ভাবছিলাম আমি মারা গেলে আমার ছেলের কী হবে: নার্স শংকরী মিত্রী

প্রকাশিত: ৮:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯

ভাবছিলাম আমি মারা গেলে আমার ছেলের কী হবে: নার্স শংকরী মিত্রী

Manual7 Ad Code

ডেঙ্গু থেকে সদ্য সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যাওয়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভের নার্স শংকরী মিত্রীর কথা।

Manual6 Ad Code

শংকরী মিত্রী ২০১৫ সালে বদলি হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্স হিসাবে যোগদান করেন।১৫ আগস্ট প্রতিদিনের ন্যায় ডিউটি করা অন্তঃসত্ত্বা শংকরী মিত্রী হঠাৎ শরীরে জ্বর জ্বর অনুভব করে।সেদিন ডিউটি শেষে বাসায় গিয়ে জ্বর আরও বাড়তে থাকে।

১৬ আগস্ট ডেঙ্গু টেস্ট পজেটিভ হলে ওইদিন শুক্রবার নিজ কর্মস্থল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তার শরীরের প্লাটিলেট কমে গেলে ডাক্তার আইসিইউতে ভর্তির নির্দেশ দেন।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের আইসিইউ খালি না থাকায় ওইদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।পরদিন শনিবার আইসিইউ খালি হলে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় অন্তঃসত্ত্বা শংকরী মিত্রী।

Manual4 Ad Code

অন্তঃসত্ত্বা থাকায় তাকে নিয়ে ডাক্তারদের বোর্ড বসে শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। রক্তে প্লাটিলেট বাড়লে ২২ আগস্ট আইসিইউ থেকে পোস্ট অপারেটিভে নেওয়া হয়।সেখানে তার শরীরের অবস্থা ভাল হলে ২৬ আগস্ট তাকে সিজার করা হয়। সিজারে তার একটা পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে।

২৯ আগস্ট সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় যান শংকরী মিত্রী।

Manual1 Ad Code

কথা হয় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত অবস্থায় পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়া শংকরী মিত্রীর সঙ্গে তিনি বলেন,আমার যখন ডেঙ্গু ধরা পড়ে আমি অনেক ভয় পেয়েছিলাম।আরও ভয় পেয়েছিলাম যখন আমাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হলো।আমি আমার পেটের বাচ্চাকে নিয়ে চিন্তা করছিলাম না কিন্তু আমার ৩ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করছিলাম।ভাবছিলাম আমি মরে গেলে আমার ছেলের কী হবে এই ভেবে আমার দু চোখ বেয়ে অঝরে চোখের পানি পড়ছিল।আমি কখনও ভাবতে পারিনি আমি সুস্থ হয়ে আমার দুই সন্তানের মুখ দেখতে পারব।এখন আমি ও আমার সন্তান ভাল আছি।আমাদের ডাক্তার নার্স সবাই আমার চিকিৎসায় যে সহযোগিতা করেছে তাদের ঋণ আমি শোধ করতে পারব না।

Manual1 Ad Code

পোস্ট অপারেটিভের সিনিয়র স্টাফ নার্স শামসুন নাহার বলেন,আমরা আমাদের সহকর্মী শংকরীকে নিয়ে সবাই অনেক চিন্তায় ছিলাম।তার প্লাটিলেট ১৮ হাজারে নেমে এসেছিল।বেশি ভয়ের কারণ হলো সে অন্তঃসত্ত্বা ছিল।যাই হোক আমাদের ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টা ও আল্লাহর অশেষ রহমতে মা-ছেলে সুস্থ হয়ে বাসায় চলে গেছে।

জানতে চাইলে ইউনিট-২ এর ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. মিতু বলেন,শংকরী মিত্রীর অবস্থা অনেক খারাপ ছিল।সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় চিন্তার কারণটা বেশি ছিল।ডেঙ্গুতে তার প্লাটিলেট ১৮ হাজারে নেমে যায়। আইসিইউতে তাকে রক্ত দিয়ে প্লাটিলেট আস্তে আস্তে বাড়িয়ে যখন তার প্লাটিলেট ১ লক্ষ ১৮ হাজার তখনই ডাক্তাররা তাকে অপরেশনের সিদ্ধান্ত নেন।আল্লাহর অশেষ রহমতে অপারেশন সাকসেসফুল হয়।হাসপাতালে ১৫ দিন ভর্তি থাকার পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যান আমাদের গাইনি বিভাগের পোস্ট অপারেটিভের শংকরী মিত্রী।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..