সিলেট ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২১
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে বন্ধু কর্তৃক ফিরোজ মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে প্রাণহননের চেষ্টায় বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি রাতের আধাঁরে উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের ইদুকোণা গ্রামে ভারতীয় সীমানার ওপারে নির্জন টিলায় ডেকে নিয়ে দুই বন্ধু মিলে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য মারধর করতে থাকলে স্থানীয় গ্রামের এক বাসিন্দা চিলাই নদীর ওপার থেকে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় দোয়ারাবাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইদুকোণা গ্রামের মৃত ফরিদ মিয়ার পুত্র ফিরোজ মিয়া ও একই গ্রামের মুকতইল হোসেন সরকারের পুত্র বিল্লাল হোসেন একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ফিরোজ মিয়া ইদুকোণা গ্রাম পয়েন্টে মোবাইল মেকানিকের কাজ করেন। সম্প্রতি ফিরোজ মিয়া এনজিও সংস্থা থেকে তার নামে জামিন হয়ে তার বন্ধু বিল্লাল হোসেনকে মোটা অংকের ঋণ তুলে দেন। ওইদিন তার কাছে ৪৫ হাজার টাকা ছিল। টাকার লোভে ফিরোজ মিয়াকে ডেকে নিয়ে নির্জন টিলায় নিয়ে প্রাণে মারার উদ্দেশ্য কালো চার্জ লাইট দিয়ে ব্যাপক মারধর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে আড্ডা দেয়ার কথা বলে বিল্লাল ও তার নিকটাত্মীয় আলমগীর হোসেন তাকে ডেকে নিয়ে ভারতীয় সীমানার গাজির টিলায় ডেকে নেয়। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে তার মুখবেঁধে হত্যার উদ্দেশ্য চার্জ লাইট দিয়ে বেধড়ক শরীরের বিভিন্ন স্থানে ও মাথায় আঘাত করতে থাকে। নির্জনটিলায় সুর চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী চিলাই নদীর ওপার থেকে এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের কবল থেকে উদ্ধার করেন। এসময় বিল্লাল হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় ফিরোজ তার স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করায় তাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চান। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন গ্রামবাসী।
ইদুকোণা গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, রাতের আধাঁরে ফিরোজ মিয়ার মুখবেঁধে বিল্লাল হোসেন ও তার নিকটাত্মীয় আলমগীর মিলে প্রাণে মারার চেষ্টা করে। এসময় আমি সুরচিৎকার শুনে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত জখমী ও অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করি।
অভিযোগকারী আহতের মামা হযরত আলী বলেন, টাকার লোভে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ফিরোজকে আড্ডা দেয়ার কথা বলে নির্জনটিলায় ডেকে নিয়ে মুখবেঁধে তাকে মারধর করে।এসময় তার কাছে থাকা তিনটি স্মার্টফোন ও নগদ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
গ্রামবাসী জানান, ফিরোজ মিয়া খুবই নিরীহ এক যুবক। টাকা চাওয়ায় তাকে কোন কিছু না জানিয়ে বিল্লাল হোসেন ডেকে নিয়ে রাতের অন্ধকারে মারপিট করে গুরুতর আহত করে।
জানতে চাইলে বিল্লাল হোসেন বলেছেন, তিনি বিদেশে থাকাকালে বন্ধুত্বের সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে ফিরুজ মিয়া। ওইদিন রাতে তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে আমি তার জামাকাপড় টেনে ধরার সময় চার্জ লাইটের আঘাতে তার মাথা ফেটে যায়। এর পর আমার বড় ভাই তাকে সিলেট ওসমানি মেডিকেলে নিয়ে সম্পুর্ন চিকিৎসা করান। তবে বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী বলেছেন, আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক ছিলনা। আমার স্বামী তাকে মারধর করার পর বাড়িতে এসে আমার বুকে ছুরি ধরে তার সাথে সম্পর্ক আছে বলে স্বীকার করতে বলেন, এবং আমার কথা জোরপূর্বক তার মোবাইলে রেকর্ড করেন।
এরপর থেকে প্রাণের নিরাপত্তার জন্য আমি বাবার বাড়িতে এখন অবস্থান করছি। বর্তমানে আমার স্বামী ও পরিবারের লোকজন আমি ও আমার বাবাকে ঘরের ভেতর তালাবদ্ধ করে মারপিট করার হুমকি দিচ্ছেন।
এ দিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ বিষয়টি সরজমিন তদন্ত করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই সুপ্রাংশু দে দিলু জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd