ছাতকে প্রতারণার শীর্ষে কে এই শামীম?

প্রকাশিত: ১০:৫৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০২০

ছাতকে প্রতারণার শীর্ষে কে এই শামীম?

Manual6 Ad Code

হেলাল আহমদ, ছাতক সংবাদদাতা :: ছাতকে কখনো সাংবাদিক, কখনো সরকার দলীয় নেতা, মানবাধিকার কর্মী আবার কখনো সংবাদিকদের সভাপতি হিসেবে পরিচয়দানকারী শামীম তালুকদারকে একজন জ্ঞানপাপী প্রতারক হিসেবে মন্তব্য করেছেন ছাতক প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক মহল। সে ঐতিহ্যবাহী ছাতক প্রেসক্লাব নিয়ে কটুক্তিমুলক মন্তব্য লিখে তার ছবি যোগ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে মুর্খের পরিচয় দিয়েছে।

একদিকে সে নিজেকে সাংবাদিকের সভাপতি দাবী করে, আবার অন্য দিকে বলে ‘কোন প্রেসক্লাব সরকার অনুমোদিত’। এসব কথাবার্তায় প্রমানীত হয় সে একজন গন্ডমুর্খ ছাড়া আর কিছুই নয়। সংবাদ, সংবাদপত্র, সাংবাদিকতা ও প্রেসক্লাব সম্পর্কে বিন্দু মাত্র ধারনা না থাকলেও তার দাবী মতে সে সাংবাদিকদের সভাপতি। এমন সভাপতি শুধু গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্টে ধুমপান করা ও তীর খেলার আড্ডা নিয়ে ব্যস্থ থাকাতেই ভালো মানায়। সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত অন্তত দু’ডজন স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে।

এ ছাড়া জাতীয় প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ইত্তেফাক, আমাদের সময়, যুগান্তর, জনকণ্ঠ, মানবজমিন, ইনকিলাব, কালেরকন্ঠ, সমকাল, নয়াদিগন্ত, যায়যায়দিন, ভোরের কাগজ ও দৈনিক সংবাদসহ প্রথমসারির প্রায় পত্রিকারই ছাতক উপজেলা প্রতিনিধি রয়েছে। এসব প্রতিনিধিরা ছাতক প্রেসক্লাবকে ঘিরেই যুগ-যুগ ধরে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু শামীম তালুকদার কিসের সভাপতি, কেন সভাপতি তা কেউ জানে না। পেকুয়া বিল, রেলওয়ে, সিমেন্ট কারখানা, হাদা টিলা নিয়ে পূর্বে একাধিকবার জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজের কপি করা হাতে গোনা এক গন্ডা সংবাদের দাবীদার হলেই সাংবাদিক হওয়া যায় না।

প্রকৃত সাংবাদিকরা প্রতিদিনই সংবাদ সংগ্রহ করে পত্রিকার সাথে একটিভ রয়েছে। সাংবাদিকতা আর ব্যাগ পিটে ফেলে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আমি সভাপতি, আমি সভাপতি বলা এক নয়। সভা-সমাবেশ, সেমিনার ও কর্মশালায় অতিথি হিসেবে পত্রিকায় নাম যোগ করতে সাংবাদিকদের পয়সা দিতে হয় এমন বিষয় একজন নামী-দামী প্রতারক ছাড়া আর কেউ জানার কথা নয়। যে কমিটির সভাপতি দাবীদার ওই কমিটির লোকজন গোবিন্দগঞ্জে জুতা পেটা করেছে শামীমকে। ছাতকে সাংবাদিতকায় বিভ্রান্ত ছড়িয়ে মহৎ এ পেশাকে কলংকিত করার অপচেষ্টায় দীর্ঘদিন ধরে লিপ্ত রয়েছে শামীম তালুকদার নামের এ প্রতারক।

Manual2 Ad Code

বহুরূপী এ প্রতারক নিজেকে একেক সময় একেক পরিচয় দিয়ে গোটা উপজেলা জুড়ে ধাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এখানে সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় নিয়োজিত সাংবাদিকরা ওই বহুরূপীর কারণে সাধারন মানুষের কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। শামীম তালুকদার কখনো সাংবাদিক, কখনো সরকার দলীয় নেতা, মানবাধিকার কর্মী আবার কখনো সাংবাদিকদের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। বহুরূপী ওই প্রতারক একটি ব্যাগ কাধে ফেলে এখানের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিস, শহরের আনাচে-কানাচে, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। বিশেষ করে ছাতক রেলওয়ে অফিসে সম্প্রতি নিজেকে প্রভাবশালী সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবীর বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছে। চাঁদা দাবীর বিষয় নিয়ে গত বছর ধারন বাজারে প্রতিপক্ষের হাতে পিটুনী খেতে হয়েছে তাকে।

সাংবাদিক পরিচয়ে তার বেপরোয়া চাঁদাবাজির বিষয়টি সাংবাদিকসহ সর্বমহলে এখন আলোচিত। তার চাঁদাবাজি এবং সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীর পরিচয়ে অসংখ্য মানুষকে হয়রানির প্রমাণ সাংবাদিকদের হাতে রয়েছে। রং বদল করা এ প্রতারক সাধারন মানুষকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, হুমকী-ধামকী, সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবী করাই তার পেশা। সে একাধিক সামাজিক সংগঠনের স্ব-ঘোষিত সভাপতি। নিজেকে মহান ও ব্যক্তিত্ববান করতে থানায় একাধিক জিডিও করেছে সে। একটি সূত্র মতে যুক্তরাজ্য পাড়ি জমানোর অপকৌশল হিসেবেই তার তৈরী করা ফেইক আইডিতে নিজেকে হুমকী দিয়ে থানায় এসব জিডি করে। সাধারন মানুষের অভিযোগ, সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারের প্রভাব দেখিয়ে সে নিরীহ লোকজনকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। উপজেলার বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তার গোত্রিয় ক’জনকে নিয়ে সে হাজির হয়ে কলম সৈনিক পরিচয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। তার সংগীরা অনেকেই অক্ষর-জ্ঞানহীন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সে তার নিজ এলাকায় একজন ঘৃনিত ব্যক্তি হিসেবেও পরিচিত। ফলে এলাকায় একাধিকবার লাঞ্চিত হয়েছে।

Manual8 Ad Code

শামীম যে কমিটির সভাপতি সে দাবী করে, সেই কমিটির লোকজন তাকে গোবিন্দগঞ্জে জুতা পেটা করেছে। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী ছাতক প্রেসক্লাব মতবিরোধের কারনে পৃথক কমিটির মাধ্যমে সাংবাদিকরা স্ব-স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাচ্ছে। দু’টি বলয়েই মুলত এখানের সাংবাদিকদের অবস্থান। কিন্তু ওই প্রতারক ও তার সংগীরা প্রেসক্লাবের কোন বলয়েই স্থান পায়নি। তার সীমাহীন ভন্ডামীর কারনে সরকার দলীয় এক সহযোগী সংগঠন থেকে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধাচারন করতে বিগত জাতীয় নির্বাচনে এক প্রবাসী কমিউনিটি নেতার পিছু নেয় সে। কিন্তু একই কারনে সেখানেও তার ঠাই হয়নি।

বর্তমানে সে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও প্রবাসী কমিউনিটি নেতার সাথে কৌশলে ছবি তুলে ওই ছবি তার ফেইসবুক আইডিতে আপলোড করে নিজেকে জাহির করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। সাংবাদিক সভাপতি পরিচয়দানকারী এ বহুরূপী প্রতারক থেকে সাবধান থাকার জন্য সাধারন মানুষের প্রতি আহবান জানান সর্বস্তরের সাংবাদিকবৃন্দ।

Manual3 Ad Code

এদিকে সদ্য প্রকাশিত একটি সংবাদে তার মুখোশ উন্মোচন করা হলে সহযোগী প্রতারকদের গা-জ্বালা শুরু হয়। অপরদিকে দু’শিক্ষক ও এক বালু শ্রমিক তার এসব অপকর্ম ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্নভাবে টাউট ও প্রতারক শামীমকে সহযোগিতা করছে। না জেনে তারা হয়তোবা এমন করছেন। শিক্ষকদের প্রতি আহবান আপনারা না জেনে সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ হবেন না। সংবাদ প্রকাশের পর নিজ ফেইসবুক আইডিতে সে সংবাদের একটি প্রতিবাদ দিয়েছে প্রতিবাদটি পড়লেই বুঝা যায় শামীম নিজেই নিজেকে টাউট ও প্রতারক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..