কোম্পানীগঞ্জে ধলাই নদীতে চলছে চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ৬:০৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০১৯

কোম্পানীগঞ্জে ধলাই নদীতে চলছে চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

Manual1 Ad Code

সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি ও ছাতক-কোম্পানীগঞ্জ নৌপথে চাঁদাবাজির পর এবার ধলাই নদীতে চলছে চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এই প্রভাবশালী কালা ও রহমানের কাছে অসহায় স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। এই কালা বাহিনীর হাতে ক্ষত ভিক্ষত হচ্ছে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি। আর লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছেন তারা। আপ্তাব আলী কালা মিয়ার পূত্র রিপন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করলেও নিরব স্থানীয় থানা পুলিশ। এদের সাথে রয়েছেন দুই আইনজিবী। তারা নিয়মিত এই চাঁদার ভাগ পাচ্ছেন।

জানা গেছে, ইজারা-বহির্ভূত জায়গা থেকে একাধিক চক্র বালু উত্তোলনে জড়িত। শুধু বালু উত্তোলন নয়; বালুবাহী নৌযান থেকে ঘাটে ঘাটে আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। এমনকি যারা ইজারা নিয়েছে. তারাও টোল আদায়ের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে ধলাই নদীতে বালুবাহী নৌযান থেকে চাঁদা আদায় বন্ধের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নদীর যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর ওপর নির্মিত ধলাই সেতুটি। পাশাপাশি নদীতীরবর্তী গ্রাম, বাজার ও রেলওয়ের বাংকার এলাকাও রয়েছে ভাঙনের মুখে।

ইজারা-বহির্ভূত জায়গা থেকে টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলী কালা ও যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে। আপ্তাব আলী কালা চলতি বাংলা সনের জন্য ২৪ লাখ টাকায় ভাটরাই মৌজার বালুমহাল উজারা নেন। এর আগের বছর ইজারা নেন তাহমিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান। কিন্তু তারা উভয়েই ধলাই নদী, বাংকার ও বাজার এলাকা থেকে টোল আদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য আপ্তাব আলী কালা জানান, তিনি ইজারা-বহির্ভূত জায়গা থেকে বালু উত্তোলন কিংবা টোল আদায়ে জড়িত নন। আব্দুর রহমান বলেন, এবার তিনি ইজারা পাননি। উচ্চ আদালতে ধলাই নদী বালুমহালের ইজারা নিয়ে মামলা চলছে। বালু উত্তোলনে তিনি জড়িত নন বলে জানান।

Manual7 Ad Code

স্থানীয় শ্রমিকরা জানান, টোল প্রদান ছাড়াও নৌযান থেকে একাধিক স্থানে ‘জায়গার কমিশন’ নামে চাঁদা আদায় করছেন স্থানীয় কলাবাড়ির বিল্লাল হোসেন ও তার ভাই আলিম উদ্দিন এবং তাদের লোকজন। ধলাই নদীতে প্রতিদিন শত শত বালুবাহী বলগেট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকাপ্রতি ২শ’ থেকে ২ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে তারা। এ অবস্থায় গত ২৫ জুন শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি

Manual5 Ad Code

প্রদান করে কোম্পানীগঞ্জ পাথর উত্তোলন ও বহনকারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন। স্মারকলিপির অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছেও। স্মারকলিপিতে শ্রমিকরা উল্লেখ করেন, শ্রমিকরা কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিতে বালু ও পাথর উত্তোলন এবং বহন করতে গিয়ে চাঁদাবাজদের হাতে প্রতিদিন লাঞ্ছিত হচ্ছেন। সম্প্রতি টোল আদায়ের নামে ধলাই নদীতে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। গত ২৭ জুন কোম্পানীগঞ্জের কালিবাড়ী গ্রামের মখলিছ মিয়ার স্ত্রী কিতাবুন নেছা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর আরেকটি অভিযোগ দাখিল করেন। কিতাবুন নেছা অভিযোগে উল্লেখ করেন, ধলাই নদী থেকে উত্তর কলাবাড়ি গ্রামের আব্দুল মনাফের ছেলে মো. আলীম উদ্দিন, জালাল মিয়া, মৃত আব্দুল বারির ছেলে জৈন উদ্দিন, গফুর মিয়ার ছেলে মনির মিয়া, মখলিছ মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়াসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন প্রতিদিন জোরপূর্বক তার জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

Manual6 Ad Code

চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে- স্বীকার করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম আহমদ বলেন, ‘আমার কাছে কম হলেও ১০টি অভিযোগ এসেছে। থানা পুলিশ এগিয়ে না এলে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে না।’ তিনি জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে ধলাই সেতু। আশপাশের স্থাপনাও ঝুঁকিতে আছে। কোম্পানীগঞ্জ পাথর উত্তোলন ও বহনকারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, বারবার অভিযোগ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। চাঁদা না দিলে শ্রমিকদের ভয় দেখানো ও মারধর করা হয়।

বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন, ‘একাধিক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।’

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2019
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..