সিলেট ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পরিবেশ সংরক্ষিত এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষিত সিলেটের জাফলংয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে বালু ও পাথর লুটের মহোৎসব। নদীতে অবৈধভাবে স্থাপিত বোমা মেশিন দিয়ে দিনরাত উত্তোলন করা হচ্ছে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। এর ফলে একদিকে যেমন ধ্বংস হচ্ছে নদীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য, অন্যদিকে ঝরে পড়ছে শ্রমিকের প্রাণ।
সোমবার সকালে সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং নদীতে বোমা মেশিন বসিয়ে পাথর উত্তোলনের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পানিতে পড়ে যান রজব আলী নামে এক শ্রমিক। আড়াই ঘন্টা পর তাকে নদীর তলদেশ থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে চলতি বছরে জাফলংয়ে অবৈধ উত্তোলনের সময় দুর্ঘটনায় নিহত হলেন অন্তত ৫ শ্রমিক। নিহত রজব আলী স্থানীয় বরবন হাওর পূর্ব পাড়া গ্রামের রাহমাতুল্লাহর ছেলে। লাশ উদ্ধারের পর তার বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে। শোকাহত স্বজন ও প্রতিবেশীরা বালু, পাথর লুটে প্রশাসনের নীরবতাকে দায়ী করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই কিছু প্রভাবশালী চক্র প্রশাসনের একাংশকে ম্যানেজ করে এসব অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। পরিবেশ বিপর্যয় ও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটলেও দৃশ্যমান কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
জাফলংয়ের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, ইসিএ ঘোষণার পরও এমন লুটপাট চলতে থাকলে জাফলংয়ের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য চিরতরে হারিয়ে যাবে। তারা অবিলম্বে ইসিএ এলাকায় সবধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধারের পর নিহতের বাড়িতে আসা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহতের স্বজনদের সাথে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, মুখে এক হলেও বাস্তবে কোনো অভিযান নেই। বরং সময়মতো চাঁদা পেয়ে অনেকে চোখ বন্ধ করে থাকেন।
পরিবেশবাদীদের মতে, এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই জাফলংয়ের নদী হারাবে তার প্রাণ, আর প্রতিদিন ঝরবে দরিদ্র শ্রমিকদের প্রাণ।
ঘটনার সতত্য নিশ্চিত করে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মো. তোফায়েল আহমদ জানান, পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd