সিলেট ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে দুর্নীতির শীর্ষে থেকেও দুই প্রার্থী ভোট যুদ্ধে লড়াই করছেন । একজন ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র নজরে আসলেও অপরজন থেকে গেছেন আইনের ধরাচোঁয়ার বাইরে ।
এনিয়ে সারাদেশে চলছে তুলকালাম কান্ড । বিভিন্ন সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে প্রকাশিত সংবাদ । জৈন্তাপুরের রাজাকার পুত্র লিয়াকত আলী নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর আরো বেশি গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে মিডিয়ায়। কিন্তু ধরাচোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন রাজাকার পুত্রের অপর সহযোগী শাসকদলীয় ক্ষমতাবান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ‘প্রজাপতি প্রার্থী’ জয়মতি রাণী । অথচ তারা দু’জনই শাসকদলিয় কর্তা ।
সকলের নজর এবার তাদের দিকে । যদিও এই প্রথমবার জিরো থেকে কোটিপতি মালিক বনে গিয়ে রাজাকার পুত্র লিয়াকত আলী নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে জৈন্তাপুর উপজেলায় ভোট যুদ্ধে উপনীত হয়েছেন । আর অপর মহিলা এর আগে একাধিকবার ওই উপজেলায় রাম-রাজত্ব কায়েম করেন মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান হয়ে ।
অভিযোগ রয়েছে তারা দু’জনই জৈন্তা, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ সিলেট ৪ আসনের আর্শীরবাদপুষ্ঠ প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী (এমপি) ইমরান আহমদের দয়ায় জৈন্তাপুরে এ রাম-রাজত্ব কায়েম করেছেন । ওই এমপির গাড়ি চালক থেকে এপিএস হন লিয়াকত আলী ও গৃহীনি থেকে মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান হয়ে ওঠেন জয়মতি রাণী । একপর্য্যায় শুরু হয় তাদের দু’জনের পথচলা । তবে আড়ালে গা ঢাঁকা দিয়ে কুঠকৌশলে আয়বর্হিভুত লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নেন মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান জয়মতি রাণী । বিভিন্ন নিয়োগ বানিজ্য, জলমহাল লিজ বাণিজ্য ছাড়াও জাফলং-শ্রীপুর পাথর কোয়ারী বানিজ্যে ও মামলা মোকদ্দমার তদবির বাণিজ্য একধাপ এগিয়ে ছিলেন তারা । অল্প দিনেই তারা জিরো থেকে কোটিপতি হয়ে ওঠেন ।
বর্তমানে তারা দু’জন একাধিক প্লট বরাদ্ধের মালিকও । পুলিশ কন্সটেবল নিয়োগ বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ কামাই করেছেন মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান জয়মতি রানী । নিজের পরিবারের আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে পারা প্রতিবেশি গ্রামের বেশ ক’জনকে বড় অংকের হাদিয়া হাতিয়ে নিয়ে তদবির বানিজ্যে চালিয়ে পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্যের রমরমা ব্যাবসায় জড়িত ছিলেন । আবার অনেককে প্রাথমিক বিদ্যালয়েও চাকুরীর সুযোগ করে দিয়েছেন শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে ।
খুঁজ নিয়ে দেখা যায়, জয়মতি রাণী’র স্বামী সুকেশ নমঃশুদ্র একজন মাছ বিক্রেতা । সে হরিপুর এলাকার বিভিন্ন হাওড়াঞ্চল থেকে খুচরা মৎস শিকারীদের কাছ থেকে মাছ সংগ্রহ করে সিলেট নগরীর ইসলামপুর মেজরটিলা মাছ বাজারে নিয়ে এসে মাছ বিক্রয় করে থাকে । ৮ম শ্রেণী পাশ জয়মতি রাণী তার নির্বাচনী হলফনামায় মৎস ব্যবসা আড়াল করে ‘কৃষি’ কাজ দেখিয়ে ফরম জমা দেয় । তারপরে স্বামীকে লোকচক্ষুর আড়ালে রেখে অবৈধ পন্থায় টাকা রোজগারে মাঠ চুষিয়ে বেড়ায় ।‘হাতে রাখে “জপমালা” কপালে তিলক ।’ তাকে দেখলে মনে হয় সে খুব বড় মাপের একজন ধার্মিক মহিলা ! তার চালচলনের মাধুর্য সম্পন্ন ভিন্ন । কিন্তু রহস্যজনক হলেও সত্য যে, ৫নং-ফতেহপুর ইউনিয়নের হেমু গ্রামেই তার স্বামীলয়। সেই হরিপুর পরগনাবাসীর উন্নয়নেও কোন ভুমিকা পালন করতে পারেনি সে । তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এবার পরাজয় নিশ্চিত ভেবে জয়মতি রাণী হাত মিলিয়েছে রাজাকার পুত্র লিয়াকতের সাথে । গোপনে ভোট আদান-প্রদানের কাজ ছাড়চেন তিনি । সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট লিয়াকত আলীর পক্ষে এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন । অপরদিকে লিয়াকত আলীও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন তার সাধ্য অনুযায়ী জয়মতিকে তার ধর্মের অর্থাৎ মুসলিমদের ভোট পাইয়ে দিবেন । সেই মর্মে ভোটযুদ্ধে তারা দু’জন এখন একাকার । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেমু গ্রামের বেশ ক’জন সংখ্যালঘু প্রতিবেদককে জানান, উমনপুর এলাকায় লাখ লাখ টাকা ব্যায় করে একটি প্লট ক্রয় করেছেন জয়মতি রাণী । এছাড়া সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে চাকুরীও দিয়েছেন তিনি । তাও আবার লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে । যদিও জৈন্তাপুরবাসী সংখ্যালঘু (হিন্দু) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভিন্নভাবে ভালবাসেন মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরা । সেই লোকদের ঠকিয়ে তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে সেও এখন প্রায় জিরো থেকে কোটিপতি । তারা আরো জানান, বিগত ৫-৬বছরে তার নেতৃত্বে কতগুলো কাজ সূষ্টভাবে সম্পন্ন হয়েছে তার ফিরিস্তি উপজেলা প্রশাসনে খবর নিলে আরো অনেক অনিয়ম দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে । উল্লেখ্য থাকে যে, আগামী ১৮মার্চ সিলেটে ভোটযুদ্ধের লড়াই শেষ হবে ।
সূত্র : Cnbangladesh.com
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd