জকিগঞ্জে বড় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাইয়ের ফাঁসি

প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৯

জকিগঞ্জে বড় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাইয়ের ফাঁসি

Manual8 Ad Code

জকিগঞ্জ পৌর শহরে থাকা লাকি হোটেলের স্বত্বাধিকারী কামাল আহমদ হত্যা মামলার রায়ে সৎ ভাই জাকির হোসেনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ১ম এর বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

Manual8 Ad Code

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট জাকির হোসেনের হাতে খুন হন জকিগঞ্জ পৌর শহরে থাকা লাকি হোটেলের স্বত্বাধিকারী কামাল আহমদ। পরদিন তাঁর স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ রায় প্রদান করেন। আদালতের এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা। রায়ের পরপর নিহতের ছেলে মাহি উদ্দিন (১৭) বলেন, আমরা অনেক খুশি। আমাদের বাবাকে ঘরের ভিতরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম ন্যায় বিচারের। আমরা রায় পেয়েছি। এজন্য আমরা সন্তুষ্ট।

Manual2 Ad Code

এসময় নিহতের স্ত্রী মামলার বাদী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন যত দ্রুত রায় কার্যকর হবে আমরা তত খুশি হবো।

রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম, বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন এডভোকেট প্রসেঞ্জিত দাশ ও আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সুশীল দাস। রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, মেয়ে নিদাউল জান্নাত নিদা, জিনানুল জান্নাত নিহা, নিহতের শ্যালক ফেরদৌস মাহবুব।

Manual5 Ad Code

এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট জকিগঞ্জ পৌর শহরে থাকা লাকি হোটেলের স্বত্বাধিকারী কামাল আহমদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুপিয়ে হত্যা করে তাঁর সৎ ভাই। এ ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস রাহেনা জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

তিনি দায়েরকৃত মামলার লিখিত অভিযোগে বলেন, তার স্বামী কামাল আহমদ জকিগঞ্জ বাজারের লাকি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট-১ এর পিছনের বাসায় সন্তানাদি ও দেবর জামাল আহমদের পরিবারকে নিয়ে বসবাস করতেন।

তার স্বামীর সৎ ভাই জাকির হোসেন খলাছড়া গ্রামে তাদের পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বসবাস করেন। আসামী জাকির হোসেন ও তার অন্যান্য ভাইদের সাথে তার স্বামীর দীর্ঘদিন থেকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলছিল।

ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে তিনি ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে চা-আনতে হোটেলে যান। তখন তার স্বামী কামাল আহমদ ও মেয়ে জিনানুল জান্নাত নিহা (১০) বাসার পশ্চিম পাশের রুমের খাটের উপর ঘুমে ছিলেন।

সকাল অনুমান ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে তার স্বামীর সৎ ভাই আসামী জাকির হোসেন তাদের বাসার ভিতরে প্রবেশ করে তার দেবর জামাল আহমদের হোটেলের কাজের মহিলা মল্লিকা বেগম ঘরের সামনের বারান্দায় বসিয়া ধারালো বড় বটি দা দ্বারা সবজি কাটতে দেখে সে ওই মহিলাকে জামাল আহমদের স্ত্রীকে ডাকতে বলেন।

এ সময় মল্লিকা বেগম জামাল আহমদের স্ত্রীকে ডাকতে গেলে আসামী জাকির হোসেন সবজি কাটার ধারালো বড় বটি দা হাতে নিয়ে তাদের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে তার স্বামী কামাল আহমদকে ঘুমন্ত অবস্থায় এলোপাথাড়িভাবে কোপিয়ে বুক, হাত, পেট ও পায়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।

এ সময় তিনি তার স্বামী ও মেয়ে নিহার ডাক চিৎকার শুনে দ্রুত শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে আসামী জাকির হোসেনকে আটকানোর চেষ্টা করেন। তখন আসামী জাকির হোসেন তাকে কোপানোর ভয় দেখিয়ে রক্তমাখা বাটি দা হাতে নিয়ে দ্রুত দৌড়ে জামালের হোটেলের ভিতর দিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যায়।

পালিয়ে যাওয়ার সময় তার হাতে থাকা রক্তমাখা বটি দা লাকি হোটেলের সামনে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরের পাশে ফেলে যায়। ঘটনার পর তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ঘটনা দেখেন এবং শুনেন।

তাৎক্ষণিক পরিবারের লোকজন জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটে প্রেরণ করেন। এমতাবস্থায় তিনি তার স্বামীকে অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় সিলেট এমএজি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..