কোয়ারী নিয়ে একদিকে শ্রমিকদের আন্দোলন, অন্যদিকে অবৈধ পাথর উত্তোলন!

প্রকাশিত: ৪:০৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২০

কোয়ারী নিয়ে একদিকে শ্রমিকদের আন্দোলন, অন্যদিকে অবৈধ পাথর উত্তোলন!

Manual8 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ, গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছনাকান্দি ও কানাইঘাটের লোভাছড়া পাথর কোয়ারী বছর খানেক ধরে বন্ধ। যার ফলে লাখ লাখ পাথর শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে পাথর কোয়ারি চালু করে বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলন করা হয়েছে। ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া কোয়ারীর শ্রমিক-ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছেন। এছাড়া কোয়ারী স্ব”লের দাবিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। কিন্তু এখনো কোয়ারী খোলার কোন আশ^াস পায়নি তারা। কোয়ারীগুলো বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন লাখ লাখ শ্রমিক পরিবার। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে।

Manual7 Ad Code

এদিকে, একটি পাথর খেকো প্রভাবশালী চক্র কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ কোয়ারী থেকে অবৈধ ভাবে বালু পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছেন। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত উপজেলার ধলাই নদীর উত্তর বালুমহাল এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানকালে অবৈধভাবে বালুর সঙ্গে চিপ পাথর উত্তোলনের চেষ্টাকালে টাস্কফোর্স ৯ জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আটককৃতদের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা দিয়ে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে মোট ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

Manual3 Ad Code

এর আগে গত রোববার উপজেলার ধলাই নদীর লীলাই বাজার, দয়ার বাজার ও নদীর তীরবর্তী এলাকা সমূহে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযান নেতৃত্ব দেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরশাদ মিয়া। পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ এ অভিযানে ২১ টি শ্যালো মেশিন, ৩ হাজার ফুট পাইপ ও বালু-পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ হাতুড়ি দিয়ে ধ্বংস করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ধ্বংসকৃত মালামালের মূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরশাদ মিয়া জানান, অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যেই আইন বিরোধী কাজ করবে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এই অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের খুঁিটর জোর কোথায়? পাথর খেঁেকাদের নেতৃত্বদাতা আলোচিত চাঁদাবাজ তাজুল ইসলাম (পরিবেশ মোল্লা) পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন এই চক্রের সাথে কে জড়িত রয়েছে এমন প্রশ্ন উজেলার সচেতন মহলের।

Manual7 Ad Code

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জের একটি প্রভাবশালী পাথর খেকো চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করে আসছে। একেক জন এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। আগে ছিলেন পাথর শ্রমিক এখন হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। সিলেট শহরে রয়েছে তাদের একাধিক বাড়ি-গাড়ি। গত করোনা লকডাউনের সময় এদের অবৈধ পাথর উত্তোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সজল কানু। এমন তথ্য সিলেটের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। পরে সাথে সাথে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন ওসি সজল কানুকে বদলি করেছেন। এরপর অভিযোগ উঠে ভারপাপ্ত ওসি রজিউল্লাহ এর বিরুদ্ধে। তাকেও কোম্পানীগঞ্জ থেকে বদলি করা হয়। বর্তমান থানার দায়িত্বে রয়েছেন ওসি কে এম নজরুল ইসলাম। তিনি যোগদানের পর থেকে নিরব ছিলেন অবৈধ পাথর খেঁকো চক্র। কিন্তু সম্প্রতি এই চক্রটি ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শুরু করেছে তাদের ধ্বংস লীলা। এই চক্রের বিরুদ্ধে গত রোববার অভিযান হয়েছে ঠিকই তবে অভিযানের পর ঘন্টা খানেক পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয়েছে তাদের ধ্বংস লীলা। রোববার অভিযান হয় ঠিকই। পরের দিন সোমবার যখন শুরু হয় অবৈধ পাথর উত্তোলন ফের অভিযান করেন প্রশাসন।

অবৈধ পাথর উত্তোলনের এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি কে এম নজরুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2020
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..