সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক :: ৭ দিনের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের উপর চালানো নির্যাতনের প্রাথমিক তথ্য দিয়েছেন বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। তার দেওয়া প্রাথমিক তথ্যের একটি লিখত প্রতিদিবেদন জমা দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত কর্মকর্তা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১ টার দিকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম আদালতে তিনি এ প্রতিবেদন জমা দেন। এসময় আকবরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কিংবা নতুন করে রিমান্ড আবেদন না করায় আদলত আকবরকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
বিষয়টি জানান চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট সৈয়দ শামিম।
তিনি বলেন, তবে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আকবর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে রায়হানের নির্যাতনের বিভিন্ন আলামত নষ্ট করাসহ নির্যাতনের প্রাথমিক তথ্য দিয়েছেন। এসব বিষয় লিখিত করে একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তবে তদন্ত কর্মকর্তা চাইলে আবারও তার রিমান্ড চাইতে পারবেন। এর আগে দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আকবরকে আদালতে হাজির করে পিবিআই।
এদিকে রায়হানের চাচা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মো. মাইনুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বীকারোক্তি কিংবা নতুন করে রিমান্ড চায়নি পিবিআই। এজন্য আদালত আকবরকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন না করলে আদালতের কি করার। আমরা আশা করেছিলাম তদন্ত কর্মকর্তা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি চাইবেন আর স্বীকারোক্তি না দিলে আবার রিমান্ড চাইবেন। কিন্তু তারা তা করেনি। বরং আকবরের চেহারা দেখে মনে হয়েছ তাকে রিমান্ডে সঠিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ না করে আরামেই রাখা হয়েছে।
রায়হানের চাচা মইনুল ইসলাম বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, আমরা পিবিআই’র উপর আস্তা হারিয়েছি। পুলিশের তদন্ত পুলিশ সঠক ভাবে করবে না। তাই আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।
এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান বলেন, ৭ দিনের রিমান্ডে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি। এখন আমরা এগুলো যাচাই বাচাই করব। তার পরে প্রয়োজন হলে আবার রিমান্ড চাওয়া হবে। এর পর সন্তুষ্ট হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি চাওয়া হবে।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর দুপুর দেড়টায় সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে তাকে হাজির করে পিবিআই সিলেটের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসাইন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তার ৭ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরও আগে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে আকবরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে রায়হান হত্যা মামলায় মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদসরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।
ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। মামলাটি পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd