গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের পিডির লুটপাট ও নারী কেলেঙ্কারি!

প্রকাশিত: ৩:২২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০১৯

গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের পিডির লুটপাট ও নারী কেলেঙ্কারি!

Manual8 Ad Code

ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের পরিচালক মাহাবুব-উল-আলমের নারী কেলেঙ্কারি ও ঘুষ দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট। তিনি উর্ধতন কর্মকর্তাদের পাত্তা না দিয়ে লুটপাট করা অর্থে গড়ে তুলেছেন বিশাল সম্পদের সাম্রাজ্য।

অসহায়, গৃহহীন মানুষের জন্য নেয়া সরকারের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে কাজ না করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত আছেন জেলা-বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট।

৮ম বিসিএস ক্যাডারের প্রশাসনের যুগ্নসচিব মাহাবুব-উল-আলম। ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর গুচ্ছগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) পদে নিয়োগ পান। তার বাড়ি রংপুর বিভাগের লালমনিরহাটের পাটগ্রামে। দায়িত্বের পর থেকে এখনও পরিচালক পদে বহাল। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ, জালিয়াতি ও লুটপাট করে আসছেন। সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই লাগামহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

গেল বছরের ডিসেম্বরে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিক অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদক তাকে তলব করে। ২২ ডিসেম্বর স্ব-শরীরে দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেয়া হলেও নির্ধারিত দিনে দুদুক কার্যালয়ে হাজির হয়ে জবানবন্দী দেয়নি।

এ কারনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান দুদক কর্মকর্তারা। কিন্তু পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা তা আজও রহস্যজনক।

গুচ্ছগ্রাম-২ পর্যায় (সিভিআরপি) প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্প। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য অসহায় ও গৃহহীনদের বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু প্রকল্পের মাহাবুব-উল-আলম কৌশলে জালিয়াতিতে তিনি বেসামাল হয়ে পড়েছেন। প্রকল্প মনিটরিং অফিসার আশরাফ উল হক, সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন, গাড়ি চালক মৃদুল কান্তি সেন ও বিভাগীয় কর্মকর্তারা প্রধান সহযোগি।

এদের দিয়ে প্রকল্পের চাল বরাদ্দ ও মাটি ভরাটের কাজে দুর্নীতি করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নধীন এলাকার ইউপি সদস্য, ইউএনও, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাটি ভরাটে প্রতিটন চাল থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা কমিশন আদায় করা হয়।

এছাড়াও প্রতিটি ঘর বরাদ্দ ও নির্মাণের আগে পরে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে সংশ্লিষ্ট ইউএনও’র মাধ্যমে চলে যায় পিডির পকেটে।

Manual8 Ad Code

বরাদ্দের অধিকাংশ ঘর নির্মাণ ও মাটির কাজ পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে করা হয়। প্রকল্পের কাজ ঠিকাদারদের দেয়ার আগেই নির্দিষ্ট পরিমাণের ২ থেকে ৩ লাখ টাকার কমিশন বানিজ্য করেন পিডি। তার কর্মকান্ডে সরকারের জনকল্যাণমুখি প্রকল্পটি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পে ৫০ হাজার পরিবারকে পূর্ণবাসনে বাজেট ধরা হয় এক হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের রংপুর বিভাগের আট জেলায় গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন দেখানো হয়েছে। কিন্তু ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম জেলাসহ কয়েক জেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নে ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। এছাড়াও অনিয়ম-দুর্নীতিতে পিডির একটি নিজস্ব সিন্ডিকেট রয়েছে। নাম পরিচয় প্রকাশ না করা শর্তে পিডি মাহাবুব-উল-আলমের কাছের কয়েকজন জানান, তার অঢেল সম্পদের পাহাড় রয়েছে।

গত চার বছরে ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যম নামেবেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

Manual5 Ad Code

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আত্মীয় ডা. নাজমুল হাসানসহ একাধিক আত্মীয়-স্বজনের নামে ব্যাংক-ব্যালেন্সসহ রক্ষিত আছে নগদ অর্থ ও স্বর্ণলংকার। নিজ এলাকা লালমনিরহাট, পাটগ্রাম ছাড়াও রংপুরের সার্কিট হাউজ রোডে একটি ভবনে সাতটি ফ্লাট রয়েছে তার।

Manual7 Ad Code

নিলফামারীতে ২ কোটি টাকার জমি, পাবনায় ছোট ভাইয়ের নামে ২ কোটি টাকার একটি মাছের প্রকল্প। ঢাকার মিরপুরের বিজয় রাকিন সিটিতে কোটি টাকার ফ্লাট, উত্তরা ৭ নং সেক্টরের ৩ নং সড়কে আছে একটি বাড়ি।

তাছাড়াও বি আই কোম্পানীতে আছে দু’কোটি টাকার মুল্যের একটি ফ্ল্যাট। পাশাপাশি রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ এবং একটি প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে কয়েক কোটি টাকার শেয়ার। রাজনীতি এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে একাধিক জমি, বাসাবাড়ি-ফ্লাটসহ অবৈধ সম্পদ।

তার বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেষ্কারীর অভিযোগ আছে। এছাড়াও একাধিক বিবাহিত স্ত্রী রয়েছে বলে সূত্রটি জানায়। খোদ রংপুর শহরেই মাহাবুব-উল-আলমের স্ত্রী দাবি করা চারজনের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্ত্রী দাবি করা এই নারীদের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুর্হুতের বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি আমাদের হাতে রয়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে পিডি মাহাবুব-উল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান। পরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। পরবর্তীতে তাকে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলে তারও কোন জবাব দেননি। এরপর চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি’।

Manual7 Ad Code

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার জাকির হোসেন রোডের একটি ফ্ল্যাটে তিনি মধুকুঞ্জ বানিয়েছেন। এখানে তিনি মনি আক্তার ও খাদিজা আক্তার মিলু নামে দুই নারীর সাথে রঙ্গলীলায় মত্ত থাকেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..