লাবনী’র মামলায় কথিত সাংবাদিক জেলহাজতে

প্রকাশিত: ২:৫৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : তৃতীয় স্ত্রীকে মারধর এবং শিশুসন্তানকে নির্যাতনের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সাভারের কথিত সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন রাতুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলায় তার পঞ্চম স্ত্রী ও শাশুড়িকেও আসামি করা হয়। শনিবার সাভার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন রাতুলের তৃতীয় স্ত্রী নুরজাহান আক্তার।

মামলার আসামিরা হচ্ছেন- মোজাম্মেল হোসেন রাতুল, তার পঞ্চম স্ত্রী লাবনী আক্তার ও লাবনীর মা।

রাতুল নিজেকে ক্রাইম রিপোর্টার দাবি করে সাভার দাপিয়ে বেড়াতেন। বিভিন্ন অফিসপাড়ায় ছিল তার পদচারণা। তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই। তিনি কখনো দৈনিক দেশকাল আবার কখনো ভোরের আলো পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিতেন।

ফারহানা, স্বপ্না, নুরজাহান, লাবনী, অঞ্জনাসহ এ পর্যন্ত রাতুল ছয়টি বিয়ে করেছেন বলে তার তৃতীয় স্ত্রী দাবি করেছেন। সর্বশেষ রাতুল দুই সন্তানসহ এক মহিলাকে বিয়ে করেন।

মঙ্গলবার বিকেলে সাভার উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা আক্তার জাহান বলেন, রাতুল তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শ্যালিকাদের নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের ভাতা নিয়েছেন। এছাড়া তার স্ত্রী আমাদের কাছে রাতুলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আশুলিয়ার এক সাংবাদিক তার স্ত্রীকে নির্যাতন ও মারধর করেছেন বলে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে এসেছেন। তবে তিনি ওই সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করছেন না।

রাতুলের তৃতীয় স্ত্রীর মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ২ ফেব্রুয়ারি বাদি নূরজাহানকে বিয়ে করেন রাতুল। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই তাকে মারধর ও মানসিক নির্যাতন করতেন এবং ভরণপোষণও করতেন না। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে তাদের একটি পুত্রসন্তান (নাহিয়ান) জন্মগ্রহণ করে।

এরই মধ্যে গোপনে রাতুল ২ সন্তানসহ লাবনী আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করে বসবাস শুরু করেন। এদিকে বিয়ের খবর পেয়ে তৃতীয় স্ত্রী নুরজাহান স্বামীর নতুন বাসার ঠিকানায় গেলে তিনি ও তার পঞ্চম স্ত্রী বাসা থেকে বের করে দেন। তখন আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা বললে গত ২২ ডিসেম্বর নুরজাহানকে বাসায় ডেকে নেন। দুই দিন পর ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে রাতুল ও তার পঞ্চম স্ত্রী লাবনী মিলে নুরজাহান ও তার শিশুপুত্রকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হতার চেষ্টা করেন। তখন তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করেন।

পুনরায় ২৯ ডিসেম্বর রাতে রাতুল তার তৃতীয় স্ত্রীকে আলাদা বাসায় রাখার কথা বলে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে যান। যাওয়ার পর রাতেই রাতুল তার পঞ্চম স্ত্রী লাবনী ও লাবনীর মা মিলে নুরজাহানকে মারধর করেন। শিশুসন্তানের হাত গরম দুধের পাতিলে চেপে ধরে হাত ঝলসে ফেলেন। তখন তাদের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় নুরজাহান বাদি হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা (নং-৬৫) দায়ের করেন। পরদিন পুলিশ তার বাড়িতে হানা দিয়ে কথিত সাংবাদিক রাতুলকে গ্রেফতার করে। পালিয়ে যান তার পঞ্চম স্ত্রী লাবনী ও লাবনীর মা।

পহেলা জানুয়ারী ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে সাভার মডেল থানার এসআই আসাদুজ্জামান শেখ কথিত সাংবাদিক রাতুলকে আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ আদালত তার রিমান্ড নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..