সিলেট ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৫ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৪২ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২২
কানাইঘাট প্রতিনিধি :: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় বন্যার পানি ধীর গতিতে কমার কারনে বানভাসি মানুষ সীমাহীন কষ্টের মধ্যে বসবাস করছেন। এখনও বন্যার পানিতে গোটা উপজেলার ৮০ ভাগ এলাকা তলিয়ে আছে। হাজার হাজার বসত বাড়িতে বন্যার পানি বিরাজ করছে। শত শত বসত ঘরেও কোমর পানি থেকে হাটু পানি বিরাজ করায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। পানি কমার সাথে সাথে ভেঙে পড়ছে শত শত কাঁচা বাড়ি-ঘর। বেশিরভাগ গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন।
অপরদিকে উপজেলার ৪নং সাতবাঁক ও দিঘীরপাড় ইউনিয়নে কুশিয়ারার ঢলের পানি প্রবেশ করায় এ দু’টি ইউনিয়নের শত শত বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকেছে। সমস্ত রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। অনেক আশ্রয়কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করেছে। হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন থাকার কারনে অভাব অনটন দেখা দিয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকায় অনেকে ত্রাণের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। আবার কোন কোন দুর্গম এলাকায় সঠিক ভাবে ত্রাণ পাচ্ছেন না শত শত বন্যা দুর্গত মানুষ। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি জানিয়েছেন বন্যা দুর্গত প্রতিটি ঘরে ঘরে সরকারি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাই সরকারি ত্রাণ সামগ্রী পাবেন। এখন পর্যন্ত গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কের নিচু এলাকা দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সাথে সাথে বন্যা দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে রোগ-বালাই। ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ায় দুর্গন্ধও দেখা দিয়েছে।
কানাইঘাট-চতুল-দরবস্ত সড়ক থেকে বন্যার পানি নেমে পড়ায় সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত বড় বড় গর্ত ও ভাঙন কবলিত জায়গা জরুরী ভিত্তিতে যান চলাচল সচল করতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সড়ক ও জনপথ সিলেটের উদ্যোগে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। বড় বড় ভাঙন কবলিত জায়গায় গতকাল শুক্রবার দিনভর সেনা সদস্য ও সড়ক ও জনপথের নিজস্ব শ্রমিকরা বড় বড় গর্তে বালুর বস্তা, ইট ও বালু ফেলে যান চলাচলের উপযোগী করতে দেখা গেছে।
কাজের দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথে সিলেটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ শাহাদাত হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বন্যায় সড়ক ও জনপথের বিভিন্ন সড়কের প্রায় ২’শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানির শ্রোতে সড়ক ও জনপথের যেসব সড়কে ভাঙন বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তা জরুরী ভিত্তিতে মেরামত ও সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কানাইঘাট-দরবস্ত সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আমরা সড়কের ভাঙন কবলিত স্থানে বালুর বস্তা, ইট-বালু ফেলা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে আমাদেরকে সর্বাত্মক ভাবে সহযোগিতা করছেন সেনা সদস্যরা। আগামী শুকনো মৌসুমে যাতে করে বন্যার পানিতে সড়ক ও জনপথের নিজস্ব সড়কগুলো ক্ষয়ক্ষতি না হয় এজন্য সেইভাবে কাজ করা হবে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd