অবশেষে সুলতানা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন

প্রকাশিত: ৬:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২০

অবশেষে সুলতানা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন

Manual2 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে আলোচিত গৃহবধূ মেহজাবিন সুলতানা ইতি হত্যার মূল রহস্য অবশেষে উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। রাগের বশে ইতিকে গলা টিপে হত্যা করে স্বামী একরামুল হক রাজু নিজেই।

ওই ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে একরামুল হক রাজু।

সিআইডি (কুমিল্লা-নোয়াখালী) বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. আবদুল মান্নান মাত্র ১ মাসেই আলোচিত এ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছেন।

Manual7 Ad Code

জানা গেছে, শাহরাস্তি পৌর শহরের ঘুঘুশাল গ্রামের আমির হোসেনের কন্যা মেহজাবিন সুলতানা ইতির বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের মালরা গ্রামের আবদুল কুদ্দুছের ছেলে একরামুল হক রাজুর (২৭) সঙ্গে। বিয়ের মাত্র ২ মাস ১৮ দিন পর ২০১৮ সালের ২৩ জুন তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

Manual1 Ad Code

ওই ঘটনায় পরদিন একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়। পরবর্তীতে ২৮ জুন নিহত ইতির ভাই নূরে আলম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে শাহরাস্তি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর পুলিশের তদন্ত রহস্যজনক মনে করে বাদী আপত্তি জানালে ওই বছরের ৫ জুলাই চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) মামলাটি বদলি করা হয়। গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক এম এ রউফ খান মামলাটি তদন্ত করে হত্যার বিষয়টি মিথ্যা বলে ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়েও আদালতে অনাস্থা জানিয়ে গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার বাদী আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পুনরায় তদন্তের জন্য ২০১৯ সালের ২৭ মে সিআইডি চাঁদপুরকে নির্দেশ প্রদান করেন।

ওই আদেশের প্রেক্ষিতে সিআইডির এসআই মো. আবদুল মান্নান সরকার পুনরায় মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট উপজেলার মালরা গ্রাম থেকে মামলার প্রধান আসামি ইতির স্বামী একরামুল হক রাজুকে শাহরাস্তি থানার সহযোগিতায় সিআইডি আটক করে আদালতে সোপর্দ করে।

ওই তদন্তকাকালে পুনরায় সিআইডির এসআই আবদুল মান্নান সরকার থেকে মামলাটি বদলি করে ৩১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে একই দফতরের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) সাইফুল ইসলামকে দেয়া হয়।

Manual8 Ad Code

একের পর এক মামলাটি বিভিন্ন দফতরে বদলি হতে থাকায় বাদী পরিবার নিরাশ হয়ে পড়েন। ইতির পরিবার ন্যায় বিচারের আশায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর একটি আবেদন করেন।

২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্যে চাঁদপুর সিআইডি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিআইডিতে বদলি করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (সিআইডি) স্বাক্ষরিত পত্রে মামলাটি সিআইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. আবদুল মান্নানকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।

ওই নির্দেশের আলোকে বিশেষ পুলিশ সুপার (কুমিল্লা-নোয়াখালী) মো. কুতুব উদ্দিনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার দায়িত্ব বুঝে নিয়ে ২৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে জেলখানায় আটক ইতির স্বামী একরামুল হক রাজুর ৭ দিনের পুলিশি রিমান্ড ও কবর হতে লাশ উত্তোলনপূর্বক পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন।

Manual2 Ad Code

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড ও লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. আবদুল মান্নান জেলখানায় আসামি একরামুল হক রাজুকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেখানে সে ইতি হত্যার সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে।

পরবর্তীতে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিউল আজমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একরামুল হক রাজু বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমি বাড়িতে এসে ইতির সঙ্গে কথা বলি। কথা বলার এক পর্যায়ে আমার সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। আমি রাগের বশবর্তী হয়ে তার গলায় চাপ দিলে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দিশেহারা হয়ে কোনো উপায় না দেখে দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে তাদের (ইতির) বাড়িতে চলে যাই। সেখানে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের বলি ইতি অসুস্থ, আপনারা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..