প্রথমবারের মতো সচিত্র রায়, ৪ পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ৩:১৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০১৯

প্রথমবারের মতো সচিত্র রায়, ৪ পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

Manual1 Ad Code

আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়াও রায়ে চারজন পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় দেন। দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এ মামলার রায়ে সচিত্র ঘটনাপ্রবাহ ব্যবহার করা হয়।

রায়ে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় ১৬ আসামির অংশগ্রহণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হলো।

মামলার ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।

Manual2 Ad Code

মামলায় পুলিশের অবহেলার অভিযোগে ১৩ মে ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করা হয়। থানায় হেনস্তা হওয়ার নুসরাতের ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার পর ৮ মে সোনাগাজী থানা পুলিশ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেয়াজ্জেমসহ পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শককে (এসআই) বহিষ্কার করা হয় ৮ মে। এরপর তার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। ১৬ জুন তাকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

Manual3 Ad Code

তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। এগুলো হলো- ১. মামলার কালক্ষেপণ, ২. এজহার নিয়ে কূটচাল, ৩. গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের নাম বাদ, ৪. নুসরাতকে থানায় জবানবন্দির নামে ওসির হেনস্তা, ৫. আইনি বহির্ভূত জিজ্ঞাসাবাদ, ৬. প্রথমে অজ্ঞাত মামলা, পরে ৮ জনের নামোল্লেখ।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

Manual6 Ad Code

নুসরাত হত্যা মামলায় পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ২১ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। পরে ২৯ মে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।

Manual6 Ad Code

৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..