা।

সোমবার সকালে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছা মাত্রই তানিয়া (২২) এর মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাতে তাকে তার পিত্রালয়ে দাফন করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী ও বাহুবল থানা পুলিশ।

Manual8 Ad Code

এদিকে এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তানিয়া আক্তারের মামা আব্দুর রহিম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি সিলেটে ছিলাম। খবর পেয়ে পুলিশের সাথে ঘটনাস্থলে যাই।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তানিয়ার দেবর জানে আলমও সৌদি প্রবাসী। করোনা শুরুর আগে সে দেশে আসে। দেশে আসার পর থেকেই সে তার ঘরে স্ত্রী রেখেও তানিয়ার উপর কু-দৃষ্টি দেয়। একপর্যায়ে সে বার-বার কু-প্রস্তাব দিয়ে অতিষ্ট করে তুলে তানিয়াকে। সম্প্রতি বিষয়টি শ্বাশুড়ি সুফিয়া আক্তারকে জানায় তানিয়া। এরপর একে একে শ্বশুর হারুনুর রশিদ, ননদ বাপ্পি আক্তার ও জানে আলমের স্ত্রী ঝুমা আক্তারসহ পরিবারের সকলেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। কিন্তু সব কিছু জেনেও তারা উল্টো দোষারোপ করেন তানিয়াকে।’

তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বরাত দিয়ে আব্দুর রহিম আরো বলেন, ‘গত শনিবার রাতে তানিয়ার দরজার ছিটকিনি ভেঙ্গে রুমে প্রবেশ করে জানে আলম। এ সময় তাকে হয় ধর্ষণ করেছে না হয় ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। ঘটনার সময় শোর-চিৎকার করে তানিয়া। শোর-চিৎকারের কারণে তাদের মান-সম্মান নষ্ট হয়েছে বলে তানিয়াকে মারধর করেন শ্বশুর-শ্বাশুরি ও ননদ। একপর্যায়ে তাকে বাথরুমে আটকে রাখা হয়। পরে তাকে পরিকল্পিতভাবে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়।’ তিনি জানান, এ হত্যাকান্ডের সাথে জানেআলমের পরিবারের সকলেই জড়িত। তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন লিয়াকত জানান, ‘বিষয়টি শুনার পর আমারা ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করি। প্রাথমিক ভাবে শুনেছি ওই গৃহবধু বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তবে এনিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগও রয়েছে। আশাকরি তদন্তে ঘটনার প্রকৃত কারণ বের হয়ে আসবে।

Manual1 Ad Code

জানতে চাইলে নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী বলেন, ‘তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছেন সে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু পিত্রালয়ের লোকজন দাবি করছেন তাকে পরিকল্পিতভাবে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। সুতরাং তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কোন কিছুই বলা যাচ্ছেনা।’

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2020
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..