সিলেট ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের ‘জি কে শামীম’খ্যাত জামাল আহমদ চৌধুরী কারাগারে থাকলেও তার বিরুদ্ধে করা মামলার বাদীরা রয়েছেন আতঙ্কে। পাওনা টাকা পরিশোধ না করেই ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা থেকে রেহাই পেতে আপসের জন্য জোরাজুরি করছেন জেলের বাইরে থাকা তার অনুসারীরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদেরও দলে ভিড়িয়েছেন ‘টাকার কুমির’খ্যাত জামাল চৌধুরী।
জানা যায়, জামাল চৌধুরী বিভিন্ন অফিস থেকে টেন্ডার বাগিয়ে নিয়ে যেসব সাব-কন্ট্রাকটরের কাছে বিক্রি করেছিলেন, প্রতারণার শিকার হয়ে তাদের এখন প্রায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে। কাজ শেষ হলেও টেন্ডারের টাকা জামাল চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। দীর্ঘদিন টাকা না পেয়ে ৭ জন সাব-কন্ট্রাকটর জামাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত বুধবার তাকে জেলে পাঠান আদালত। এরই জেরে রোববার রাতে নগরীর আম্বরখানায় গোল্ডেন টাওয়ারের নিচতলায় সাব-কন্ট্রাকটরদের প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে ডেকে আনা হয়। সেখানে জামাল চৌধুরীর স্বজন ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম খান ওরফে এনআই খান, বিএনপি নেতা এমদাদ হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ভয় দেখিয়ে মামলার বাদী দুই সাব-কন্ট্রাকটরের কাছ থেকে ‘আপসনামায়’ স্বাক্ষর নেয়া হয়। সাব-কন্ট্রাকটর ফরিদ আহমদ জানান, প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা এনআই খান যুগান্তরকে বলেন, আগেও এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের সিদ্ধান্ত মানেননি। রোববার শুধু সাক্ষী হিসেবে ছিলাম। কাউকে ভয় দেখানো হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে আপস করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার জামাল চৌধুরীর রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবুল ফজল চৌধুরী জানান, আসামিপক্ষ মামলার বাদী বাবলু মিয়ার স্বাক্ষরসহ আপসনামা দাখিল করলেও বাদী উপস্থিত না হওয়ায় আদালত তা গ্রহণ করেননি। এছাড়া এয়ারপোর্ট থানার অপর এক প্রতারণা মামলায় জামালকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি এসএম শাহাদাত হোসেন।
জামাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে অন্তত ৭টি প্রতারণার মামলা করেন সব-কন্ট্রাকটররা। এর মধ্যে দুই মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। গত বুধবার সিলেট মহানগর আদালতে হাজির হলে বিচারক জামালকে জেলে পাঠান। পরদিন জামাল চৌধুরীর সব অপকর্ম নিয়ে ‘সিলেটের জি কে শামীমের’ উত্থানের কাহিনী’ অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেই প্রকৌশলীকে তাৎক্ষণিক বদলি, অনিয়মের তদন্ত হচ্ছে : এদিকে অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ৭ ডিসেম্বর ‘গণপূর্ত বিভাগ সুনামগঞ্জ: কোটি কোটি টাকার কাজে অনিয়মের ছড়াছড়ি’ শিরোনামে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এর ১২ দিন পর গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেন এক আদেশে গণপূর্ত বিভাগ সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবিল আয়ামকে নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করে নীলফামারীতে যোগদান না করলে ৩০ ডিসেম্বর ‘তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত’ হয়েছেন মর্মে গণ্য হবেন।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগ সিলেট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নুরুল আমিন মিয়া বলেন, আমাদের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী না থাকায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে না। উনি এলে আশা করি আগামী সপ্তাহে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd