সিলেটের মোহাজেররা সংশোধিত ভূমি পাচ্ছে

প্রকাশিত: ৭:৪৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯

সিলেটের মোহাজেররা সংশোধিত ভূমি পাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার :: ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর থেকে বাংলাদেশে আসা মোহাজিরদের জায়গা নিয়ে এখনও জটিলতা চলছে। দেশের অনেক স্থানে তারা নিরাপদ আবাসন গড়ে জীবনযাপন করলেও অধিকাংশ স্থানে তারা ভালো নেই।

সরকার থেকে যে জায়গা মোহাজিরদের বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছিল তা কখনও বেদখল, কখনও রেকর্ডে ভূল আবার কখনও বা উচ্ছেদ হতে হয়েছে তাদের। দীর্ঘদিন থেকে নানা উদ্যোগের পর তাদের ভূমি জটিলতার অবসান হচ্ছে। তারা পাচ্ছে সংশোধিত ভূমির দখল। সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় বসবাসরত কয়েক হাজার মোহাজির পরিবার কে সমজে দেওয়া হচ্ছে তাদের জন্য অধিগ্রহণকৃত ও গেজেট ভূক্ত ভূমি।

অতীতে এসব ভূমি রেকর্ডে ভূলসহ নানা জটিলতাও ছিল।সিলেটের ওই চারটি উপজেলায় মোহাজেরদের জায়গার হিসাব সংরক্ষণ ও রেকর্ড সংশোধন করার কাজ চলছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গত ০৪/০২/২০০৭ইং স্মারক নং ২১১, তারিখ ২৪/০৩/২০১৫ইং ২৩ আগষ্ট ২০১৬ইং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সিলেট কর্তৃক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জোনাল সেটেলমেন্ট বরাবরে আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা ভূমি অফিস ওই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরই মধ্যে ১৯৫১ইং ১৭ই মে দি ঢাকা গেজেট মূলে মোহাজিরদের জন্য অধিগ্রহণকৃত গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ইউনিয়নের চৈলাখেল মৌজার ৩য় খন্ড হইতে ৯ম খন্ড পর্যন্ত ৩২৭২ একর ৩৬ শতক ভূমি মোহাজিরদের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির হিসাব সংরক্ষণও রেকর্ড সংশোধন কার্যক্রমে চৈলাখেল ৩য় খন্ড ও চৈলাখেল ৪র্থ খন্ডের গত ১৩/০২/২০১৯ইং তারিখে রোজ বোধবার সেখানে সাইন বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। সাইনবোর্ড স্থাপন করেন উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আব্দুল হালিম মজুমদার ও ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী শামীম আহমদ এবং চেইন ম্যান মোঃ শাহ আলম।

ওই সময় উপজেলায় বসবাসরত মোহাজির পরিবারের সদস্যরা সহ জেলা মোহাজির কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ ইয়ানুর আলী ও জাফলংস্থ মোহাজির কলোনীর প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, রইছ আলী, ফরমান মিয়া, সেক্রেটারী শফিকুল ইসলাম আজাদ, আলহাজ লুৎফুর রহমান ও হুমায়ুন কবির লিমন উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে জৈন্তা উপজেলায় মোহাজিরদের জায়গা চিহ্নিত করে গত ২৫ জানোয়ারী ২০১৯ইং তারিখে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। উল্লেখ্য যে গোয়াইনঘাট উপজেলায় অধিগ্রহণকৃত ভূমি বন বিভাগ তাদের দাবি করায় জঠিলতা দেখা দেয়। মোহাজিরগণ মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন ২৯১৩/০১৪ দায়ের করিলে মহামান্য হাইকোর্ট গত ০৪/১০/২০১৭ইং তারিখে মোহাজিরদের কার্যক্রম ব্যতিত বন বিভাগ সহ বিবাদিগণের কার্যক্রম মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। সিলেট সদর উপজেলার দেবপুর মোহাজির কলোনীর হিসাব সংরক্ষণ ও রেকর্ড সংশোধন কাজ ২০০৯ ও ২০১৫ইং সনে সম্পন্ন হয়েছে। কানাইঘাট উপজেলাও কাজ চলছে। সূত্র মতে ভারত বিভাগের পর থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ও পরে মোহাজিরদের নিয়ে নানা জটিলতা চলে আসছে। তাদের সরকার বসবাসের জায়গা দিলেও এতে রেকর্ডে ত্রæটি, দখল না পাওয়া, বনবিভাগ কর্তৃক বনায়নের নামে মোহাজিরদের ভূমি দখল পূর্বক পাথর ডাম্পিং ইয়ার্ড গড়ে তোলে পরিবেশের ক্ষতি, জায়গার পরিমাণ ইত্যাদি সমস্যা লেগেই থাকে।

গত ১০ এপ্রিল দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে সিলেটের জেলাপ্রশাসককে মোহাজিরদের জায়গার হিসাব সংরক্ষণ, রেকর্ড সংশোধন ও সাইনবোর্ড স্থাপন করে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী তখনকার জেলা প্রশাসকের পক্ষে ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা একই বছরে ২৫ এপ্রিল ৪টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোহাজিরদের পূণর্বাসনের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির হিসাব সংরক্ষণ,রেকর্ড সংশোধন ও সাইনবোর্ড স্থাপন কার্যক্রম করার কথা জানান।আর সে অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট শেষ হয়েছে। বাকি দুইটি উপজেলার কাজ শেষ হলে মোহাজিরদের দীর্ঘ দিনের ভূমি জটিলতার অবসান হবে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2019
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
232425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..