গোয়াইনঘাটে সরকারী জলমহাল থেকে ১০লক্ষ টাকার মাছ লুট, পুলিশের অভিযানে জাল উদ্ধার

প্রকাশিত: ৮:০৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০

গোয়াইনঘাটে সরকারী জলমহাল থেকে ১০লক্ষ টাকার মাছ লুট, পুলিশের অভিযানে জাল উদ্ধার

আলী হোসেন, গোয়াইনঘাট :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলাস্থ সরকারী ইজরাকৃত জলমহাল থেকে। ইজারাদারদের উপর আক্রমণ এবং প্রকাশ্যে জোরপূর্বকভাবে জাল দিয়ে ১০লক্ষ টাকার মাছ লুটকরে নিয়েছে একটি মহল। এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ মৎস্য লুটে নিয়োযিত ২টি জাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নের পাটনি খালের ইজারাদার পাটনি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতিসহ সকল সদস্যবৃন্দ বিগত ৭জানুয়ারী দুপুরে তাদের ইজারাকৃত পাটনিখালে মাছ আহরণের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও জাল নিয়ে অবস্থান করেন। যাবতীয় প্রস্থুতি শেষে মাছ আহরণের জন্যে পাটনিখালের পানিতে জাল ছুড়লে কাঠাল কান্দি গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে আছরব আলী( ৩০), আব্দুল আলীর ছেলে, মনির উদ্দিন (২২), ইউনূস আলীর ছেলে আম্বর আলী (২২), মৃত মনেহর আলীর ছেলে ইন্তাজ আলী (৫০), মজম্মিল আলী ( ৫০), পিতা অজ্ঞাত, মজু মিয়ার ছেলে আঙ্গুর মিয়া (৪৫), হায়দর আলী (৩২), হাসন আলী (৩৫), আজর আলী, সৈয়দ আলীর ছেলে আরমান (৪৫), ও গোজারকান্দি গ্রামের মনাফ মিয়ার ছেলে রাজ্জাক( ৪০)সহ কয়েক শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইজারাদারের উপর অতর্কিত হামলা করে ইজারাদারসহ বেশ কয়েকজনকে গুরুত্বর আহত করে।

এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিব ও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল আহাদসহ অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

ঐ ঘটনায় ইজারা পক্ষ গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করলে আসামী পক্ষ জামিনে বের হয়ে পূনরায় ২১মার্চ-২০২০ শনিবার দিনের বেলায় ইজারাকৃত নদীতে জাল ফেলে জোরপূর্বক ভাবে আনুমানিক ১০লক্ষ টাকার মাছ আহরণ করে নিয়ে যায়। জোরপূর্বক মাছ আহরেণর বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ তাৎক্ষনিভাবে পাটনিখাল থেকে ৬০/৭০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি জাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

এব্যাপারে ইজারাদার বিলাল উদ্দিন জানান, সাবেক গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বার্হী অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার পাল সরকারী বিধি মোতাবেক বিগত ২৭মার্চ ১লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা মূল্যে পাটনিমৎস্য জীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ বেলাল উদ্দিন’র অনূকুলে পাটনিখাল জলমহালটি ইজারা প্রদান করেন। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় গোয়াইনঘাট থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বৈধ ভাবে পাটনিখালের ইজারা গ্রহন করেছি। এরপর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা পাটনিখাল জলমহালটি সমিতিকে দখল বুজিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা বৈধ উপায়ে ইজারা গ্রহন করেও কাঠাল কান্দির একটি বাহিনীর কারণে মাছ আহরণ করতে পারছিনা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জদ্বয়কে একাধিকবার আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তার পরেও আমাদের বৈধ ইজারাকৃত পাটনিখালে গোপনে এবং প্রকাশ্যে মাছ লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে ঐ মহলটি। এতে আমরা বাধা দিলে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আহাদ বলেন, পাটনিখালের ইজারাদারদের উপর মৎস্য লুটেরা একাধিকবার আক্রমণ করেছে। সেই সাথে রাত এবং দিনের বেলায় মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ২১মার্চ-২০২০ শনিবার মাছ লুটের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি জাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিব বলেন, সরকারের নিয়ম নিতি যথাযথ ভাবে পালনের মধ্যে দিয়ে পাটনিখালের ইজারা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু একটি পক্ষ বৈধ ইজারাদারকে মাছ আহরণে বাঁধা দিচ্ছে এমন ঘটনায় থানা পুলিশকে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাব উদ্দিন শিহাব প্রতিবেদকে জানান, সরকারী নিয়ম নিতি অবলম্বণ করে দীর্ঘ দিন থেকে উপজেলা প্রশাসন পাঠনিখাল জলমহালটি ইজারা দিয়ে আসছে। এরই দ্বারাবাহিকতায় এবছরও ইজরা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু একটি মহল বৈধ ইজারাদারদের একাধিবার বাধাঁ দিচ্ছে সেই সাথে প্রকাশ্যে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে এমন খবর আমি একাধিবার শুনেছি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..