সিলেট ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের মধ্যে ভোলার চর কুকরি-মুকরি একটি। এখানে নেই শহরের মতো কোলাহল, নেই যানবাহনের বিকট শব্দ, শুধু আছে মানুষের ভালোবাসা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এ নয়নাভিরাম নৈসর্গিক সৌন্দর্য ঘিরে এখানে গড়ে উঠতে পারে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র, যা থেকে সরকার আয় করতে পারে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। এর জন্য প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। কেননা এখানে রয়েছে কক্সবাজার, কুয়াকাটার মতো দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত ও গভীর অরণ্য। যা পর্যটক আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ভোলা সদর উপজেলা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর মোহনায় চরফ্যাশন উপজেলায় অবস্থিত এক নয়নাভিরাম চর, যার নাম চর কুকরি মুকরি। চোখ ধাঁধানো সবুজের সমারোহ আর শান্ত নিশ্চুপ প্রকৃতির বুকে নিজেকে বিলীন করে দিতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের অন্যতম সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বৃহৎ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এই দ্বীপে। এখানে দেখতে পাবেন নানা প্রজাতির পশু-পাখি ও সরীসৃপ প্রাণী। শিয়ালের দল, হরিণের পাল, আর বন্য মহিষের বিশাল বাহিনীগুলো নিজ চোখে দেখতে বিশেষ কোন ভাগ্য না নিয়ে গেলেও অনায়াসে চোখের আঙিনায় চলে আসবে এরা। নাম না জানা হাজার রকমের গাছের সাথে সারি সারি নারিকেল গাছ আর বিশাল বালুকাময় চরটি দেখে মনে হবে আপনার অবস্থান কোন এক সৈকত পাড়ে। শীতকালে দেখা মিলবে হাজার হাজার অতিথি পাখির।
পুরো চরটি ঘুরে দেখার মত সুন্দর। বনের ভিতরে ঘুরে বেড়াতে পারেন, দেখা হয়ে যাবে অনেক হরিন, মহিষ আর শিয়াল বা তাদের দলের সাথে। তবে বনে হাঁটার সময় সাবধান থাকবেন বিভিন্ন বিষাক্ত পোকা মাকড় ও সাপ থেকে। সন্ধ্যার আগেই বন থেকে বেড়িয়ে আসুন। আর রাস্তা মনে রেখে বনে ঢুকবেন, নয়তো রাস্তা হারিয়ে ঘুরপাক খাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এই চরের কাছাকাছি ঢাল চর, চর মানিক, সোনার চর, রুপার চরসহ বেশ কিছু চর রয়েছে। চাইলে কুকরি মুকরি থেকে রিসার্ভ ট্রলার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই চর সমূহে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নদী পথে যাতায়াত করা, এতে করে খরচ, সময় ও শারীরিক কষ্ট সবই বেঁচে যাবে আপনার।
ঢাকার সদরঘাট থেকে কর্ণফুলী-৪, প্রিন্স অফ রাসেল-৪, নিউ সাব্বির ২ ও ৩ লঞ্চে ভোলার ঘোষের হাট নামবেন। কেবিন ভাড়া সিঙ্গেল ৯০০-১০০০/-, ডাবল ১৮০০-২২০০/-, ডেকে ২৫০/-৩০০/- টাকা। সেখান থেকে লেগুনা করে চলে যাবেন ৩০ কিলোমিটার দূরে চর কচ্ছপিয়া ঘাট, সময় লাগবে মোটামুটি ৪০-৫০ মিনিট। ভাড়া নিবে ৪০-৫০ টাকা জনপ্রতি। চর কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে লোকাল ট্রলারে করে প্রায় ১০ কিলোমিটার তেতুলিয়া নদী পার হয়ে পৌছে যাবেন চর কুকরি মুকরি বাজারে। ভাড়া নিবে ৫৫ টাকা জনপ্রতি। প্রতিদিন সকাল ৯টা ও দুপুর ১২ টায় চর কুকরি মুকরির জন্য লোকাল ট্রলার ছেড়ে যায়, তাই লোকালে যেতে চাইলে সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। এভাবে যাওয়াই সবচেয়ে উত্তম, এতে অল্প খরচে ও কম ঝামেলায় পৌঁছে যেতে পারবেন।
চাইলে রিসার্ভ ট্রলার নিতে পারেন ৬০০-৮০০ টাকা নিবে যা আপনার ভ্রমণ খরচ বাড়িয়ে দিবে। তারপর পায়ে হেটে ঘুরে বেড়াবেন পুরো চর ও তার আশপাশ। এছাড়াও সদরঘাট থেকে এম ভি ফারহান-২ বা টিপু-৪ লঞ্চে ভোলার চরফ্যাশন নেমে ১০ টাকা অটো ভাড়ায় বাসস্ট্যান্ড গিয়ে সেখান থেকে যেতে পারবেন চর কচ্ছপিয়া ঘাটে। বাসে গেলে ভেঙে ভেঙে যেতে হবে যা অনেকটা ঝামেলাদায়ক ও সময়সাপেক্ষ, তাই একটা লেগুনা রিসার্ভ করে চর কচ্ছপিয়া ঘাটে চলে যেতে পারেন, ভাড়া নিবে ৭০০-৮০০ টাকা।
সবগুলো লঞ্চ ঢাকা থেকে বিকাল ৫-৬ টার মধ্যে ছেড়ে যায় এবং ঘোষের হাট থেকে ৩-৪ টার মধ্যে ছেড়ে আসে। তবে লঞ্চের রুট প্ল্যান প্রায়ই পরিবর্তন হয় তাই আগে ফোন করে কনফার্ম হয়ে নিবেন কোনদিন কোন লঞ্চ যায়।
ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন…
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd