সিলেট ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০১৮
ক্রাইম প্রতিবেদক :: গোয়াইনঘাটের ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ এপ্রিল চেয়ারম্যানে দুর্নীতি উল্লেখ করে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সরকার বিভাগ সিলেটের পরিচালক ও উপ-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়েও প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত অর্ধকোটিরও বেশী টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইউনিয়নের হতদরিদ্র লোকজন এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হুমকি দমকি দিয়ে সাসিয়ে বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান, কাউকে পরোয়া করিনা, আমি যা ইচ্ছা তা করবো, তোমাদের কি? আর যদি বেশী বাড়াবাড়ি করো তদের বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দিব”। চেয়ারম্যানের এহেন আচরণের ইউনিয়নের মানুষ ক্ষুব্ধ। আগামী জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার উপর এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। উন্নয়নের রূপকার ডিজিটাল বাংলাদেশের মডেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বরাদ্দ দিলেও ইউনিয়নে কোন কাজ হয়নি। সব টাকায় পকেট ভারী হচ্ছে চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের।
ইউনিয়নবাসীর অভিযোগ, চেয়ারম্যান সালাম সরকারকর্তৃক বরাদ্দকৃত এলজিএসপি, আত্ম-কর্মসংস্থান, টিআর, কাবিটা, কাবিখা, সোলারসহ বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা কাজ না করে আত্মসাত করেছেন। অনেক প্রকল্পে কিছুটা কাজ করিয়ে বাকী টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ইউনিয়নের ফিরোজপুর-সোনারহাট রাস্তার উভয় পার্শ্বে মাটি ভরাটের কাজের জন্য ৯৯জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হলেও বিধ্বংশী এক্সকাভেটর দিয়ে ২/৩ দিন কাজ করিয়েছেন। যা বরাদ্দের তুলনায় মাত্র ১০% কাজ হয়েছে। এছাড়াও পাথর মহাল, বালু মহাল, খেয়া ঘাট, নৌকা ঘাটসহ বিভিন্ন মহালে বিধি মোতাবেক নিলাম না দিয়ে গোপনে তার পছন্দের লোকদের নিলাম দিয়ে দেন। যা ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষও জানেনা। এতে একদিকে সরকার হারাচ্ছে তার বিরাট অংকের রাজস্ব অপরদিকে সাধারণ জনগণ তাদের অধিকার থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। এলাকাবাসী আরো উল্লেখ করেন, চেয়ারম্যানের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারনে সাধারণ মানুষ হতবিম্ব। গরীব, দিনমজুর ও বিদ্যুৎবিহীন পরিবারকে সোলার (সৌরবিদ্যুৎ) না দিয়ে নিজ আত্বীয়দের সোলার প্রদান করেন। যারা এ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নয়। এছাড়াও সরকার বরাদ্দকৃত প্রতিটি কাজে চেয়ারম্যানের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বরাদ্দের অধিকাংশ প্রকল্পই কাজ না করিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন। বয়স্ক ভাতা, জন্মনিয়ন্ত্রণ সংশোধনসহ সরকারের প্রতিটি কাজে যেগুলো জনগণের সেবা বলে উল্লেখ করা হয় সেরকম প্রতিটি কাজ থেকে চেয়ারম্যান চাঁদা আদায় করে আসছেন। টাকার বিনিময়ে কাজ করে, না হলে মাসের পর মাস ফাইল আটকা পড়ে থাকে।
চেয়ারম্যানের এসব দুর্নীতির কারনে হতদরিদ্র মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও পল্লী অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। একদিকে সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে অপরদিকে দুর্নীতিগ্রস্থ চেয়ারম্যানের কারনে সাধারণ মানুষ নৌকার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। তাই চেয়ারম্যানের এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd