ধানের শীষে ছত্রাক রোগ, কৃষক দিশাহারা

প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০১৮


Manual7 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন হাওরে উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ ধানের শীষে ছত্রাকজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের শীষ বের হলেই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ধান গাছ। হাওরের জমিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগটি। আক্রান্ত জমির ধান গাছে কৃষকরা বালাইনাশক ব্যবহার করেও ধানের চারা রোগ মুক্ত করতে পারছেন না।

Manual2 Ad Code

তাহিরপুর উপজেলায় গত বছর আগাম পাহাড়ি পানি এবং অতিরিক্ত শিলা বৃষ্টিতে হাওরের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রি-২৮ ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এমন অবস্থায় কৃষকরা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। কৃষকরা জানিয়েছেন, জমিতে চাষ করা ব্রি-২৮ ধানের শীষ বের হওয়ার পরই শীষ হলুদ রং ধারণ করে সাদা হয়ে যাচ্ছে।

Manual3 Ad Code

আর শীষের নিচের অংশের গিঁটের ভেতর কালো রং ধারণ করছে। কৃষকরা জানায়, এ বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ ভালো হয়েছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। নদীতে পানির চাপ নেই। হাওরে ধানের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু ধান রোগাক্রান্ত হওয়ায় তাদের সব শ্রম আর স্বপ্ন ভেঙে যেতে বসেছে।

Manual6 Ad Code

উপজেলার মাটিয়ান হাওরে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা জমিতে স্প্রেয়ার দিয়ে ছত্রাকনাশক দিচ্ছেন। আর স্প্রে করতে তাদের সহযোগিতা করছেন পরিবারের নারী ও শিশুরা। জমিতে ছত্রাকনাশক ছিটানোর কাজে নিয়োজিত রমিজ উদ্দিন (৪৮) জানান, ফজরের আজানের পর থেকেই এ কাজ করছেন। বৃদ্ধ বাবা ধলাই মিয়া (৭২) ও মা পুলকজান (৬০) প্রয়োজনীয় পানির জোগান দিচ্ছেন। রমিজ উদ্দিন জানান, ৫ কিয়ার জমির রোগ সারাতে তিনি ১২০০ টাকার ওষুধ কিনেছেন। তিনি বলেন, মনকে বুঝাতে টাকা আর পরিশ্রম করছি। বিষ দিয়ে কেউ ধান রক্ষা করতে পারছে না। পুলকজান বলেন, গেল দু‘বছর ধান পাইছি না। আমার পুতের ১৪ কিয়ার (১ কিয়ার=৩০ শতক) জমির ধানের মধ্যে ৫ কিয়ার জমির পুরো ধান নষ্ট অইয়া গেছে। বাকি ধানের জমিনেও রোগ অইছে। রোগ সারাতে টেকা আর শ্রম দিয়েও ধান রক্ষা হচ্ছে না। কৃষকরা আরো বলেছেন, আগাম জাতের ধান হিসাবে কৃষকরা এ বছর ব্রি-২৮ ধানের চাষ করেছেন। হাওরের ৮০ ভাগ জমিতেই এই ধানের চাষ হয়েছে। কিন্তু জমির ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। রোগ সারাতে ধানের জমিতে কৃষকরা ছত্রাকনাশক ন্যাটিভো বা ট্রুপার স্প্রে করছেন। কিন্তু রোগমুক্ত হচ্ছে না ধান গাছ। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে পড়েছেন রোগাক্রান্ত জমির কৃষকরা।

মাটিয়ান হাওরের উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত বছর পানিতে ফসল ডুবেছে। এর আগের বছর গেল শিলাবৃষ্টিতে। এ বছর ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের পরিমাণ ও মান খুব ভাল। কিন্তু ধানের ব্লাষ্ট রোগ সব অর্জন শেষ করে দিচ্ছে।

Manual6 Ad Code

মাটিয়ান হাওরপাড়ের জামলাবাজ গ্রামের কৃষক আব্দুল হক (৭৫) বলেন, হাওরের ধান কোনদিন রোগাক্রান্ত হয়নি। বাপ-দাদার আমল থেকে কোনোদিন ধানের রোগ সারাতে বিষও দিইনি। কিন্ত এ বছর বিষ দিয়েও ধানের ফলন রক্ষা করতে পারছি না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম এ বিষয়ে বলেন, সীমিত আকারে হাওরের ব্রি-২৮ ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। তারা এ রোগ থেকে ধান রক্ষায় সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন। তার দাবি তাহিরপুরে এ বছর ধানের ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ থেকে ছয় হেক্টরের বেশি হবে না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..