সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস : পাসপোর্ট পেতে সীমাহীন ভোগান্তি

প্রকাশিত: ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯

সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস : পাসপোর্ট পেতে সীমাহীন ভোগান্তি

Manual6 Ad Code

নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট হাতে পান না সুনামগঞ্জ জেলার আবেদনকারীরা। এ যেন অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ জন্য পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

Manual1 Ad Code

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, অতিরিক্ত টাকা খরচ করার পরও আবেদনকারীদের কেউই পাসপোর্ট অফিস প্রদত্ত স্লিপের তারিখে পাসপোর্ট বুঝে পান না। ফলে আর্থিক ক্ষতিসহ বিদেশ গমনে নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে আবেদনকারীদের। এছাড়া কোনো এজেন্ট ছাড়া নিজে পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে গেলেও পদে পদে হয়রানির মুখে পড়তে হয় আবেদনকারীদের। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে পাসপোর্টের আবেদনের খরচ কম হলেও পাসপোর্ট অফিসের নানা জটিলতায় ভোগান্তির শিকার হতে হয় আবেদনকারীদের।

Manual6 Ad Code

সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানাযায়, সাধারণ পাসপোর্ট (ভ্যাটসহ) ৩ হাজার ৪৫০ টাকা ও জরুরি পাসপোর্ট (ভ্যাটসহ) ৬ হাজার ৯০০ টাকা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়। অনুকূল পুলিশ প্রতিবেদন ও ডাকযোগে প্রাপ্তি সাপেক্ষে সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ২১ দিন ও জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১১ দিন সময় লাগে। এছাড়া বাড়তি কোনো টাকা গ্রহণ করার নিয়মও নেই। কিন্তু কখনো আবেদনকারীরা নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন এমন তথ্য জানাযায়নি।

জানাযায়, সাধারণ পাসপোর্ট পেতে দুই থেকে আড়াই মাস ও জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১ মাসেরও অধিক সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে আবেদনকারীদের। তবে আবেদনকারীদের অনেকে জানান, অতিরিক্ত টাকা খরচ করে দালালের সাহায্যে সরাসরি ঢাকা পাসপোর্ট অফিস থেকে দ্রুত সময়ে পাসপোর্ট নিয়ে আসা যায়।

Manual7 Ad Code

অভিযোগ রয়েছে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের সাথে পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্টদের অসহযোগিতা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের। নিজে নিজে ফরম পূরণ করে জমা দিতে আসা আবেদনকারীরা বিড়ম্বনায় পড়েন বেশি।

অপরদিকে, আবেদনপত্র জমা ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়া শেষ হলেও অনেকদিন পাসপোর্ট অফিসেই আবেদন পড়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্যে দেরিতে আবেদন পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ রিপোর্ট আসলেও ঢাকায় পাঠাতে দেরি করেন পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্টরা। ঢাকায় পাসপোর্ট প্রিন্টের জন্যে পাঠালেও আসার যেন নাম নেই। ‘প্রিন্ট জটিলতা’র অজুহাত দেখিয়ে পাসপোর্ট প্রদানে বিলম্ব করা হয়। পাসপোর্ট রিসিভ কাউন্টারে যেতে-আসতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন বিদেশযাত্রীরা। দেরিতে পাসপোর্ট বুঝে পেয়ে অনেকেই নানাভাবে ক্ষতির শিকার হন।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম। বিদেশ গমনের জন্যে গত ২১ জুলাই পাসপোর্ট আবেদন ফরম জমা দিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদান করেছেন। পাসপোর্ট অফিস প্রদত্ত তার স্মারক নাম্বার ১৪৭৩১৪। ১১ আগস্ট পাসপোর্ট বুঝে পাওয়ার কথা থাকলেও ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার পর্যন্ত ফখরুল পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে জানতে পারেন তার পাসপোর্ট এখনো প্রিন্ট শাখায় আছে। পাসপোর্ট বুঝে পেতে আরো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। ২৩ দিনে পাসপোর্ট বুঝে পাওয়ার কথা থাকলেও দুই মাস সময়েও পাসপোর্ট না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি জরুরি প্রয়োজনে পাসপোর্টের আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু আজ এতো দিনেও পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছি না। ২০ আগস্ট পাসপোর্ট অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখি আমার আবেদনের পুলিশ রিপোর্টই দেয়া হয়নি। থানার সাথে যোগাযোগ করলে তারা ২৫ আগস্ট পুলিশ রিপোর্ট পাঠান। ২৯ আগস্ট পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখি আমার আবেদন এখনও ঢাকায় পাঠানো হয়নি। আঞ্চলিক অফিসারকে অনুরোধ করে ঢাকায় পাঠালেও এখনও পর্যন্ত পাসপোর্ট হাতে পাইনি। আর কোনদিন পাবো তা জানিনা। ফলে আমি ভিসা প্রসেসিং বিলম্বতায় পড়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

দিরাই উপজেলার মোহাম্মদ জিতু মিয়া। বিদেশ গমনের জন্যে গত ২৮ আগস্ট পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করেছিলেন। তার স্মারক নাম্বার ১৪৮২৫০। রোববার অফিস খোঁজ নিয়ে জানেন তার পাসপোর্টও প্রিন্ট শাখায় আছে। ফখরুল ইসলাম, জিতু মিয়ার মতো অনেক আবেদনকারী অপেক্ষায় আছেন কবে পাসপোর্ট হাতে পাবেন।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক আইরিন পারভীন ডালিয়া বলেন, প্রিন্টিং সেকশনে জটিলতার কারণে সময় মতো পাসপোর্ট প্রদান করতে পারছি না আমরা। এর জন্যে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। পাসপোর্ট অফিসের সেবার মান পূর্বের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..