সুনামগঞ্জে শিশু তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় আটক ৭

প্রকাশিত: ১১:০৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২০

সুনামগঞ্জে শিশু তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় আটক ৭

Manual5 Ad Code

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে মাদ্রাসায় পড়ুয়া আট ৭ বছর বয়সী শিশু তোফাজ্জল অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দাদা চাচা ফুফুসহ আরো সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

শনিবার সন্ধ্যায় আটককৃতরা হলেন, উপজেলার সীমান্ত গ্রাম বাঁশতলার নিহত শিশু তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল, চাচা একবাল হোসেন, ফুফু শেফালী বেগম, অপর ফুফু শিউলী বেগম, প্রতিবেশী হবি রহমান, তার স্ত্রী খইরুন নেছা ও তাদের ছেলে রাসেল।

Manual1 Ad Code

এর আগে শনিবার সকালে নিহত তোফাজ্জলের পরিবারের সাথে পূর্ব বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমার জের থাকায় এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রথম দফায় গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছেন।

আটক কালা মিয়ার ছেলে আটককৃত অপর সন্দেহভাজন সেজাউল কবিরের সাথে নিহত শিশু তোফাজ্জলের ফুফু শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। নিহতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ বিয়ের পরে নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় শিউলিকে। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে পূর্ব বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলাকালীন অবস্থায় গত বুধবার নিখোঁজ হয় শিশু তোফাজ্জল। এরপর তোফাজ্জলের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলা হয় কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউলের প্রতি।

তারা বলেন- অপহরণের পর চিরকুট লিখে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করার পর তা না দেয়ায় তোফাজ্জলকে হত্যা করা হয়। আর এবার হত্যার অভিযোগ নিহত তোফাজ্জলের ফুফু শিউলীর শ্বশুর কালা মিয়া ও জামাই সেজাউলের প্রতি।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজের চারদিন পর শনিবার ভোররাত সোয়া ৫টার দিকে তাহিরপুর সীমান্তে বস্তাবন্দি অবস্থায় তোফাজ্জল হোসেন নামে সাত বছর বয়সী ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা গ্রামে থাকা এক প্রতিবেশীর বাড়ির পেছন থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

Manual4 Ad Code

নিহত তোফাজ্জল উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের সীমান্তগ্রাম বাঁশতলার জুবায়েল হোসেনের শিশু পুত্র ও বাঁশতলা দারুল হেদায়েত মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

Manual8 Ad Code

শনিবার ভোররাতে ঘটনাস্থলে থাকা থানার টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই মো. আবু মুসা শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে জানান- এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে আটক করেছেন।

পুলিশ ও নিহত শিশুর পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার সীমান্তগ্রাম বাঁশতলার জুবায়েল হোসেনের মাদ্রাসা পড়ুয়া সাত বছর বয়সী শিশু পুত্র তোফাজ্জল হোসেন গত বুধবার বিকেলে নিজ গ্রাম থেকেই নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর অপহরন সন্দেহে পরদিন বৃহস্পতিবার পরিবারের পক্ষ হতে দাদা জয়নাল আবেদীন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ ওই শিশুর সন্ধান পেতে দেশের সব থানায় তার বার্তা ও ই-মেইল প্রেরণ করেন।

অপরদিকে মামলা মোকদ্দমা ও পারিবারীক পূর্ব বিরোধের জের ধরে শিশু তোফাজ্জলকে অপহরণ পরবর্তী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এমন সন্দেহে উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে শনিবার ভোররাতেই টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা আটক করে ফাঁড়িতে পরবর্তীতে থানায় নিয়ে যান।

শনিবার সন্ধ্যায় তাহিরপুর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান বলেন, দু’দফায় ৯ জনকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মিজানুর রহমান জানান, পুলিশের দায়িত্বশীলরা আটককৃতদের নিবির পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। যে কারণে অধিকতর তদন্ত ছাড়া কিংবা নিশ্চিত না হওয়া অবধি ওই শিশু অপহরন ও হত্যাকাণ্ডে কে বা কারা জড়িত রয়েছেন সে ব্যাপারে আপাতত কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলার দিরাইয়ে ঘটে যায় দেশের বহুল আলোচিত শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ড। তুহিন হত্যাকাণ্ডে শেষ অবধি বাবা চাচা ও পরিবারের লোকজনই দায়ি হন। প্রতিপক্ষের সাথে মামলা মোকদ্দমার জের, ফাঁসাতে গিয়ে বাবা চাচা ও পরিবারের লোকজনই শিশু তুহিনকে হত্যা করেন নির্মমভাবে।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..