রিকশাচালককে ডেকে নিয়ে ইয়াবায় ফাঁসাল পুলিশ!

প্রকাশিত: ৬:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০১৯

রিকশাচালককে ডেকে নিয়ে ইয়াবায় ফাঁসাল পুলিশ!

Manual1 Ad Code

গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক ভিক্ষুকের রিকশাচালক ছেলেকে থানায় ডেকে নিয়ে ইয়াবা দিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আয়েস আলী। বুধবার দুপুরে আয়েস আলী সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।

আয়েস আলীর অভিযোগ, আমার ছেলে কাউছার (২৭) পেশায় রিকশাচালক। যাত্রীদের প্রয়োজনে দূর-দূরান্তে রিকশা নিয়ে যায়। গত ২০ জুন রাতে উপজেলার কাপাইশ গ্রামের মোন্তাজ উদ্দিন দর্জির ছেলে রাসেল দর্জিকে নিয়ে ছৈলাদি গ্রামে যায় কাউছার। তাকে নিয়ে ফেরার পথে ওই গ্রামের তমিজ শেখের ছেলে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) বোরহান শেখ তাদের গতিরোধ করে। এ সময় রাসেল দর্জির শরীর তল্লাশি করে ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

বিষয়টি জানাজানি হলে একই গ্রামের সফুর উদ্দিন শেখের ছেলে তাইজুল ইসলাম, মৃত সামছু শেখের ছেলে বাদল শেখ ও মফিজ উদ্দিন ওরফে বুইড্ডা শেখের ছেলে জয়নাল শেখ বিষয়টির সমঝোতা করেন। এ সময় চৌকিদার বোরহানকে আর্থিক সুবিধা দেয়ার প্রলোভন দেখালে ইয়াবা রেখে তাদের ছেড়ে দেয়। পরের দিন (২১ জুন) এ ঘটনায় সমঝোতাকারী তাজুলের বিকাশ নম্বরে দুই হাজার টাকা পাঠায় কাউছার। স্থানীয়রা বিষয়টি জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি গ্রাম পুলিশ সিদ্দিকের মাধ্যমে থানায় জানান।

Manual6 Ad Code

ওইদিন রাতে থানা পুলিশের এসআই আব্দুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স ও দুই গ্রাম পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে রাসেলকে বাড়ি থেকে আটক করে। ২২ জুন সকালে গ্রাম পুলিশ বোরহান কাইছারকে ফোনে ডেকে আনে এবং চৌকিদার বোরহানের কাছে রাখা ৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রাম পুলিশ সিদ্দিককে সঙ্গে নিয়ে থানায় নিয়ে যায়।

Manual6 Ad Code

কিন্তু ওই রাতে এসআই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে থানায় ৪৪ পিস ইয়াবা জব্দ দেখিয়ে কাউছারের নামে একটি (নং ২৩) মামলা করেন। পরদিন (২৩ জুন) সকালে রাসেলকে থার্টিফোরে এবং কাউছারকে মাদক মামলায় গাজীপুর আদালতে পাঠায়।

এদিকে, পুলিশ রাসেলকে বাড়ি থেকে আটক করলেও আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে তাকে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার দুর্বাটি গ্রাম থেকে আটক করা হয়েছে।

আয়েস আলী বলেন, আমি গরিব এবং টাকা দিতে পারিনি বলে রাসেলের কাছ থেকে উদ্ধার করা ইয়াবা দিয়ে আমার ছেলে কাউছারকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন এসআই। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি মঙ্গলবার এসপি ও ডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে পুলিশের এসআই আব্দুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি তিনি। পরে থানায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে থানা পুলিশের ওসি মো. আবুবকর মিয়া স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে থানায় ডেকে নিয়ে এসআই আব্দুর রহমানের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। ওই সময় রাসেলকে নিজ বাড়ি থেকে আটকের কথা বলেন ওসি। কিন্তু রাসেলকে আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় অন্য স্থানের কথা।

Manual4 Ad Code

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পরে ওসি বলেন, মামলার প্রয়োজনে পুলিশ যেকোনো স্থানের কথা উল্লেখ করতে পারে। তাতে কোনো সমস্যা নেই।

এ বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশ হলেও তাকে ছাড় দেয়া হবে না।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..