সিলেট ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক :: তাহিরপুর সীমান্তের জাদুকাটা নদীতে অবৈধ ভাবে বোমা, ড্রেজার, শ্যালো মেশিন, কোয়ারী করে নদীর তীর কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করায় উপজেলার ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রাম সহ অর্ধশতাধিক গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করায় নদী তীর এলাকায় ইতিমধ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট নদীর তীর কাটা বন্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের মো. সহিদুল ইসলাম। সহিদুল ইসলাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাইদুর রহমান বাদাঘাট ফাঁড়িতে যোগদান করেই বালিখেকো সেন্ডিকেটের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে পরিবেশ ধ্বংসের এই কাজে সহযোগিতা করছেন। সহিদুল ইসলাম আরো জানান, বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. সাইদুর রহমান বারেকটিলার নিচে চিলার বাজারের পিছনে নৌকার মধ্যে শত শত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাতের আধারে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন। অভিযোগ ও সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ও বাদাঘাট ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মাহারাম ও জাদুকাটা নদী।
মাহারাম নদীর বেষ্টিত সাদা সাদা বালুস্তূপ দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসে সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কিন্তু গত মাস থেকে এসআই সাইদুর রহমানের ইশারায় থেমে থেমে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট নদীর তীর কেটে অবাধে বালু-পাথর উত্তোলন করছে। অবৈধ বোমা, ড্রেজার মেশিন ও শ্রমিক দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে নদীর তীর থেকে বালু ও পাথর। বালু খেকো সিন্ডিকেট প্রতি দিনেই নদীতে উত্তোলিত বালু-পাথর বারকি নৌকা, স্টিলবডি নৌকা ভরাট করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। নির্বিচারে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের মুখে। শিমুল বাগানসহ আশপাশের মারাম, মানিগাঁও, ঘাটাটিয়া গ্রামের মানুষের মধ্যে নদী ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নদী তীরের স্থানীয়রা বলছেন, নদীর তীর কেটে যেভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে নদীর পাড়ের গ্রামগুলোর মানচিত্র পাল্টে যাবে। নদী পাড়ের অনেকেই জানান, বালু-পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট চক্রটি অনেক দিন ধরেই নদীর তীর কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করলেও স্থানীয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা বলেন, প্রভাবশালী মহল ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নদীর তীর কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। বাদাঘাট ফাঁড়ির এসআই সাইদুর রহমান অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। নদীর পাড়ে কোয়ারী করে বালু-পাথর উত্তোলন করার অনুমতি তিনি দেননি এবং কোনো উৎকোচ গ্রহণ করছেন না। জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগকারীকে বলেছি বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানোর জন্য এবং তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলে দিয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd