পল্লী নিবাসে চিরনিদ্রায় শায়িত এরশাদ

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯

পল্লী নিবাসে চিরনিদ্রায় শায়িত এরশাদ

Manual4 Ad Code

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে রংপুরের পল্লী নিবাসে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। এর আগে কবরের পাশে তার মরদেহকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অনার প্রদান করা হয়।

রংপুরের মানুষের ভালোবাসায় শ্রদ্ধা রেখে পল্লী নিবাসেই এরশাদকে দাফন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি।মঙ্গলবার দুপুরে পার্টির সিনিয়র নেতারা এরশাদকে সমাহিত করার বিষয়ে চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্ত নেন।

জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, পল্লী নিবাসে এরশাদের সমাহিত করার অনুমতি দিয়েছেন তার স্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। এরশাদের কবরের পাশে নিজের জন্য কবরের জায়গা রাখার অনুরোধও করেছেন রওশন এরশাদ।

এরশাদের ছোটভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাও পল্লী নিবাসে এরশাদকে সমাহিত করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ রংপুর-৩ (সদর) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি এ আসন থেকে টানা ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রংপুরকে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি বিবেচনা করা হয়। এরশাদ জেলে থেকেও এখান থেকে ভোট করে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন।

Manual5 Ad Code

পল্লীবন্ধুকে নিয়ে রংপুরের মানুষের এক ধরনের আবেগ কাজ করে। সেই আবেগ থেকেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এখানকার নেতাকর্মীরা পল্লী নিবাসে এরশাদের জন্য কবর খুঁড়ে রাখেন। তারা এরশাদকে রংপুরেই সমাহিত করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।

মঙ্গলবার বেলা ২টা ২৯ মিনিটে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় এরশাদের জানাজা।

Manual1 Ad Code

রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মরদেহ পল্লী নিবাসে নেয়া হয়েছে। এরশাদের কফিনবাহী গাড়িতে ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা।

Manual3 Ad Code

এরশাদের জানাজায় ইমামতি করেন রংপুর করিমিয়া নুরুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুহম্মদ ইদ্রিস আলী। জানাজা শুরু হয় দুপুর ২টা ২৭ মিনিটে। শেষ হয় ২টা ২৯ মিনিটে।

জানাজা শেষে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এরশাদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান। প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ঢল নামে।

জানাজার আগে এরশাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া চেয়ে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ।

রংপুরের মেয়র পল্লীবন্ধুকে রংপুরে পল্লী নিবাসে খোঁড়া কবরে সমাহিত করার ঘোষণা দেন। তখন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান। এর পরই লাশবাহী গাড়ি পল্লী নিবাসের উদ্দেশে রওনা হয়।

এর আগে এরশাদকে বহনকারী বিমানবাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবতরণ করে। পরে ১২টা ১৫ মিনিটে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে কালেক্টরেট মাঠে এরশাদের মরদেহ নেয়া হয়। সেখানে এরশাদের লাশ গ্রহণ করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাসহ নেতাকর্মীরা।

সেখানে পল্লীবন্ধুর কফিন পৌঁছলে তাকে ঘিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দলের নেতাকর্মীরা। অনেককে চোখের পানি মুছতে দেখা গেছে। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

প্রসঙ্গত রোববার সকাল পৌনে ৮টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। রোববার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদে দ্বিতীয় এবং বাদ আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রংপুরে চতুর্থ জানাজা শেষ হয়েছে।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..