নূরুলের টুকেন বানিজ্য: সিলেট-তামাবিল সড়কে চলছে অবৈধ সিএনজি

প্রকাশিত: ১১:১৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯

নূরুলের টুকেন বানিজ্য: সিলেট-তামাবিল সড়কে চলছে অবৈধ সিএনজি

Manual2 Ad Code

মনরফাঁদ সিলেট-তামাবিল হাইওয়ে রোড। অহরহ ঘটছে দূর্ঘটনা এবং ঝরছে বনি-আদমদের তাজাপ্রাণ। আর এর মূলে রয়ে অবৈধ যান চলাচল। টুকেনবাজ, চাঁদাবাজ ও স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণে বন্ধ হচ্ছে না এরাডে অবৈধ যান চলাচল। বন্ধ হচ্ছে না সড়ক দূঘর্টনা ও লাশের মিছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-তামাবিল হাইওয়ে রোডে যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাক ছাড়া যাত্রীবহনকারী অন্য কোন যানবাহন চলাচলের অনুমতি নেই। যেমন সিএনজি অটোরিক্সা, লেগুনা, ইমা ও নাসিমন প্রভৃতি ছোট গাড়ির যাত্রী সার্ভিস সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা লংঘন করে যাত্রী বহনের ফলেই অহরহ ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা, ঘটে চলেছে যাত্রীদের প্রাণহানী।

অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ যানবাহন রোধে দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তি, চাঁদাবাজ ও টুকেনবাজরা এ রোডে অবৈধ যানব্হান চলাচলের সুযোগ করে দিয়েছেন। বিনিময়ে প্রতিমাসে অবৈধ যানবাহন থেকে কামাই করছেন লাখো-কোটি টাকা।

Manual5 Ad Code

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সিলেট তামাবিল রোডে বৈধ যানবাহনের তিনগুন বেশি অবৈধ যানবাহন। যার সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। এগুলোর মধ্যে সিএনজি অটোরিক্সার সংখ্যা প্রায় দেড়হাজার। বাদ বাকি অবৈধ লেগুনা ইমা, ও নাসিমন। এসব যানবাহনের মধ্যে অধিকাংশের রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত নেই, নেই চালকদের ড্রাইভিং লইসেন্সও। শুধুমাত্র ‘পরিটিতি টুকেনই’ এসব যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও চালকদের মূল লাইসেন্স।

Manual4 Ad Code

অভিযোগে প্রকাশ, সিলেট পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের অসাধু কর্তা-ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে চাঁদাবাজ নূরুল হক ওরফে মেম্বার সিএনজি অটোরিক্সাসহ নিষিদ্ধ গাড়িগুলো চলাচলের ‘পুলিশের পরিচিতি টুকেন’ ব্যবসা করে থাকে। নূরুল হকের দেয়া টুকেন দেখলেই কোন গাড়ি আর আটকায় না ট্রাাফিক, হাইওয়ে পুলিশ সহ দায়িত্বরত জেলা ও এসএমপি পুলিশ। পুলিশের টুকেন বানিজ্যের মূল হোতা ও এক সময়ের বাদামবিক্রেতা নূরুলহক-এর বাড়ি সিলেটের জৈন্তাপুর থানার হরিপুর এলাকাধীন বালিপাড়ায়। সে ওই গ্রামের মরহুম আব্দুর মনাফ ওরফে গাছ মনাফের পুত্র।

নূরুলহক ওরফে মেম্বার নিজেকে অনটেস্ট ও রেজিস্ট্রিবিহীন সিএনজি অটোরিক্সার লাইসেন্স দাতা দাবি করে থাকে। ভুয়া ও বেআইনী টুকেন দিয়ে এ রোডে সিএনজি অটোরিক্সার অবৈধ চলাচল ও যাত্রীবহন চালু করে রেখেছে। তার দেয়া ‘পুলিশপরিচিতি’ টুকেন গাড়ির গ্লাসে লাগানো থাকলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারীদের কোন সংস্থাই এ গাড়ি আটকায় না। বিগত গত ৫বছর ধরে এভাবে ‘পুলিশপরিচিতি টুকেন’ দিয়ে নূরুল হক প্রত্যকটি অটোরিক্সা থেকে প্রতিমাসে ৭শ’ ও ১হাজার থেকে ১৫ শ’ টাকা করে আদায় করে থাকে। নূরুল হকের দেয়া টুকেন দেখলে পুলিশ গাড়ি না আটকালেও পুলিশ স্বীকার করে না এ টুকেন তাদের। নূরুলহক নিজেকে ১৭পরগনা তথা জেন্তাপুর কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট এই তিন উপজেলার সিএনজি অটোরিক্সা মালিক সমিতির সভাপতি দাবি করে থাকে। অথচ অনুসন্ধানে সে পরিবহন সেক্টারের কোন সংগঠনের বৈধ সভাপতি কিংবা দাইয়ত্বশীলও নয়। একটি লাঠিয়াল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে রাহাজানি করে অবৈধ যানবাহন থেকে জোর করে আদায় করে থাকে সে। এমনকি টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে টুকেন না নিয়ে কোন গাড়ি পাম্প থেকে তেল-গ্যাসও নিতে পারে না।

নূরুল হক নিজেকে মালিক সমিতির সভাপতি ও নিজেকে পুলিশ-প্রশাসনের এজেন্ট দাবি করে থাকে। এ দাবিতে জৈন্তাপুর উপজেলা হরিপুর বাজারে একটি অফিস খোলে দেদারছে চাঁদাবাজি ও টুকেন বানিজ্য করলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। নূরুল হক দম্ভ-সহাকারে বলে বেড়ায় সে পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, সিলেট মেট্রোপুলিটন পুলিশের কমিশনার, সিলেটের পুলিশ সুপার,র‌্যাব ৯-এর কামন্ডিং অফিসার, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের সব সেক্টরে এ টাকার ভাগ দিয়েই টুকেন ব্যবসার অনুমতি নিয়েছে। তাই তার দেয়া পরিচিতি টুকেন নিতে পারলেই সিলেট-তামাবিল, সিলেট জাফলং ও সিলেট-কানাইঘাট রোডে যানবাহন চালাতে হবে। অন্যথায় কেউই কোন প্রকার গাড়ি চালাতে পারেবে না বলে জানায় সে। তবে অবৈধ টুকেন বানিজ্যে নূরুল হক একা নয়, এ কাজে তার সহযোগী রয়েছে আরো কয়েকজন। তারা হচ্ছে,সিলেট সদরের খাদিমপাড়া ইউনিয়নের হাতুড়া গ্রাসের নাজিম, বটেশ্বর এলাকার ফরিদ, পীরের বাজার এলাকার আপেল মিয়া, পরগনা এলাকার সুমন, জৈন্তাপুরের হেমু মাঝরটোলের সানাই মিয়া ও হরিপুর বালিপাড়ার পারভেজ। তারা সংঘবদ্ধভাবে একটি সিন্ডিকেট করে প্রশাসনের পদস্থ কর্তা-ব্যক্তিদের নাম ভাঙ্গিয়ে এ টুকেন বানিজ্য করে থাকে। অথচ প্রশানের পদস্থ কোন কর্মকর্তাই এ ব্যাপারে কিছুই জানে না এবং টুকেন দিয়ে অবৈধ যানবাহন চালানোর অনুমতিও দেয়া হয়নি বলেও জানান তারা। নূরুল হক টুকেনবাজি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে প্রশাসন সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে চলেছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।

এব্যাপারে টোকেনসিন্ডিকেটে’র প্রধান নুরুল হক-এর মোটোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বৃহত্তর জৈন্তায় ১৭ পরগানা নিয়ে রয়েছে ব্রিটিশ স্বীকৃত জৈন্তিয়া রাজ্য । এই রাজ্য হওয়ার সুবাদে সে বৃহত্তর জৈন্তার তিন থানা নিয়ে গাড়ির আলাদা মালিক সমিতি গঠন করে নিজে সভাপতি হয়ে পরিচিতি টুকেন প্রদান করে থাকে। বিনিময়ে প্রাপ্ত টাকা থেকে সে ৩ উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়-এর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিমাসে ৩০০ টাকা করে দিয়ে থাকে। তবে সরেজমিনে স্কুল কর্তৃপক্ষগন তার এ দাবি মিথ্যা বানোয়াট ও প্রতারনা বলে জানিয়েছেন।

Manual5 Ad Code

বৃহত্তর জৈন্তার সাধারণ মানুষ ঘনঘন দূর্ঘটনা ও প্রাণহানী এড়াতে টুকেনবানিজ্য ও অবৈধ যানচলাচল বন্ধে ব্যবস্তা গ্রহণে সরকার ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। বিস্তারিত থাকছে সাপ্তাহিক ক্রাইম সিলেট আগামী সংখ্যায়।

যার নেতৃত্বে জেলার হাইওয়ে রোড থেকে শুরু করে উপজেলার সব কয়টি রোডে চলন্ত বোমা নিয়ে চলে প্রায় ৫ হাজার নাম্বার,রেজীঃ,ফিটনেস বিহিন সিএনজি অটোরিক্সা। প্রতিটি সিএনজির পুলিশ টুকেন বাবৎ মাসে ১ হাজার টাকা করে নিয়ে থাকে সে। নুরুল বলে বেড়ান তার পকেটের টাকায় সিলেটের দু-চারটি পত্রিকা চলে।

Manual8 Ad Code

সিলেটের সচেতন মহলের দাবী নুরুলের পাশাপাশি তার সহযোগিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হউক। মানবতার ফেরিওয়ালা সিলেটের এসপির ফরিদ এর আশু হস্থক্ষেপ কামনা করছেন সিলেটের সচেতন মহল।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..