সিলেট অগ্রগামীর ফটকে হকারদের দৌরাত্ম্য : ইভটিজিং-এর শিকার ছাত্রীরা

প্রকাশিত: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২০

সিলেট অগ্রগামীর ফটকে হকারদের দৌরাত্ম্য : ইভটিজিং-এর শিকার ছাত্রীরা

Manual7 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ‘সুন্দর পুড়ি, বিয়া করতাম জানে কর, প্রমিত বাংলায় এর অর্থ দাঁড়ায় ‘সুন্দর মেয়ে, বিয়ে করতে মন চাচ্ছে’। ছাত্রীর উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দেয়া এই অশ্লীল বাক্য একজন হকারের। ঘটনাস্থল সিলেটের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান ফটক।

Manual3 Ad Code

২৬ ডিসেম্বর ছিলো সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (৩য় ও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে) ভর্তিচ্ছু ছাত্রীদের ভর্তি পরীক্ষা। সকাল ১০টার এই পরীক্ষায় অংশ নিতে সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সহস্রাধিক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে জড়ো হন স্কুল গেটে। একজন ব্যাংকার বাবা মোটরসাইকেলযোগে মেয়েকে নিয়ে স্কুল গেটে হাজির হন। ভীড়ের জন্য মোটরসাইকেলটি পার্কিং করার জায়গা পাচ্ছেন না তিনি। স্কুল গেটের ডান পাশে ভ্যানে করে বাদাম-বুট বিক্রি করা হকারটিকে সরে দাঁড়াতে বললেন। হকারটি সরে না গিয়ে উল্টো তাকে মোটর সাইকেল বাসায় রেখে আসার জন্য বলে। এসময় দু’জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ব্যাংকার বাবা তার কন্যাকে নামিয়ে রাস্তার অপর পাশে মোটরসাইকেলটি পার্ক করে আসেন। মেয়েকে নিয়ে স্কুলের প্রধান ফটকের দিকে এগুতেই পেছন থেকে হকারটি বলে উঠে ‘সুন্দর পুড়ি, বিয়া করতাম জানে কর।

Manual7 Ad Code

অপমানিত বিক্ষুব্ধ ওই বাবা পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, মেয়েদের স্কুলগুলোর সামনে থেকে স্থায়ীভাবে হকার উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। স্কুল চলাকালে প্রতিদিন স্কুল গেটে কোনো না কোনো ছাত্রী ইভটিজিং-এর শিকার হচ্ছে। অধিকাংশ ছাত্রী, বাবা-মা কিংবা শিক্ষকদের কাছে তা প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করে। জটিলতা এড়াতে অনেকেই এই বিষয়ে কথা বাড়াতে চান না। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে হকার উচ্ছেদে ভূমিকা রাখতে পারে। যতিদিন না হকার উচ্ছেদ হচ্ছে ততদিন স্কুলে ঢুকতে আর বেরুতে আমাদের সন্তানরা ইভটিজিং-এর শিকার হতেই থাকবে বলেও মন্তব্য করেন এই বাবা।

Manual3 Ad Code

বিষয়টি নিয়ে সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রিন্সিপাল বাবলী পুরকায়স্তের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, স্কুলের ভেতরে কিছু হলে আমি দেখতাম। গেটের বাইরের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। স্কুলের আশ-পাশের এলাকাকে হকার মুক্ত করতে আমি বহু চেষ্টা করেছি, বহু জায়গায় বলেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বরং উল্টো আমি নাজেহাল হয়েছি। বাবলী বলেন, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন না কারা স্কুলের সামনে হকার বসায়, কারা এদের নিয়ন্ত্রণ করে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রিন্সিপাল বলেন, ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি আমার নয়, জেলা প্রশাসনের, ডিসি স্যার স্কুলের সভাপতি। উনারা স্কুল এলাকাটিকে হকার মুক্ত করার চেষ্টা করছেন। তাছাড়া স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রধান ফটকে হকার থাকে না বলেই দাবি করলেন প্রিন্সিপাল বাবলী পুরকায়স্ত।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র (প্যানেল মেয়র-১), ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বকস লিপন বলেন, হকার উচ্ছেদে সিসিক নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। ছাত্রীদের ইভটিজিংয়ের বিষয়ে অবগত করলে লিপন বলেন, আমি খোঁজ নিচ্ছি, প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..