ময়না তদন্ত শেষে সুদীপের লাশ চট্টগ্রামে, গোয়াইনঘাটের ওসির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, জুন ৩, ২০১৯

ময়না তদন্ত শেষে সুদীপের লাশ চট্টগ্রামে, গোয়াইনঘাটের ওসির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি

Manual1 Ad Code

ওসি জলিল টাংগাইলের ঘাটাইল উপজেলার বাসিন্ধা বর্তমানে তিনি সিলেটের গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরর্ত আছেন। সিলেট রেঞ্জে প্রায় ৮ বছর থেকে আছেন। একের পর এক বির্তকিত কর্মকান্ড করলেও তদবীরের ঠেলায় বরাবরই বেঁচে যান। কর্মস্থলে তার রয়েছে বির্তকিত কর্মকান্ড, ওসি জলিল যেন এক আতঙ্কের নাম৷

২০১৪ সলে জৈন্তাপুরে থানায় থাকাবস্থায় ওসি জলিলের নানা কুকর্মের জন্য তিনি নানা ভাবে বিতর্কিত হন৷ তিনি গড়ে তুলে ছিলেন অপরাধ সিন্ডিকেট৷ তার বিরুদ্ধে থানা হাজত থেকে আসামী ছেড়ে দেওয়া, অফিসারদের সাথে খারাপ আচরণ সহ বিভিন্ন ভাবে তিনি মিডিয়ায় তাহার কু-কর্ম প্রকাশ হয়৷ অবশেষে চিকনাগুল বাজারে পুড়ে দেওয়ার পর তার দায়িত্বহীনতার জন্য ষ্ট্যান্ড রিলিজ এর মাধ্যমে জৈন্তাপুর থেকে অপসারন করা হয়৷

পরবর্তিতে তার কুকর্মের জন্য সে যে থানায় বদলি হয়েছে সেখানেই গিয়েই বির্তকিত হয়েছে৷ সাধারণ মানুষ মনে করে এমন ওসি পুলিশ বাহিনীর জন্য কলঙ্ক৷ সর্বশেষ তার অধিনস্থ পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর মাধ্যমে তার মুখোশ প্রকাশ হবে বলে সাধারণ জনতা মনে করেন৷ সুদীপ্তের মৃত্যুর পর যদি উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষ যথাযথ গুরুত্বের সহিত তদন্ত করেন তাহলে ওসি আব্দুল জলিলের প্রকৃত রহস্য বের হবে৷ বিগত ২০০০ সালে হতে বর্তমান কর্মস্থল পর্যন্ত ওসি জলিলের অধিনস্থ অফিসারদের জবনবন্দি গ্রহন করা হয়। তাহলে তার ব্যবহারের ফিরিস্তি জানা যাবে৷ ওসি জলিলের হাত থেকে পুরো পুলিশ বাহিনীকে রক্ষা করতে থানা কম্পাউন্ডে সুদীপের মত এক সৎ অফিসারকে জীবন দিতে হয়েছে৷ আর যাতে কোন অফিসার জীবন দিতে না হয়।

ওসি আব্দুল জলিল ২০১৮ সালের ২৭ মে রোববার সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার দায়িত্ব যোগদান করেন। এর পর থেকেই তিনি একের পর এক বির্তকিত কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। ওসি আব্দুল জলিল গোয়ইনঘাট থানায় যোগদানের আগে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানা থেকে ওসি আব্দুল জলিলকে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। শ্রীমঙ্গলে তার উপস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ায় থানা ছাড়তে বাধ্য হলেন তিনি। সর্বশেষ তার দুর্ব্যবহার সইতে না পেরে থানার একজন সৎ পুলিশ অফিসার আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।

Manual6 Ad Code

গত রাববার (২জুন) বেলা আড়াইটার দিকে গোয়াইনঘাট থানার অভ্যন্তরের কোয়ার্টার থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ বড়ুয়ার (৪৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

Manual1 Ad Code

জানা গেছে, সুদীপ বড়ুয়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সোনাইচড়ির মৃত রবীন্দ্র লাল বড়ুয়ার ছেলে। তার এক ছেলে নৌবাহিনীর স্কুলে এবং মেয়ে মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছে। ২৮ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন তিনি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি গোয়াইনঘাট থানায় যোগদান করেন।

তার পরিবার জানিয়েছে ময়না তদন্ত শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সোনাইচড়িতে নেওয়া হচ্ছে সুদীপের লাশ।
সুদীপের স্ত্রী ববি বড়–য়া বলেন, আমার স্বামী হত্যা বিচার চাই। ওই ওসির জন্য আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে। তারা সুদীপ হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

সুদীপের মেয়ে শতাব্দি বলেন, ‘থানায় মানসিক চাপে বিপর্যস্ত হয়ে’ বাবা আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শতাব্দি বড়ুয়া। ‘বাবা প্রায়ই ফোন করে বলতেন। সর্বশেষ শনিবারও বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি তখনও বলেছেন, এ থানায় তিনি আর থাকতে চান না।

এসআই সুদীপের স্ত্রী ববি বড়ুয়া বলেন, আমার স্বামী সর্বদাই বলতেন গোয়াইনঘাট থানার ওসি তাহার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। দিনরাত চাপের মধ্যে রাখেন। তিনি খুবই সৎ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা তিনি ওই ওসির দুর্ব্যবহার ব্যবহার সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোয়ানঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল। ওসি বলেন, শতাব্দির অভিযোগ ঠিক নয়। ময়না তদন্তের জন্য লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হবে।

Manual4 Ad Code

এদিকে, এসআই সুদীপের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে সাংবাদিকদের কাছে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, ‘সুদীপের আত্মহত্যার বিষয়ে তার মেয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তার নিজস্ব। তারা যদি আইনি আশ্রয় গ্রহণ করেন, তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

ওসি আব্দুল জলিল থানায় যোগদানের পর তিনি এক নারী কনস্টেবলকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে ওই নারী কনস্টেবল ওসি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে জেলা পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়। সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদকে খুশি করতে গত ১৬ জানুয়ারি বুধবার রাতে তাঁর বাসায় ট্রাক ভর্তি বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পাঠান গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জলিল। সকালে ঘুম থেকে ওঠে এই ট্রাক দেখে ক্ষুব্ধ হন প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ। সাথে সাথেই তিনি খাদ্য সামগ্রী সমেত ট্রাক পাঠিয়ে দেন ওসির কাছে।

এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, আমি কখনই কোনো উপহার গ্রহণ করি না। সে (ওসি) না জেনেই এগুলো পাঠিয়ে ছিলো। ফলে আমি তা ফিরিয়ে দিয়েছি।আগামী তে কেউ যেন আমার কাছে কোনো উপহার না নিয়ে আসে একারণে এগুলো ফিরিয়ে দিয়েছি, যোগ করেন সিলেট-৪ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত এই সাংসদ।এরপর থেকেই বির্তকৃত অবস্তায় গোয়াইনঘাট থানায় আছেন। আর পাথর খেকোদের সেল্টার দিয়ে পর্যটন নগরী গোয়াইনঘাটকে ক্ষতবিক্ষত করছেন। সচেতন গোয়াইনঘাটবাসী এই ওসির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আশু হস্থক্ষেপ কামণা করছেন।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..