সিলেট ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:১০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট জেলা পুলিশের আওতাধীন একটি থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন জনৈক মহিলা নাসরিন সালেহা আরিফের স্বামী। পুলিশ কর্মকর্তার সহধর্মিণী হিসেবে সন্নিকটে থেকে দেখেছেন পুলিশের যাবতীয় কাজকর্ম। পুলিশ বিভাগের সদস্যরা দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে তাদের অতি আপনজন মা,বাবা,ভাই, বোন,স্ত্রী এমনকি সন্তানদেরও রেখে যান দূরে বহুদূরে। কিছু কিছু; সময় মাঝ পথে আপজনকে ছেড়ে কর্তব্যের খাতিরে চলেযান । আপনজনের বিপদাপদ ও অসুখ বিসুখের সময়েও পুলিশ সদস্যরা দাড়াতে পারেননা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এমন একটি আবেগঘন স্ট্যটাস দিয়ে পুলিশ পরিবারগুলোর বাস্তবিক জীবনের দিনলিপির বর্ণনা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ক্রাইম সিলেটের পাঠকগণের সুবিধার জন্য নাসির সালেহা আরিফের ফেইসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো।
তিনি লিখেছেন, নওমীর (বড় মেয়ে) বয়স তখন দুই বছরের কাছাকাছি। আমরা সিলেট থাকতাম।এক রাতে খেলতে গিয়ে মেয়ের চোখের ঠিক উপরের অংশ কেটে যায়। ঝরঝর করে রক্ত বেরুতে থাকে। কিংকর্তব্যবিমুঢ় আমি তার বাবাকে কল করার কথাই ভুলে যাই। বরফ দিয়ে চেপে ধরতেই মেয়ের চিৎকার,বাবা বাবা করে কান্না শুরু করাতে আমার টনক নড়ে, তার বাবাকে কল দেই।শীতের রাত ছিলো। থানা থেকে বাসায় আসতে সময় লাগতো তখন প্রায় ২৫ মিনিট।
মেয়ের বাবা বাসায় এসে,মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ড্রেসিং করে,বাসায় ফিরছিলাম ডিউটির একটা মাইক্রো তে করে।মাঝপথেই কন্ট্রোল থেকে কল আসে।ভিআইপি যাচ্ছেন, গাড়ি নিয়ে অন্য রাস্তায় থাকতে হবে।মুহুর্তের মধ্যে আমাকে আর মেয়েকে রাস্তায় নামায়ে, গাড়ি নিয়ে চলে যায় মেয়ের বাবা।
কুয়াশার রাত,রাস্তায় রিকশা ও দেখা যাচ্ছিলো না।বেশ কিছুক্ষণ পর একটা রিকশা পাই,সেটা নিয়েই বাসায় আসি।
খুবি সাভাবিক ঘটনা, কারন বিয়ের প্রথম থেকেই শুনেছি " duty come first…. Committed for 24hrs" টাইপের কথা। শুধু শুনাই না,মেনে নেওয়া ও জীবন এর অংশ।
দুই বারের প্রেগন্যান্সির পুরো সময়ে নিজেই একা ডাক্তার দেখানো , টেস্ট করানো এবং বাকি কাজ গুলো করেছি। মেয়েদের টিকা দেওয়ার মুহুর্ত গুলা এখনো আমাকে ভয় পাইয়ে দেয়,,,,,,,,। পুলিশ পরিবারের almost সবার ঘরের চিত্র একি রকম।
মাঝ রাতে আমাদের রান্নাঘর এ আলো থাকে,কারন ডিনার টাইম বলে কোনো কথা নাই। বেড়াতে যাওয়া,বিয়ে খাওয়া,পারিবারিক প্রোগ্রামে এক সাথে থাকতে পারা,এমনকি ঈদেও বাচ্চারা বাবাকে কাছে পাওয়াটা আসলেই বোনাস পাওয়ার মতো।
এমন হাজারো ঘটনা নিয়েই আমাদের জীবন। লিখতে গিয়ে এক সময় নিজেই বিরক্ত হয়ে যাবো। পুলিশের জীবনযাত্রা নিয়ে মানুষের মন্তব্য দেখে এখন আসলেই হাসি পায়।যেই পথে আপনি হাঁটেন নি,সেই পথ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা না থাকাটা সাভাবিক। উদ্দেশ্যমুলক কিছুই না,,জীবন থেকে নেওয়া বলা। ·
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd