হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেন ঝাড়ুদার!

প্রকাশিত: ১:২৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেন ঝাড়ুদার!

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালকে দালালমুক্ত রাখতে সচেতনতামূলক ব্যানার লাগিয়েছে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এতে লেখা হয়েছে- ‘হাসপাতালে দালালমুক্ত পরিবেশে চিকিৎসা দিন, দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হবেন না। দালাল সম্পর্কে তথ্য দিন পুলিশের সহযোগিতা নিন।’

অনিয়ম, দূর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা যে পিছুঁ ছাড়ছে না হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের। এমপি-মন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কড়াকড়ি নির্দেশও যেন গায়েই লাগছে না হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি এবার অভিযোগ উঠেছে পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে চিকিৎসা প্রদানে। যদিও এই কর্মকান্ড অনেক পুরনো বলে দাবি করেছেন অনেক রোগীরা। আবার বিষয়টি শিকারও করেছেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ।

অনেক রোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সেখানে ইমার্জেন্সি বিভাগে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা রোগীদের সেঁলাই, ব্যন্ডেজ থেকে সব ধরণের কাজই করছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কিশোর লাল ও আবুল হোসেন। এমনকি গার্ডের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ও অফিস সহকারীরাও বিভিন্ন সময় প্রাথমিক চিকিৎসা করে থাকেন।  আবার একই সূঁই দিয়ে একাধিক রোগীকে সেলাই করার অভিযোগও রয়েছে। এতে করে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকিও। অবশ্য সব অভিযোগের বিষয়টি স্বীকারও করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তাদের দাবি- হাসপাতালে স্টাফ সংকট ও পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম বরাদ্দ না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ রোগীরা না জেনেই গার্ড ও ঝাড়ুদার দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন রোগীরা।

এ ব্যাপারে চিকিৎসা নিতে আসা বানিয়াচং উপজেলার আড়িয়ামুকুর গ্রামের রাজন দাস বলেন- ‘আমরাতো আর চিনি না যে কে ডাক্তার আর কে ঝাড়–দার। যার কারণে আমরা তাদের কাছ থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি।’

সদর উপজেলার পইল গ্রামের আবুল কালাম বলেন- ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন পরিচয়পত্র না থাকার কারণে কে পরিচ্ছন্নতা কর্মী আরকে চিকিৎসক তা বুঝতে পারি না। আবার অনেক সময় বুঝতে পারলে আমরা প্রতিবাদ করি। কিন্তু এতেও কোন কর্ণপাত কওে না কর্তৃপক্ষ।’

তিনি বলেন- একই সূই দিয়ে একাধিক রোগীকে সেঁলাই দেয়া হয়। যা খুবই ঝুঁকিপুর্ণ। অথচ এভাবেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে দিনের পর দিন সাধারণ রোগীরা হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।’

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্বাবধায়ক রতিন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন- ‘ইমার্জেন্সি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও ব্রাদার্স আছেন। সুতরাং ঝাড়–দার দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কথা না।’ এছাড়া একই সূই দিয়ে সেলাই করলে কোন সমস্যা হয়না বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন- ‘একজন রোগীকে সেঁলাই দেয়ার পর যদি সেটি ভালোভাবে পরিস্কার করা হয় তাহলে কোন সমস্যা হয় না।’

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..