কুলাউড়ায় চিকিৎসকের ভুলে হাত ভাঙ্গল নবজাতকের

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮

Manual4 Ad Code

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরের সেইফ ম্যাটারনিটি এন্ড সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ডেলিভারি রোগীর অপারেশন (স্বাভাবিক প্রসব) সময় ডাক্তারের ভুলে নবজাতক কন্যা শিশুর হাত ভেঙে যাওয়ায় জীবন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছে। ওই রোগীর অপারেশনের  দায়িত্বে ছিলেন ডা. আই ই রেমা।

নবজাতকটির স্বজনরা বিষয়টি জেনে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষেপে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ উপায়ন্তর না দেখে শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি ডাক্তার আই ই রেমা নিজের ভুল স্বীকার এবং নবজাতকটির চিকিৎসার জন্য সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেছেন বলে জানান।

জানা যায়, শনিবার (১৩ জানুয়ারি) উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাউৎগাঁও (উজানপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা আরব আমিরাত প্রবাসী সুজন মিয়ার স্ত্রী পান্না বেগম অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে অপারেশনের জন্য তাকে থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্লিনিকের ডাক্তার আর এ রেমা এই ডেলিভারি অপারেশনের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে নবজাতক শিশুটিকে তার নানী শেলী বেগমের কাছে হস্তান্তর করলে তিনি দেখতে পান নাতির হাত ভাঙা। তাৎক্ষণিক তিনি ওই ডাক্তারকে বিষয়টি জানালে ডাক্তাররা নবজাতকের হাতে সাথে সাথে ব্যান্ডেজ করে দেন।

Manual6 Ad Code

খবরটি জানার পর রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকালে শিশুটির আত্মীয় স্বজনরা ক্লিনিকে এসে জবাবদিহি চাইলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করে কাউকে না জানানোর শর্তে নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে নবজাতক শিশু, তার মা ও নানীকে ডাক্তার রেমা নিজেই একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটে নিয়ে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় এই ক্লিনিকে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই শুধুমাত্র এমবিবিএস চিকিৎসক দ্বারা সিজার অপারেশনের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এজন্য জন্মের সময় অনেক নবজাতকের মৃত্যুও ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে।

Manual2 Ad Code

শিশুটির নানী শেলী বেগমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে অপারেশন করেন ডাক্তার রেমা। ডেলিভারির সময় বাচ্চার হাত ভাঙছে।

তিনি আরও বলেন, রেমা স্যারে আমরারে (শিশু, মা ও নানী) তান (উনার) গাড়ি দিয়া সিলেট পাঠাইছোইন। কোন হাসপাতালে পাঠাইছোইন আমরা জানি না। উনারা জানেন। এখনো আমরা রাস্তায়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক আই ই রেমার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নরমাল ডেলিভারির সময় হাতে টান লেগে হাতে ফ্রেকচার হইছে, হাড় ফেটে গেছে। তিনি বলেন, ভুল আমাদের হয়ে গেছে। এজন্য আমরা নিজেরাই চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। আমি শিশুটিকে নিয়ে সিলেটের ক্রোমা হাসপাতালে আছি। ডাক্তার এসে সিদ্ধান্ত নিবেন।

Manual5 Ad Code

এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. জাকির হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। তবে শিশুটির স্বজনরা কেউ যদি অভিযোগ করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. বিলেন্দু ভৌমিক জানান, বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জেনেছি। সিভিল সার্জন দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি আসার পর বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়াও জেলার প্রতিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করে সেগুলোতে নিয়ম মেনে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখবো।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..