সিলেট ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৩১ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০১৮
মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: সিলেটের বিশ্বনাথে ১৫বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণ করে বিয়ে করার অভিযোগে আফরোজ আলী (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দশপাইকা গ্রামের মৃত উস্তার আলীর পুত্র। এঘটনায় কিশোরীর পালক পিতার ভাই, দশাপাইকা গ্রামের মৃত ইসবর আলীর পুত্র হরুফ আলী (৪৮) বাদি হয়ে রোববার বিকেলে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১। মালায় আফরোজ আলী ও থানায় প্রাথমিক অভিযোগকারী একই গ্রামের মদরিছ আলীর পুত্র রফিজ আলী (৬০) কে আসামী করা হয়েছে।
জানা যায়, দশপাইকা গ্রামের মৃত ইন্তাজ আলীর স্ত্রী প্রায় পনের বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ইন্তেকালের ৬দিন পর তাদের মেয়ে আয়শা বেগমকে দত্তক নেন একই গ্রামের মফজুল আলী। প্রায় ৬বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন আয়শার পিতা ইন্তাজ আলীও। দত্তক নেওয়ার পর থেকে মফজুল আলীর মেয়ে পরিচয়ে বড় হতে থাকেন আয়শা বেগম। বর্তমানে তার বয়স ১৫বছর ৬মাস। গত ৮এপ্রিল ধর্মীভাবে একই গ্রামের মৃত উস্তার আলীর পুত্র আফরোজ আলীর সাথে বিয়ে হয় কিশোরী আয়শা বেগমের। বিয়ের পর থেকে আফরোজ আলীর বাড়িতে তার সাথে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছেন আয়শা। কিন্ত তাদের পথে কাটা হয়ে দাঁড়ান একই গ্রামের রফিজ আলী (৬০)। একপর্যায়ে রফিজ আলী নিজেকে আয়শা বেগমের চাচা পরিচয় দিয়ে গত ১জুন আয়শা বেগমকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে আফরোজ আলীর বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর রোববার (৩জুন) অভিযুক্ত আফরোজ আলীকে আটক করে ভিকটিম (আয়শা) সহ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর পুলিশ জানতে পারে ঘটনার মূল রহস্য। এঘটনায় আফরোজ আলী ও থানায় প্রাথমিকভাবে অভিযোগকারী রফিজ আলীকে আসামী করে রোববার বিকেলে মামলা দায়ের করেন আয়শা বেগমের চাচা (পালক পিতার ভাই) হরুফ আলী।
মামলার এজাহারে বাদি হরুফ আলী উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত আফরোজ আলী প্রায় সময় তাদের (বাদির) বাড়িতে আসা যাওয়া করেন করতেন। সেই সুবাদে তার ভাতিজি আয়শা বেগমকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন আফরোজ আলী। আফরোজ আলী একাধিক বিয়ে করায় ও আয়শা বেগম অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় এই বিয়ের প্রস্তাব তারা প্রত্যাখান করেন। একপর্যায়ে রফিজ আলীর কু-পরামর্শে ও সহযোগীতায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ৮এপ্রিল সন্ধ্যায় আয়শা বেগমকে অপহরণ করেন আফরোজ। এরপর থেকে আফরোজ আলী তার বাড়িতে আয়শা বেগমকে আটকে রেখে নিজেকে স্বামী পরিচয় দিয়ে ধর্ষণ করেন।
এদিকে, কিশোরী আয়শা বেগম সাংবাদিকদের জানান, আফরোজ আলী দীর্ঘদিন ধরে তার (আয়শা) পরিবারের ভরণ পোষন করে আসছেন। সেই সুবাদে আফরোজ আলীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে নিজের ইচ্ছাতেই কোর্ট ম্যারিজের মাধ্যমে আফরোজ আলীকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসার ভাল ভাবেই চলে আসছিলো। রফিজ আলী তার কেউ নন দাবি করেন আয়শা বলেন ‘রফিজ আলী আমাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলেন। আমাদের বিয়ের পর আমার স্বামী (আফরোজ) কে ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন। এরপরও তিনি আমার স্বামীর কাছ থেকে আরো টাকা দাবি করেন। কিন্ত আমার স্বামী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রফিজ আলী আমার চাচা সেঁজে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।’
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, এঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আফরোজ আলীকে সোমবার (আজ) আদালতে ও ভিকটিম কিশোরীকে ওসিসিতে প্রেরণ করা হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd