দক্ষিণ সুরমা বালুর মাঠে বাবুলের নেতৃত্বে চলছে জুয়ার আসর : নীরব প্রশাসন

প্রকাশিত: ১১:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৮

দক্ষিণ সুরমা বালুর মাঠে বাবুলের নেতৃত্বে চলছে জুয়ার আসর : নীরব প্রশাসন

Manual7 Ad Code

মামুন আহমদ :: সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমা কদমতলী বালুর মাঠে ঘিরীঙ্গি বাবুলের নেতৃত্বে চলছে ভারতীয় তীর খেলাসহ বিভিন্ন নামের জমজমাট জুয়ার আসর। এর ফলে বিপথগামী হচ্ছে কদমতলীর আশপাশ এলাকার তরুণ ও যুবকরা। দীর্ঘদিন দিন ধরে এই জুয়ার আসর চলে আসলেও নীরব ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন।

Manual8 Ad Code

এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন যদি দ্রুত এই জুয়ার আসর বন্ধ করা না হয় তাহলে এলাকার তরুণ যুবকরা যেমন অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়বে, তেমনি নগরীতে চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পাবে।

Manual6 Ad Code

২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে ভারতীয় ধনকুবেরা এ রকম খেলা আবিষ্কার করেন। এর নাম রাখা হয় মেঘালয়ের আঞ্চলিক ভাষায় তির খেলা। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে অনুষ্ঠিত তির খেলায় অংশ হিসেবে নগরীর দক্ষিণ সুরমা বালুর মাঠে বসেই জুয়ায় বাজি ধরা হয়। বালুর মাঠে দোকানঘর ভাড়া নিয়ে এদেশীয় এজেন্টরা (সরকারদলীয় লোক) ভারতের জুয়ার আসরের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের সমন্বয় করেন।

Manual2 Ad Code

এখানে ভারতীয় তীর ছাড়াও চলছে তিনতাস,জান্ডু,জাকা-নাকাসহ নিত্য নতুন খেলার আমদানিতে মেতে উঠেছেন ঘিরীঙ্গি বাবুল হাতিয়ে নিচ্ছেন নগরীর রিক্সা চালক, অটোরিকশাচালক ও বেকার যুবকরা এই সকল খেলায় অংশ নিচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাবুলের এই খেলা চললেও এদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, খেলা বাবুলের মাধ্যমে থানাপুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের হাতে বখরা পৌঁছে দেয়া হয়। সূত্র জানায়, তীর খেলায় এদেশের এজেন্টদের মাধ্যমে ১-১০০ পর্যন্ত নাম্বার বিক্রয় করা হয় যে-কোনো মূল্যে। যত মূল্যে বিক্রয় হবে তার ৭০ গুণ লাভ দেয়া হবে বিজয়ী নম্বরকে। অর্থাৎ, ১ টাকায় ৭০ টাকা। একই নম্বর একাধিক লোকও কিনতে পারেন।

সবাই কেনা দামের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি টাকা পাবেন। চরকির মতো একটি চাকা ঘুরে এবং এই চাকা লক্ষ করে তির ছোড়া হয়। যে নম্বরে তির লাগে, সেই নম্বর বিজয়ী। এই তির খেলা সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। সপ্তাহে ৬দিন খেলাটি পরিচালিত হয়। অন্ধ বিশ্বাসের উপর এ খেলা চলে।

অন্যান্য খেলা প্রতিদিন চলে তবে তীর খেলাটি ভারতের রাষ্ট্রীয় ছুটির দিনসহ প্রতি রোববার ছাড়া বাকি সকল দিবসে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিদিন বিকাল বেলা ভারতের শিলংয়ে মোবাইলফোনের মাধ্যেমে খোঁজ নেন কোনো সংখ্যার লটারি লেগেছে। তারপর তা মূহূর্তের মধ্যই ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। আর যারা তির খেলার সংখ্যা কিনেন, তখনই তারা জানতে পারেন, কে লটারি জিতেছেন।

সাধারণ পরিবহন শ্রমিকদের অনেকেই এই খেলার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজকর্মের প্রতি মনোনিবেশ হারিয়ে ফেলেছেন। সারা দিন শুধু এই খেলায় ব্যস্ত থাকেন। এর কারণে দিন দিন তাদের পারিবারিক অস্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন পকেটে টাকা না থাকে তখন অনেকেই তাদের ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে এই তির খেলার সংখ্যা ঘর কেনেন।

আবার কেউ-কেউ চুরি মতো অপরাধমূলক কাজ করতে দ্বিধাবোধ করেন না। ফলে এলাকাবাসী অনেকটাই আতঙ্কগ্রস্ত। এ অবস্থা চলতে থাকলে এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাবে। যেভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে তিরের নাম্বার বিক্রি করা হয়, তাতে অভিভাবক মহল তাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন।

এব্যপারে নগরীর দক্ষিণ সুরমার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার শাহ্ জানান,এভাবে যদি খেলা চলে তাহলে দিন দিন ভাড়তে থাকবে অপরাধ। এই খেলাটি বন্ধ করতে আমরা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..