সুনামগঞ্জ যাদুকাটা নদীতে চলছে মঞ্জু বাহিনীর তান্ডবলীলা!

প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২৩

সুনামগঞ্জ যাদুকাটা নদীতে চলছে মঞ্জু বাহিনীর তান্ডবলীলা!

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে অবৈধ ড্রেজার-বোমা মেশিন দিয়ে ইজারার নামে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লুটে নেওয়া হচ্ছে বালু ও পাথর। গত এপ্রিল মাসে তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর দুটি বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে যাদু কাটা বালি মহাল-১(এক) যার মুল্য ২০কোটি ২০লক্ষ টাকায় ইজারা খাজনা পরিশোধ করে ইজারাদার হিসেবে দখল বুঝে নেন রতন বাড়ি এবং যাদু কাটা ২নং বালু মহাল ইজারা পান খন্দকার মঞ্জুর আহমদ যার ইজারা মুল্য প্রায় ৩৪কোটি টাকা। খাজনা পরিশোধ করার বিধান থাকলেও, ২-নং বালি মহালের খাজনা এখনো পরিশোধ করা হয়নি।

যাদু কাটা দুই এর খাজনা পরিশোধ না করেই স্থানীয় নেতাদের সাথে ইজারাদার মিলে সিন্ডিকেট তৈরী করে যাদু কাটা বালু মহাল-১,এবং যাদু কাটা বালু মহাল-২,এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ইজারাবিহীন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর বালু মিশ্রিত পাথর মহাল এবং খনিজ সম্পদের ফাজিলপুর বালি মিশ্রিত পাথর মহাল থেকে আবাধে প্রতিদিন রাতের আঁধার অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে শতশত ষ্টীল বডি বাল্কহেড নৌকা বুঝাই করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু ও পাথর।

শুধু তাই নয় সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। ফাজিলপুর বালি মিশ্রিত পাথর মহালটি সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। অথচ স্থানীয় এমপির সাথে সিন্ডিকেট তৈরী করে সেই রক্ষিত ফাজিলপুর বালি মিশ্রিত পাথর মহাল থেকে কোটি কোটি টাকার বালি ও পাথর লুট করে নিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ড্রেজার বোমা মিশিন দ্বারা উত্তোলন করে দুই ইজারাদার।

প্রশাসনের চোখের সামনে বর্তমান দুই ইজারাদারের সিন্ডিকেটের লোকেরা এসব তান্ডব চালিয়েছেন। রহস্যময় কারনে এসব তান্ডবলীলার কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা। শুধু তাই নয় নদীর তীর কেটে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতি নিয়তো প্রকাশ্যে নেওয়া হচ্ছে বালি ও পাথর, যার ফলে ইতি মধ্যেই নদী গর্ভে বিলীন হতে চলেছে শতশত নদীর তীরে থাকা অসহায় মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্থা ঘাট ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।

অন্য দিকে ঐ সমস্ত অবৈধ বোমা ড্রেজার মেশিনের তান্ডবের কারনে ৪০টি গ্রামের প্রায় ২০হাজার শ্রমিক তাদের কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পরেছেন। যা সাবেক ইজারাদারদের বেলায় এমনটি হয়নি। শত বছর যাবৎ এই যাদু কাটা নদীতে প্রায় ৪০টি গ্রামের হাজার হাজার শ্রমিকরা বেলচা ও বালতি দিয়ে বালু,জুরি পাথর, লাকড়ি, পাহাড়ি ঢলে ভেসে আসা বাংলা কয়লা উত্তোলন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন।

আর এসমস্ত শ্রমজীবী শ্রমিকদের ভাগ্যে কুড়াল মেরে যাদু কাটা বালি মিশ্রিত পাথর মহালগুলিতে মানব নামে দানব মেশিন ড্রেজার বোমা দিয়ে তান্ডব লীলা চলছে এমপিও ইজারাদারদের কার্যক্রম। একদিকে যেমন পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে তেমনি ভাবে এসব কার্যক্রমের কারনে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ ১আসনের সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুুন্ন হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যাদু কাটা বালি মহালের ইজারা শর্ত অনুযায়ী রাতের বেলায় বালু উত্তোলনের বিধান না থাকলেও তা না মেনে রতন সিন্ডিকেট বাহিনীর লোকজন দ্বারা ড্রেজাট মেশিন চলছে রাতেই। জানা যায় যাদু কাটা ১/২ বালু মহালটি হচ্ছে ছড়া শ্রেণীর বালু মহাল যা মেনুয়ালী পদ্ধতিতে বালতি এবং বেলচা দিয়ে বালু উত্তোলন করার শর্ত রয়েছে। কিন্তু এখন চলছে তার উল্টো? এছাড়াও বালি ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর (খ)অনুযায়ী সূর্যদয় হতে সূর্যাস্থ পর্যন্ত বালু উত্তোলন করার বিধান রয়েছে।

কিন্তু নতুন ইজারাদার সিন্ডিকেটের বেলায় কোন আইন কাজে আসছে না। স্থানীয় এমপির সেল্টারে সব পাল্টে গেছে? সকল শর্ত লঙ্ঘন করে সেখানে চলছে নেতাদের আইন পালণ করে যাদু কাটা নদীর তীর কাটার রঙ্গলীলা। এমনটি জানাগেছে নদীর পাড়ে থাকা দিন মজুর শ্রমিকদের কাছ থেকে।

এই সিন্ডিকেট বাহিনীর ধ্বংস লীলা বন্ধের জন্য বিষটি সংসদে উপস্থাপন করেন সুনামগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. শামীমা শাহরিয়ার। তিনি এই অবৈধ ড্রেজার-বোমা মেশিন ওনদীতে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান সংসদেও। কিন্তু কিছুতেই তাদের এই ধ্বংস লীলা বন্ধ হচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব না দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের চাঁদাবাজিও নদীর পাড় কাটার মহোৎসব। বালুমহাল ইজারা নামে চাঁবাজির রাম রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে রতন ও মঞ্জুর চক্র। তবে তাদের ইজারাটি সম্পূর্ণ রূপে নিয়ম বর্হিভূত রয়েছে।

অবৈধ দুই ইজারাদার মিলে স্থানীয় থানা পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ের তোলেছেন। তিনি প্রতিনিয়ত তাদের সাথে বৈঠক করেন। যার ফলে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছেন এমনটির তথ্যের সন্ধান উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে দায়িত্ব রত কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ক্যামেরায় কথা বলতে রাজিনন, এড়িয়ে যান। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে এসে পরিদর্শন করে এসমস্ত তান্ডব লীলা বন্ধ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটা আশসবাদ ব্যক্ত করেন যাদু কাটা নদীর তীরের বসবাসরত সাধারণ মানুষেরা।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2023
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..