সিলেট ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৪, ২০১৮
আবুল হোসেন :: রমজান মাস এখন শেষের দিকে। দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদের ক্ষণ। তাই পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে চলছে কেনাকাটার ধুম। এরইমাঝে পার হলো ২৭ রোজা। নগরীর ফুটপাত থেকে শুরু করে মার্কেট বিপনীবিতানসহ ছোট বড় প্রায় সকল দোকানেই এখন ঈদের বেচাকেনা। তবে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মাঝে যেন বাধার সৃষ্টি হলো বৃষ্টি। এ ৩ দিন বৃষ্টির কারণে অনেকটাই বেকার সময় কাটিয়েছেন ব্যবসাযীরা। তাদের আশা ছিল শেষের দিকে ঈদের কেনাকাটা জমে ওঠবে। কিন্তু সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে ফের বৃষ্টি তাদের সে আশায় গুড়েবালি। নিম্নচাপের প্রভাবে ১১ জুন রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি চলতে থাকায় এবং আরও কয়েকদিন চলার আবহাওয়া পূর্বাভাসে একরকম ক্রেতা খরার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে সিলেট নগরীর বিপানীবিতানগুলোর। সামনের দিনগুলোতেও এমন অবস্থা চলার শঙ্কায় পড়েছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, রোজা শেষে প্রত্যাশা-প্রাপ্তির হিসাবে হতাশাই হয়তো বাড়বে।
গতকাল বুধবার (১৩ জুন) রাত্রে নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আল হামরা শপিং কমপ্লেক্স, হকার্স মার্কেট, সিটি সুপার মার্কেট, মেলেনিয়্যাাম মার্কেট, প্লাজা মার্কেট ও হাসান মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টির কারণে অনেকটাই ক্রেতাশূন্য এসব বিপণিবিতানগুলো। আর ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির কারণে দোকান খোলারই সুযোগ পাননি।
ঈদের বাজারে বৃষ্টির হানা। বৃষ্টি আর যানজটে নগরজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। গত ৩ থেকে ৪ দিন ধরে কখনও হালকা আবার কখনও ভারি বর্ষণে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ঈদ কেনা কাটা করতে বের হওয়া নগরবাসী। গাড়িতে উঠলে যানজট, পায়ে হাটতে গেলে কাদা পানি ও খানাখন্দকেভরা রাস্তায় জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। নানা প্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে বৃষ্টি ও যানজট উপেক্ষা করেই নিজ নিজ লক্ষ্যে যেতে হয়েছে। সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের লম্বা লাইন দেখা গেছে। যানজটের কারণে সময়মত পাওয়া যায়নি গাড়ি। মাঝে মধ্যে দু’য়েকটি পাওয়া গেলেও দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। মাত্র দেড়-দুই কিলোমিটার পথ যেতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে রাস্তায়।
গতকালের বৃষ্টিতে বিশেষ করে নগরীর ফুটপাতের ক্রেতা বিক্রেতারা পড়েন মহা দুর্ভোগে। আর দু’য়েক দিন পরেই ঈদ। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বড় বড় মার্কেট, বিপণিবিতান, ফ্যাশন হাউস ও শপিং মহল গুলোতে তুলনামূলক কিছুটা বেশি ক্রেতার ভিড় থাকলেও ফুটপাত তেমন একটা জমেনি। বৃষ্টির কারণে নগরীর বিভিন্ন ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষ অন্যান্য দিনের তুলনায় কম ছিল। বিকেলের বৃষ্টিতে ফুটপাতের বিকিকিনিও তলানিতে গিয়ে ঠেকছে বলে জানান বিক্রেতারা।
বৃষ্টির কারণে মার্কেটে লোক আসছে, তবে তা গত কয়েকদিনের তুলনায় কম। এসঙ্গে যোগ হয়েছে যানজট। ফলে দিনের বেলায় ক্রেতারা কম আসছেন বলে জানান দোকানিরা। এদিকে বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে আছে ফুটপাতের দোকানগুলো। এমন মৌসুমে বিকিকিনির এ অবস্থায় বিক্রেতাদের মাথায় হাত। অবিরাম বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
হাসান মার্কেটের আরাফাত ফ্যাশনের বিক্রেতা জাহেদ আহমদ বলেন, এইবারের ঈদে বিক্রি এমনিতেই কম, তার উপরে বৃষ্টিতে কাস্টমারের আকাল পড়ছে। তিনি বলেন, রোজার শুরুতেই কয়েকদিন বৃষ্টি ছিল, এরপর আবার প্রচন্ড গরম। এখন আবার বৃষ্টি, এটাও মনে হচ্ছে কয়েকদিন থাকবে। তাহলে বিক্রিটা করব কখন?
এদিকে বৃষ্টির দমকায় কম নাজেহাল ও বিরক্ত নন ক্রেতারা। হাতের টাকা থাকতে ও নির্দিষ্ট সময় কেনাকাটা করতে গিয়ে তারা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
সব মিলিয়ে এবারের ঈদুল ফিতরের কেনাকাটায় বৃষ্টি ভালোই বাগড়া দিচ্ছে। এখন অপেক্ষা সামনের কয়েটি দিনের।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd