সুনামগঞ্জ শহরে ঢুকছে পানি: ২১৮টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০১৯

সুনামগঞ্জ শহরে ঢুকছে পানি: ২১৮টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

Manual3 Ad Code

ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক না থাকার কারণে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো জলাবদ্ধতায় পড়েছে সুনামগঞ্জ শহর। বিগত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিভিন্ন দিক দিয়ে শহরে পানি প্রবেশ করেছে। এতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা। এ অবস্থায় বড় ভোগান্তিতে পড়ে শহরবাসী।

Manual1 Ad Code

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ধোপাখালি, ষোলঘল, কাজিরপয়েন্ট, উকিলপাড়া, পশ্চিম আরপিন নগর ও তেঘরিয়া এলাকা দিয়ে প্রায় একই সময়ে পানি প্রবেশ করে। প্রথম মিনিট দশেক পানি অল্প করে প্রবেশ করলেও পরে এর বেগ বাড়ে মাত্রাতিরিক্ত আকারে। এসময় কোন কোন জায়গায় প্রায় দুই ফুট পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। সেই সাথে সুরমা নদীর পানি উপচে তলিয়ে যায় এসব এলাকার রাস্তাঘাট। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে দেখা দেয় চরম ভোগান্তি।

এদিকে দোকানের সামনে পানি জমে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীকে নিজ উদ্যেগে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন পরিষ্কার করতেও দেখা যায়।শহরের উত্তর আরপিন নগরের রুজেল আহমদ বলেন, ‘আমাদের এখন নৌকা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়, আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।’

Manual1 Ad Code

উকিল পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী রুবেল আহমেদ বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই বার পানি শহরে পানি প্রবেশ আমাদের জন্য অশনি সংকেত। দ্রুত খাল উদ্ধার ও ড্রেনগুলোর মুখ পরিষ্কার করে না রাখলে হয়তো কয়েক দিন পরে দেখবেন শহরের ঘরে ঘরে পানি। কিন্তু এই দিকে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।

Manual8 Ad Code

এছাড়া জেলার ২১৮টি বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ২২টি, দোয়ারাবাজার উপজেলার ১৮, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ২৭টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ৩ টি, ছাতক উপজেলার ১০ টি, জামালগঞ্জ উপজেলার ৩০ টি, তাহিরপুর উপজেলার ১৯ ও ধর্মপাশা উপজেলার ৫৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Manual2 Ad Code

এদিকে একই কারণে জেলার মাধ্যমকি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসহ মোট ৫০ টি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৯টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১৭টি, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৪টি, ধর্মপাশা উপজেলায় ২টি, দোয়ারাবাজার উপজেলায়া ১০টি এবং তাহিরপুর উপজেলায়া ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলায় প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় লক্ষাধিকের উপরে মানুষ। এসব এলাকায় খাবার পানিও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে দুর্গত মানুষদের সাহায্য করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় তিন লাখ টাকা, ২০০ মেট্রিক টন চাল এবং ৩ হাজার ৮০০ প্যাকেট শুকনা খাবার মজুত আছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর বলেন, আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাত হবে, পরিস্থিতি আরোও অবনতি হতে পারে। সবাইকে সাবধানে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..