সিলেটে ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ কাণ্ড, সার্জেন্ট চয়ন নাইডু সাময়িক বহিষ্কার

প্রকাশিত: ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২০

সিলেটে ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ কাণ্ড, সার্জেন্ট চয়ন নাইডু সাময়িক বহিষ্কার

Manual1 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় মোটরসাইকেলে ‘বোমাসদৃশ্য বস্তু’ শনাক্তের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে সিলেট মহানগর পুলিশের (ট্রাফিক) সার্জেন্ট চয়ন নাইডু সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।

শনিবার (০৮ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ। গত ৬ আগস্ট ঘটনার দিনই চয়ন নাইডুকে বহিষ্কার করা হয় বলে জানান তিনি।

ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘যার মোটরসাইকেলে ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ পাওয়া গেছে তিনি তার দায়িত্বরত এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এছাড়া তার মোটরসাইকেলে এভাবে একটি বোমাসদৃশ বস্তু রেখে দেওয়া হলেও বিষয়টি তিনি বুঝতে পারলেন না, এসব কারণেই তাকে বহিষ্কার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘মোটরসাইকেলে ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ রাখার ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তার কোনো দায়িত্ব অবহেলা তদন্তে উঠে আসলে তিনি বিভাগীয় শাস্তি ভোগ করবেন।’

Manual3 Ad Code

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাতে নগরের সিলেটে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর মোটরসাইকেলে বাঁধা বোমা-সদৃশ বস্তু ঘিরে আতঙ্কের ২২ ঘণ্টা পর জানা যায় বস্তুটি বোমা নয়। বস্তুটি হলো গ্রাইন্ডিং মেশিন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও ধ্বংসকরণ দল এটি নিশ্চিত করে।

Manual7 Ad Code

এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডু তার মোটরসাইকেল চৌহাট্টা পয়েন্টে রেখে চা খেতে যান। তবে তিনি ফিরে গিয়ে মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ একটি বস্তু দেখতে পান। বিষয়টি থানায় অবহিত করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত এসে ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। সেই সাথে নগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতংক। একই সাথে বন্ধ রাখা হয় চৌহাট্ট-জিন্দাবাজার সড়কও।

এরপর বোমাসদৃশ ওই বস্তুটি উদ্ধারে দফায় দফায় মিটিংয়ে বসে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। অবশেষে তারা ব্যর্থ হলে ঢাকা র‍্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ডাকা হয়। পরে বুধবার রাত ৯ টার দিকে র‍্যাব-৯ সিলেটের একটি বোমা ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেই সাথে পুলিশের কর্মকর্তা বিষয়টি ঢাকায় জানান। এরপর ঢাকা থেকে একটি বোম ডিসপোজাল টিম বৃহস্পতিবার সিলেটে আসার কথা জানানো হয়। তবে ঢাকা থেকে কোনো টিম আসেনি। পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে আসে। বেলা আড়াইটার দিকে দলটি মোটরসাইকেল থেকে ‘বোমাসদৃশ বস্তুটি’ উদ্ধার অভিযান শুরু করে। অভিযান শেষে বিকেল চারটার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করে জানানো হয় এটি বোমা নয়, এটি একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন।

Manual4 Ad Code

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাহাত বলেন, ‘বস্তুটি চৌহাট্টায় পাওয়ার পরে পুলিশ বাহিনী আমাদের সাথে যোগাযোগ করে। এরপর পুলিশ বাহিনীর অনুরোধে আমরা ঘটনাস্থলে এসে বস্তুটি দেখতে যাই। গিয়ে আমরা দেখি একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন। এরপর আমরা অনেক সতর্কতার সাথে বিষয়টি খুলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হই। ভুলবশত কিংবা কেউ আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলে যন্ত্রটি রেখে যেতে পারেন।’

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার শনিবার বলেন, আমাদের তদন্ত চলছে। আশা করছি দ্রুতই তদন্ত শেষ হবে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে। এছাড়া সার্জেন্ট চয়ন নাইডু সাময়িক বহিস্কারের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..