ছাতকে ইউপি চেয়ারম্যান মছবিরের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯

ছাতকে ইউপি চেয়ারম্যান মছবিরের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ

ছাতক প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের ছাতকে দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মছবিরের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে নামে-বেনামে বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করেই প্রায় ১০ লাখ টাকা লুটপাটের ঘটনায় জেলা প্রশাসক.দুনীতি দমন কমিশন ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার নিকট লিখিত ভাবে সামছুল ইসলাম.শফিক মিয়া.মজম্মিল আলীসহ ৮জন ব্যক্তি বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেছে।

জানা গেছে, চেয়ারম্যান আব্দুল মছবির ক্ষমতা গ্রহণের পর মেম্বারদের নিয়ে কোন সমন্বয় সভা না করে জনস্বাথে উন্নয়ন না করে ব্যক্তিস্বাথে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়। ১৩-১৪অর্থ বছরে উপজেলা বাষির্ক উন্নয়ন সহায়তা কমসুচি (এডিপি) অধীনে মযাদ আব্দুল সালামের বাড়ির সীমানা থেকে জাতুয়া পালপুর.ভুইগাও গ্রামের ওয়ারিছ আলী বাড়ির রাস্তা পাকা করন ও ভুইগাও গ্রামে কদর আলীর বাড়ির সামনে নলকুপ স্থাপন নামে ৪লক্ষ টাকা কাজ না করেই দুনীতিবাজ প্রকৌশলীর মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যান প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেন।

১৪-১৫ অর্থ বছরে এলজিএসপি ২ প্রকল্পের ইউপি সদস্য বাবার নামে তার বাড়িতে রাস্তা পাকাকরন.কাবিটা প্রকল্পে মযাদ মসজিদ থেকে নিমল সুত্র ধরে বাড়ি পযর্ন্ত রাস্তার মাটি ভরাট নামে দেড় লক্ষ টাকা উত্তোলন এ নামে প্রকল্প দেয়া হচ্ছে এ নামেই গ্রামের কোনো ধরনের রাস্তা নেই বলে গ্রামবাসি অভিযোগ করেছেন। এ দুটি প্রকল্পে কাজ না করে টাকা উত্তোলন করে নেন তিনি।

১৫-১৬ অর্থ বছরে হরিশ্বরন গ্রামে রাশিদ আলীর বাড়ির রাস্তা পাকাকরন এক লক্ষ টাকা.মহববতপুর গ্রামে আব্দুল হাশিস আলীর পুত্র আজিজের বাড়িতে নলকুল স্থাপন নামে খাতা কলমে বাস্তবায়ন দেখিয়ে ৫০হাজার টাকা এবং এই নামে গ্রামে কোনো ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় সন্ধান করে মিলেনি। একই প্রকল্পের তালিকায় ইউপির পরিষদের নামে একটি লেপটব প্রিন্টার ফটোকপির মেশিন ষ্টিলের আলমিরা সহ নানা উপকরন ত্রæয়ে নামে একলক্ষ টাকা উত্তোলন করলে ও ফটোকপি মেশিন নেই।১৬-১৭অর্থ বছরে চেয়ারম্যান তার আপন বড় ভাই মুশাহিদ আলীর নামে সৌরবিদুৎ প্রকল্পে ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্ধ করে এবং ১৭-১৮অর্থ বছরে তার ১৩ বছর বয়সে পুত্র জাকারিয়া নামে সৌরবিদুৎ প্রকল্পের ১লক্ষ ২০হাজার টাকা উত্তোলন তার নিজ বাড়িতে সৌরবিদুৎ স্থাপন করা হয়েছে। ১৭-১৮অর্থ বছরে তার আপন বড় মোশাহিদ আলীর নামে নলকুপ স্থাপন না করে ৫০হাজার টাকা উত্তোলন করে লুটপাট করেছে। ১৮ ১৯ এলজি এসপি ৩ প্রকল্পের কুম্বায়ন গ্রামের আইয়ুব আলী নামে ব্যক্তির বাড়ি সামনে খালের উপর দুই বছর আগে নিমিত ব্রীজ চলমান প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভক্ত করে ৩লক্ষ ৯০হাজার টাকা উত্তোলন করে নেন দুনীতিবাজ চেয়ারম্যান আব্দুল মছবির। পরিষদ একাউন্টে টাকা জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত ভাবে ইউনিয়ন পরিষদে পুরাতন ভবন ৩কক্ষ ভাড়া দিয়ে দুই বছরে একলক্ষ ৮৫হাজার টাকা তার পকেটে নিয়েছেন।এছাড়া ও সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে এনআইডি কার্ড জাল জালিয়াতি করে ৫৩ বছর বয়সে ৬৫ বছর দেখিয়ে তার আপনভাইকে বয়স্কভাতা দেয়া হচ্ছে এবং ২০০১ সালে ২৭ মে জন্ম তারিখ টাকার বিনিময় জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি ১৫জুলাই ১৯৮৪ সাল উল্লেখ্য করেছেন হাতলানি গ্রামে টুনু মিয়াকে জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি করে বয়স বাড়িয়ে দেয়া হয়।এভাবে জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সচিবের মাধ্যমে চেয়ারম্যান। ইউপির বিভিন্ন গ্রামে জনবহুল রাস্তায় সরকারি বরাদ্ধ না দিয়ে ব্যক্তি নামে প্রকল্প তৈরি করে গ্রামে কোন্দল সৃষ্টি করে আসছে। ১৮ ১৯ অর্থ বছরে মজাদ গ্রামের এলজিএসপি প্রকল্পে একটি প্রকল্প জনস্বাথে না করে ব্যক্তিস্বাথে করার এ ঘটনায় জনগনের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়ার কারনে এলজিএসপি প্রকল্পটি রাতারাতি চেয়ারম্যান বাতিল করতে বাধ্য হন। ১৯অর্থ বছরে এলজিএসপি ৩ এর পিবিজি/বিবিজি প্রকল্পে মযাদ গ্রামে খলিল মিয়ার বাড়ির সামন হতে নিরঞ্জন এ বাড়ি পযন্ত পাকাকরন নামে ২লক্ষ ২৩হাজার ৮শ’২৪টাকা উত্তোলন প্রচেষ্টা চলছে।এভাবে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট জনগন এসব ভুয়া প্রকল্পের নামে বেনামে একাধিক অভিযোগ জেলা প্রশাসক দুনীতি দমন কমিশন ও ইউএন ও সহ বিভিন্ন দফতরে দায়ের করেন। তার অনিয়ম দুনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ইউপি সদস্য জয়ন্তী রানীকে শারিরিকভাবে চেয়াম্যানের হাতে লাঞ্জিতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সুবিচার দীর্ঘদিন ধরে পায়নি বলে অভিযোগ করেন সদস্যা ।

মেম্বাররা বিভিন্ন সময়ে সরকারি উন্নয়ন বরাদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে তার নিকট জানতে চাইলে তিনি তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন ও মারমূখী হয়ে উঠে প্রতিনিয়তভাবে। মেম্বারদের কোন মতামত না নিয়ে তিনি একাই সব কাজ করে স্বেচ্ছাচারিতা করে সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার হাতিয়ে নিচ্ছেন। সরকারী নিয়মনীতির প্রতি তোয়াক্কা না করে প্রজেক্ট কমিটি গঠন না করে এককভাবে সব কাজ করে থাকে। টি,আর, কাবিখা, কাবিটা সহ বিভিন্ন সরকারী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কোন হিসাব নেই। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা সহ সরকারী অনুদান প্রদানে তিনি কোন নিয়মনীতি মানছেন না। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তিকে অসুস্থ দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা উঠানোর সুপারিশ অর্থের বিনিময়ে জাল জন্মনিবন্ধন সনদ সহ বিভিন্ন ভূয়া সনদপত্র প্রদান, এলজিএসপির ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে এডিবি প্রকল্পের টাকা আতœসাৎ, ইউনিয়ন পরিষদের ট্র্যাক্সের টাকা এবং সরকারীভাবে রেজিষ্ট্রি অফিসের টাকা আতœসাৎ, ওয়ার্ডের এলজিএসপির পুরাতন সলিং এর কাজকে নতুন দেখিয়ে এই প্রকল্পের অর্থ আতœসাতের অভিযোগ রয়েছে। দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নে টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ইজিপিপি প্রকল্পের টাকা নামে মাত্র কাজ করে সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যা সরেজমিনে তদন্ত করলে প্রমাণ মিলবে বলে ইউনিয়নবাসি দাবি জানান।

হরিম্বরন গ্রামে রশিদ আলীর পুত্র সাইদ আহমদ জানান,তার বাড়ির সামনে রাস্তা কোনো মাটি ভরাট পাকাকরনে কোন কাজ হয়নি । জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতির ঘটনার ব্যাপারে ইউপি সচিব দীপক রঞ্জন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার আগে সচিবের এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটে বলে সত্যতা স্বীকার করে বলেন ইউপি পরিষদের পুরাতন ভবনে তিন রুমভাড়ার টাকা ইউপির ফান্ডে জমা হচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কাজি ইসলাম উদ্দিন জানান,চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমি এ ভবন একটি রুম ভাড়া নিয়ে প্রতিমাসে তার কাছে ভাড়া পরিশোধ করে আসছি। ৪বছর ধরেই মেম্বাররা মাসিক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন বলে কৃপেশ চন্দ্র দাশ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করছেন।এব্যাপারে শফিক মিয়া.শিক্ষক মাওলানা সামছুল ইসলাম ও মজম্মিল আলী সহ একাধিক ব্যক্তিরা তার নামে বেনামে ভুয়া প্রকল্পের প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদকারীদের নামে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছেন।

ইউপি সদস্যরা জানান, এলজিএসপির বরাদ্দের টাকায় কোনো কাজ করা হয় না। চেয়ারম্যান আগের কাজের প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। আবার কোনো সদস্য এসব নিয়ে কথা বললে প্রকল্প দেয়া হবে না বলে হুমকিও দেয়া হয়। এলজিএসপির প্রকল্পগুলো নিয়ে সরেজমিন তদন্ত করলেই ধরা পড়বে দুর্নীতি। তারাও ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করতে পারেন না।দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নে নব্য আ’লীগ নেতা ও সরকারদলীয় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলজিএসপির প্রকল্পের বরাদ্ধকৃত টাকা কাজ না করে উত্তোলন করে লুটপাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে ইউ,পি চেয়ারম্যান আব্দুল মছবির’এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার পুত্র নামে সৌরবিদুৎ প্রকল্প ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তার আপন ভাই নামে বয়স্কভাতা প্রদান ও এনআইডি কাড জালিয়াতির ঘটনার জন্য তিনি সচিবকে দায়ি করছেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..