১২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত করবে পিবিআই

প্রকাশিত: ৮:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৯

১২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত করবে পিবিআই

Manual2 Ad Code

মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের অভিযোগ এনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকার কর্তৃক যমুনা টেলিভিশন ও কালেরকণ্ঠ পত্রিকাসহ ১২ সাংবাদিকের নামে করা মানহানির মামলার তদন্ত শুরু করবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), রংপুর। গত ১৫ অক্টোবর রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালী আমলী আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেছিলেন ওই কর্মকর্তা। তবে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা বলেছেন, নিজের অনিয়ম আড়াল করার জন্যই তিনি মিথ্যা মানহানির মামলা দিয়েছেন।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার তাঁর বিরুদ্ধে যমুনা টেলিভিশন ও কালেরকণ্ঠ পত্রিকায় মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মানহানিকর সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের অভিযোগ তুলে গত ১৫ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট ১২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দুটি মামলাটি করেন ( নং ১৫২ ও ১৫৩)। মামলায় যমুনা টেলিভিশনের সিএনই ফাহিম আহম্মেদ, মফস্বল ডেস্ক ইনচার্জ আহসানুল কবির আসিফ, স্থানীয় প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ, সহযোগী মাহাবুর রহমান, চাঁদনী বাজার পত্রিকার প্রতিনিধি আবু জায়েদ কারী, জনসংকেত পত্রিকার প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলাম (চাঁদ), দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বার্তা সম্পাদক খায়রুল বাশার শামীম, মফস্বল বার্তা সম্পাদক ছাদেক আহম্মেদ সজল, স্থানীয় প্রতিনিধি শেখ মামুন-উর-রশিদ, দৈনিক পরিবেশের প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম অবুঝ ও ভোরের দর্পন পত্রিকার প্রতিনিধি সামছুল হক।

Manual3 Ad Code

আদালতে করা মামলায় পিআইও নুরুন্নবী সরকার অভিযোগ করে বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর যমুনা টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ৫২০ বান্ডিল ঢেউটিনের মধ্যে ২০০ বান্ডিল টিন আত্মসাতের মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়। মূলত ওই অর্থবছরে মোট ১৫০ বান্ডিল ঢেউটিন বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা স্থানীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য কর্তৃক দাখিলকৃত তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হয়। এছাড়া আমাকে (পিআইওকে) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার দায়েরকৃত একটি মামলার বিপরীতে আরেকটি কাউন্টার মামলার তথ্য মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে প্রতিবেদনে। যে মামলাটি তদন্ত করে মিথ্যা মামলা হিসেবে সুন্দররগঞ্জ থানা পুলিশ চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন।

Manual5 Ad Code

মামলায় পিআইও আরও বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের তালিকা জেলা পরিষদে দাখিল পূর্বক জেলা পরিষদের ১ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন উপজেলা পরিষদের প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। ওই তিনটি মামলায় তদন্ত করে দুদক আমার (পিআইও নুরুন্নবী সরকার) সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু বিষয়টি পাশ কাটিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মামলা চলমান থাকার মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়। যা আমার সামাজিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। এছাড়াও গত জুন মাসে ব্রিজ কালভার্ট, হেরিং বন্ড রাস্তা, দুর্যোগসহনীয় ঘর নির্মাসহ বিভিন্ন কাজের ১৪ টি বিলের বিপরীতে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৪৩ হাজার ৩৬৫ টাকার বিল প্রদান করা হয়। কিন্তু প্রচারিত প্রতিবেদনে ওই বিলগুলির বিপরীতে কোন কাজ না করেই ৬ কোটি টাকার বিল তুলে আত্মসাৎ করার মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয় আমার বিরুদ্ধে।

Manual8 Ad Code

অন্যদিকে একই আদালতে আরেকটি মামলায় পিআইও নুরুন্নবী সরকার অভিযোগ করে বলেন, একই তারিখে দৈনিক কালেরকণ্ঠে ‘সম্পদের পাহাড়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে যমুনা টেলিভিশনে প্রচারিত উল্লেখিত মিথ্যা বানোয়াট তথ্যের সঙ্গে আমার নামে বিলাসবহুল তিনটি বাড়ি, গাড়ি ও কয়েক কোটি টাকার জমি কেনার মিথ্যা, ভুয়া, মানহানিকর বানোয়াট মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে আমার বাড়ি, গাড়ি কিছুই নেই। ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকি।

Manual1 Ad Code

আদালত সূত্র জানায়, মামলা দুটি আমলে নিয়ে রংপুর মেটোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালী আমলী আদালতের বিচারক মো. দেলোয়ার হোসেন পিবিআই রংপুরকে তদন্ত করে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৬ ডিসেম্বর।

এ ব্যপারে রংপুর পিবিআইয়ের এডিশনাল এসপি আখতার হোসেন জানান, এই মামলাটি এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। মামলাটি পেলে আমরা তদন্ত শুরু করবো। এ ব্যাপারে যমুনা টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ জানান, তার বিরুদ্ধে পূর্ব থেকেই অনিয়মের বিরুদ্ধেই প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে। এই প্রেতিবেদনগুলো আমার মনগড়া তৈরি নয়।

এ ব্যাপারে কালেরকণ্ঠের সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি শেখ মামুন-উর-রশিদ জানান, আমি পিআইওর বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি তা সঠিক। বিভিন্ন অনিয়মের তথ্যের ভিত্তিতেই খবর প্রকাশ করা হয়।

এ ব্যাপারে পিআইও নুরন্নবী সরকার বলেন, আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে। এতে আমি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই কারণে পুরো বিষয়টির প্রমাণ দিয়ে আদালতে মানহানির মামলা করেছি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..