সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : দীর্ঘদিন পর এবার আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ। বহু বছর পর জেলা মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের তৎপরতা শুরু হয়েছে। এবার অন্তত নেতাকর্মীরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে সম্ভাব্যদের নামের তালিকা এখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর হাতে ।
সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থা গুলো পদ প্রত্যাশীদের ম্যান টু ম্যান ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অতীতে দলে ভূমিকা, শৃঙ্খলা, পারিবারিক পরিচিতিসহ সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত শেষ হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংগঠন আরেক দফা অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট তৈরি করবে বলে জানা যায়। এরপরেই আসতে পারে সংগঠনের কমিটি।
এদিকে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক হিসেবে পদে সম্ভাব্য যেসব নেতাদের নামের তালিকা সেই বিশ জনের নাম এখন গোয়েন্দাদের হাতে। এর মধ্যে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে সম্ভাব্য তালিকায় পাঁচ জন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি পদে সম্ভাব্যদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচ জন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক পদেও সম্ভাব্যদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচজন, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদ পদে সম্ভাব্যদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচজনসহ জেলা ও মহানগর এর বিশ জন ছাত্রলীগ নেতার নাম এখন গোয়েন্দাদের হাতে।
জেলা সভাপতি পদে সম্ভাব্যদের মধ্যে যারা আছেন তারা হলেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট ল কলেজের শিক্ষার্থী মুহিবুর রহমান, সাবেক জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মেট্রাপলিটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাওসার আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সিলেট সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী অসিম কান্তি কর, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এমসি কলেজের শিক্ষার্থী কনক পাল অরুপ।
সিলেট মহাহনগর ছাত্রলীগের সভাপতি পদে সম্ভাব্যদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচ জন। তারা হলেন, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী আলী হোসেন আলম, সাবেক নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আলম শাওন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শফায়েত খান, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক সভাপতি হুসাইন মোহাম্মদ সাগর, সিলেট ল কলেজের শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান সাদিক।
এদিকে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক পদে সম্ভাব্যদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচ জন। তারা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এএম ফারহান সাদিক, সিলেট ’ল’ কলেজের শিক্ষার্থী এস এম রুবেল আহমদ (শামছুল আহমদ), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ পাঠাগার সম্পাদক এম আর মুহিব, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলাম রাহাত, এমসি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা রুবায়েত আহমদ শাকিল।
মহানগর ছাত্রলীগের সধারন সম্পাদক পদেও সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন পাঁচ জন। তারা হলেন, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটর শিক্ষার্থী কিশোর জাহান সৌরভ, ছাত্রলীগ নেতা ল কলেজের শিক্ষার্থী জুবের আহমদ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হুমায়ুন রশীদ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ময়জুল ইসলাম রাহাত, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সানী।
জানা যায়, সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি নেই বেশ ক’বছর। দীর্ঘদিন সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় সিলেটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যে যেভাবে পারছে তারা এখন বহুধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ’কতিপয় ভাই’দের নিয়ন্ত্রণে একাধিক গ্রুপের ভিতরে গড়ে অসংখ্য উপ গ্রুপ। নেতাকর্মীরা জড়িয়ে পড়ছে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে। আর এসব ঘটনা সময়ে অসময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগকেও ফেলছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। তবে সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় কেউ কোন দায়িত্ব নিতে চাননা। খোদ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রশ্ন তাহলে যে কোন ঘটনা ঘটলে এর দায়টা নিবে কে?
এদিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বারবার আশ্বাস দিয়েও কমিটি পায়নি সিলেট। নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন এবার অন্তত তারা আশায় বুক বেধেছেন। আর যেন কমিটি গঠনের তৎপরতা কোন কারনে পিছিয়ে না যায় সেজন্য কের্দ্রিয় সংগঠনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। তবুও আমরা সংগঠনের ব্যানার ও পতাকা সমুন্নত রেখেছি। কষ্ট হয় দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার ফলে অনেক মেধাবী ত্যাগী কর্মীরা ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছে, কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস নতুন কমিটির মাধ্যমে আগামী ইউপি নির্বাচনে ছাত্রলীগ সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শেখ হাসিনার কর্মী। আমার কেন্দ্রিয় সংগঠন এবং আমার নেত্রী আমাকে যেকোন দায়িত্ব দিলে আমি শতভাগ পালন করার চেষ্টা করবো।
সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য কিশোর জাহান সৌরভ বলেন, ২০১৫ সাল হতে সিলেটে কমিটি নেই। এর মধ্যে কেন্দ্রিয় কমিটি দুই বার পরিবর্তন হয়েছে। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার ফলে বিভিন্ন সময় কোন ঘটনা ঘটলে কারো কোন জবাবদিহি থাকেনা। আমার বিশ্বাস কেন্দ্রিয় সংগঠন এবার সিলেটের কমিটি নিয়ে নতুন চিন্তা করবেন। তিনি বলেন, স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন ত্যাগী অভিজ্ঞ এবং নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে একটি কমিটি উপহার দিবেন।
মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহমুদুল হাসান সানী বলেন, কয়েক বছর থেকে সিলেট জেলা ও মহানগর কমিটি নেই। কমিটি না থাকার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই যেকোন সংগঠন দূর্বল হয়ে পড়ে। তবে সিলেট ছাত্রলীগ এখন অনেক শক্তিশালী।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান বলেন, কমিটি না থাকার ফলে সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। যত দ্রুত সম্ভব সংগঠন কমিটি দিলেই সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল হবে। তিনি বলেন, সংগঠন যেখানে যে দায়িত্ব দিবে আমরা সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবো।
সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আলী হোসেন আলম বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কমিটির অপেক্ষায় রয়েছেন। আমাদের সংগঠন যে সিদ্ধান্ত নিবে যেখানে যে দায়িত্ব দিবে আমরা তা পালন করবো। তবে কোন অনুপ্রবশেকারীদের দিয়ে নয়, ত্যাগী পরিচ্ছন্ন সাধারন ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্বকারী গ্রহণযোগ্য ছাত্রনেতাদের দিয়ে কমিটি দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। আলী হোসেন বলেন, শৈশবকাল থেকেই জাতির পিতার আদর্শে অরুপ্রাণিত হয়ে স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের পাতাকাতলে যে যাত্রা শুরু হয়েছির আজও তা অব্যাহত আছে। সংগঠন যেকোন দায়িত্ব দিলে জীবনের বিনিময়ে হলেও তা পালন করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে ছাত্রলীগকে নিয়ে কাজ করবো।
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের প্রাণ। সিলেটের কমিটি নিয়ে কেন্দ্রে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি দেওয়া হবে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd