সিলেট পরিবার পরিকল্পনা অফিসের দেলোয়ারকে স্ট্যান্ড রিলিজ

প্রকাশিত: ১০:১৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২২

সিলেট পরিবার পরিকল্পনা অফিসের দেলোয়ারকে স্ট্যান্ড রিলিজ

ডেস্ক রিপোর্ট : উড়ো চিঠি অধিদপ্তরে জমা দিয়ে ঘুষ বাণিজ্য করতেন উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেন। তার ভয়ে আতঙ্কে থাকতেন সিলেট পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সহকর্মী বাশির উদ্দিনের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। দীর্ঘ ৭ মাসে দুই দফা তদন্তের পর অবশেষে তাকে শাস্তিমূলক স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে সিলেট থেকে বদলি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। তার প্রশাসনিক শাস্তিমূলক বদলিতে সিলেটের পরিবার পরিকল্পনা অফিসে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সোমবার ( ৬ জুলাই) সকালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রশাসন ইউনিটের উপ-পরিচালক (পার্সোনাল) আব্দুল লতিফ মোল্লা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে পরিবার পরিকল্পনা সিলেট জেলা অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেনকে এ শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। উক্ত আদেশপত্রে তাকে আগামী ১৩ জুলাই সিলেট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিবার পরিকল্পনা অফিসে নতুন কর্মস্থলে যোগদানেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরিবার পরিকল্পনা সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. কুতুব উদ্দিন বলেন,‘ দেলোয়ারের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি দুইবার সিলেটে এসে তদন্ত করেছেন। অধিদপ্তর থেকে পাঠানো একটি অফিস আদেশ আমরা পেয়েছি। যেটাতে দেলোয়ারকে বদলিও স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। অধিদপ্তর যে আদেশ দিয়েছেন, সে অনুযায়ীই আমরা ব্যবস্থা নিব।’

এ বিষয়ে জানতে সিলেট পরিবার পরিকল্পনা জেলা অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উচ্চমান সহকারী দেলোয়ারের বিরুদ্ধে সহকর্মী বাশির উদ্দিন দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবির াভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা কুমিল্লার উপ পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম। তিনি সিলেটে দুই দফা এসে ঘটনার সরেজিমন অনুসন্ধান করেন। তারপর গত এপ্রিল মাসে তিনি ঘটনার সত্যতা পেয়ে দোলোয়ারের বিরুদ্ধে মাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সে অনুযায়ী শৃঙ্খলা থেকে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। আপাতত তাকে সিলেট থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। তিন মাস পর শৃঙ্খলা ইউনিট থেকে দ্বিতীয় দফায় তাকে আরও বড় ধরনের শাস্তি প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে।

গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান পরিবার পরিকল্পনা কুমিল্লার উপ পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন,‘ আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই বার আমি সিলেটে গিয়ে তদন্ত করেছি। সত্য যেটা পেয়েছি, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (পার্সোনাল) আবদুল লতিফ মোল্লা বলেন,‘ তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে (দোলোয়ার) বদলি ও স্ট্যান্ড রিলিজের অফিস আদেশ পাঠানো হয়েছে।’

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের শৃঙ্খলা ইউনিটের সহকারী পরিচালক (পার-২) হাসান আমীন সুমন বলেন,‘ শৃঙ্খলা ইউনিট থেকে এটা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় তদন্ত কমিটিকে। কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে দুই রকমের শাস্তির নির্দেশনা নেওয়া হয়েছে। প্রথমে তাকে বদলি ও স্ট্যান্ড রিলিজ করা হলো। ধাপে ধাপে অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী বাকি শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, সিলেটের পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বেতন পান মাত্র ২২ হাজার টাকা। কিন্তু সিলেট নগরীতে জমি কিনে বানিয়েছেন ডুপ্লেক্স বাড়ি, কিনেছেন নামে-বেনামে জমি। আর এ সবই করেছেন উড়ো চিঠির ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে। অফিসের সহকর্মী বাশির উদ্দিনের কাছে উপরের স্যারের নামে চেয়েছিলেন দুই লাখ টাকা। দেলোয়ারের ঘুষ দাবির এই অডিওটি ফাঁস হয়ে যায়। তদন্ত শেষে অধিদপ্তর এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..