সিলেট ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:০২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০১৯
কোম্পানীগঞ্জে বালুর কারবারীদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে রোপওয়ের (রজ্জুপথ) সংরক্ষিত এলাকা বাংকারে। ঈদের ছুটিতে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও সংরক্ষিত এলাকার বালু-পাথর লুটের হিড়িক পড়েছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু-পাথর উত্তোলনের কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দেশের একমাত্র রজ্জুপথ।
গতকাল সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী রজ্জুপথের বাংকার এলাকায় অবাধে বালু ও পাথর তুলছে। বাংকারের পূর্বদিকে ৮-১০টি নৌকায় বালু-পাথর তোলা হচ্ছে। বাংকারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরএনবির সাথে নিয়াজো করেই লুটপাট চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, রজ্জুপথের লোডিং এলাকা থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে না পারলে শিগগিরই এলাকাটি ধসে পড়তে পারে। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন তারা।
রেলওয়ের রজ্জুপথ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রেললাইনে ব্যবহৃত পাথর পরিবহনে যানবাহনের বিকল্প হিসেবে ১৯৬৪ সালে ভোলাগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জের ছাতক পর্যন্ত রজ্জুপথটি স্থাপন করা হয়। ১১৯টি খুঁটির মাধ্যমে স্থাপিত স্থাপনাটির লোডিং স্টেশন (বাংকার) ভোলাগঞ্জে এবং ল্যান্ডিং (খালাস) স্টেশন ছাতকে। ২০০০ সাল থেকে এর জমি ও যন্ত্রপাতি দেখভালের দায়িত্বে ছিল আনসার বাহিনী। কিন্তু জমি দখল, পাথর উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ উঠলে ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রজ্জুপথের নিরাপত্তার দায়িত্ব ফিরিয়ে নেয় আরএনবি। একজন প্রধান পরিদর্শক ও দুজন উপপরিদর্শকের নেতৃত্বে ৪৮ সদস্যের দল রজ্জুপথের বাংকারে অবস্থান করে পাহারা দিচ্ছে। কিন্তু লুটপাট বন্ধ হয়নি। অবাধে পাথর উত্তোলনের ফলে বাংকার ও খুঁটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৪ সালে রজ্জুপথ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অবৈধ পাথর উত্তোলন এখনও চলছেই। এ ব্যাপারে রজ্জুপথের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিলেট চৌকির চিফ ইন্সপেক্টর (সিআই) নুর মোহাম্মদ জানান, তাদের নিজস্ব কোন নৌকা না থাকায় সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখেও কোন কাজ হচ্ছে না। তবে নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও রজ্জুপথ রক্ষায় তাদের লোকজন সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকেও তৎপর হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে নুর মোহাম্মদ বলেন, নদীতে যেভাবে ‘বোমা মেশিন বিরোধী’ অভিযান হয়েছে। সেভাবে যদি বাংকার এলাকায় অভিযান হত এলাকাটি রক্ষা করা সম্ভব হত।
উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আহমদ জানান, তিনি নিজে গতকাল বাংকার এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ১০/১২ টি নৌকায় বালি-পাথর তুলতে দেখেন। তিনি তাদের নিশেষ করে আসেন। তিনি বলেন, ঈদ যেতে না যেতেই বালুদস্যুরা বাংকার এলাকা ধ্বংসে মেতে ওঠেছে। বালু উত্তোলনের নামে তারা সংরক্ষিত এলাকার পাথর লুট করছে। এতে রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যও জড়িত রয়েছে। এখনই এটি রক্ষায় এগিয়ে না এলে স্থাপনাটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি সংরক্ষিত এলাকায় বালু কিংবা পাথর উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd