সিনহা আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল, এর খেসারত দিতেই হবে: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২০

সিনহা আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল, এর খেসারত দিতেই হবে: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

Manual2 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আপনাদের (মৌলভীবাজার) এলাকায় জন্ম নিয়েছিল সাবেক প্রধান বিচারপতি কুলাঙ্গার এস কে সিনহা। সে আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল। এর খেসারত তাকে দিতেই হবে। দুর্নীতিবাজ এই বিচারপতির বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। তাকে পলাতকই থাকতে হবে।

Manual2 Ad Code

শনিবার দুপুরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৌলভীবাজার জেলার সদর, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা ভবন উদ্বোধন ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনাকারী। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার না করার জন্য জিয়াউর রহমান আইন করেছিল। জিয়াউর রহমান রাজাকারদের দিয়েই মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। মুক্তিযুদ্ধের ব্যতিক্রমী স্থানগুলো সংরক্ষিত করে রাখতে হবে। যাতে এই স্থানগুলো দেখে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারে।

Manual4 Ad Code

তিনি বলেন, সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধাদের কবর একই ডিজাইনের হবে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রত্যেক মুক্তিযুদ্ধাদের বক্তব্য রেকর্ড করা হবে। যাতে এখান থেকে পরবর্তী প্রজন্ম কিছু শিখতে পারে এবং গবেষকরা গবেষণা করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি সরকারি অফিসে মুক্তিযুদ্ধারা ঢোকার পর তাদের পরিচয়পত্র দেখানো মাত্রই তাদের জন্য একটি আসন সংরক্ষিত করে রাখা হবে। মুক্তিযুদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে সরকারি ফান্ড দেয়া হয়েছে। যে সব ডাক্তার মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় অবহেলা করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের নামে প্রতিটি এলাকায় একটি রাস্তা করারও আশ্বাস দেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মল্লিকা দের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহিদ, মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ আসনের সংরক্ষিত মহিলা এমপি সৈয়দা জহোরা আলাউদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার জামাল উদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়াও জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন স্থরের সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৬ সালের ৬ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির আদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা পুনঃশুনানির দাবি জানান। ওই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন।

পরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের বক্তব্যে স্তম্ভিত হয়ে ওই বছরের ৮ মার্চ আপিল বিভাগ তাদের তলব করেন। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে কেন কার্যক্রম শুরু করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন। এর পরে দুই মন্ত্রী তাদের বক্তব্যের জন্য আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ব্যাখ্যা জমা দেন।

Manual6 Ad Code

পরে ২০ মার্চ দুই মন্ত্রী আপিল বিভাগে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন আদালত এবং ২৭ মার্চ দুই মন্ত্রীকে ফের হাজিরের নির্দেশ দেন।

এর পর ২৭ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। পরে আদালত বলেন, ‘মন্তব্যের মাধ্যমে আদালত অবমাননা করেছেন তারা। তাদেরকে সাতদিনের মধ্যে জরিমানার টাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও কিডনি ফাউন্ডেশনকে দিতে বলা হয়। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করেন তারা।’

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..