সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২২
দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি : ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যার কবলে এখন সিলেট। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ২০০৪ সালের পর সিলেটে নদীর পানি কখনও এতটা বাড়েনি। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আরও কয়েক দিন সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বৃষ্টি কমছে না। তাই পাহাড়ী ঢলের পানিতে আমাদের দেশে পানি বাড়ছে। সিলেটর সুরমা নদীর পানি উপচে সিলেট নগরীর দুই তীরের ঘরবাড়ি ও দোকানে পানি ঢুকেছে। নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা কালিঘাটের শত শত দোকান ও গুদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে এই অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লাউয়াই, খোজারখলা ও ভার্থখলাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা এখন পানির নিচে। গতকাল বন্যার পানি বেশি বৃদ্ধি পায়। ২৬ নং ওয়ার্ডের ভার্থখলা স্বর্ণালি ব্লক সি/২৮ নং বাসার দুই জন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। জানা যায়, উক্ত বাসার বাসিন্দা শওকত হোসেন মজল (৬০) ও তার স্ত্রী হালিমা হোসেন রিনা (৫০) কে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বাসায় ছিলেন। গতকাল রাতে বন্যার পানি বিশাল আকারে বেড়ে যাওয়ায় এলাকার স্থানীয় লোকজন আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের স্বেচ্ছাসেবীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার নেতৃবৃন্দ উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। উক্ত এলাকার প্রায় হাজারখানেক লোককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু শওকত হোসেন মজল ও তার স্ত্রী হালিমা হোসেন রিনাকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের ঘর সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জানা যায়,এ বিষয়ে তার আত্মীয় রাসেল মিয়া গতকাল দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। তাতে তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন শওকত হোসেন মজল ও হালিমা হোসেন রিনা বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় পানিতে তলিয়ে গেছেন। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজার পরও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। বন্যায় প্লাবিত এলাকা থেকে দূরে কোথাও যাওয়ার মতো শারিরীক শক্তিও তাদের নেই। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই দুইজনের নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, আরও লোক বন্যায় নিমজ্জিত হয়েছেন। বিদ্যুত উপকেন্দ্রে বন্যার পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুত ব্যবস্থা। নগরের তালতলা এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কার্যালয় সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই স্বেচ্ছাসেবীরা ঠিকমতো উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে পারছেন না। মানুষ দিশেহারা। এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট বিরাজ করছে। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুতহীনতা পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এমতাবস্থায় বন্যায় কতজন প্রাণ হারিয়েছেন বা অব্যাহত বন্যায় পরিস্থিতি আরও কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠে তা এখন সঠিক করে বলা যাবে না।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd