সিলেট ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২৪
ক্রাইম রিপোর্টার: সিলেট নগরীর ৩৭ নং ওয়ার্ড আখালিয়ার টিলার গাঁওয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন টিলা কেটে ঘর-বাড়ী নির্মাণ করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে- ভুয়া কাগজ পত্র দেখিয়ে এসব টিলার জায়গা বিক্রি করছেন এয়ারপোর্ট থানাধীন টিলার গাঁও গ্রামের উমর আলীর ছেলে জামায়াত নেতা মেহেদী হাসান সুহেল একই গ্রামের সামুদ আলীর ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান আব্দুল এবং জালালাবাদ থানাধীন গোয়াবাড়ি এলাকার সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মির্জা জামাল পাশা।
এ-ই সিন্ডিকেটের হাত ধরে টিলা বিক্রি, কর্তন এবং প্লট বানিজ্যর ফলে হারিয়ে যাচ্ছে এই এলাকার একাধিক টিলা। অবৈধভাবে টিলা কাটা বন্ধ এবং পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে গত ২১ নভেম্বর অভিযান পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট। অভিযান শেষে এ সিন্ডিকেটের মূলহোতা জামায়াত নেতা মেহেদী হাসান সুহেল সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর। যার মামলা নং ১৮/২৩৯। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যান এ সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা। যারফলে কিছুতেই থামছে এই সিন্ডিকেটের টিলা কর্তন এবং প্লট বাণিজ্যের হিড়িক।
আখালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ডকরার অনুযায়ী, কুমারগাঁও মৌজার জে, এল, নং ৮০ খতিয়ান নং ৮৬৬ এস,এ দাগ নং ২১১২ বি,এস সরকারি ১.৭৩ একর টিলা শ্রেনীর জায়গার মালিকানা দেখিয়ে জোরপূর্বক দখলে নেন জামায়াত নেতা মেহেদী হাসান সুহেল। পরে সুহেল কাগজ-পত্র দেখিয়ে মোফাজ্জল, কয়েছ, রুহুল, রনি, আব্দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর, আহমদ আলী, এনাম সহ বিভিন্ন লোকজনের কাছে টিলার জায়গা বিক্রি করেন। সোহেল সহ তারা সবাই টিলা কেটে সেখানে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করেছেন।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান আব্দুল দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ২০১০ সালের দিকে কুমারগাঁও মৌজার জে, এল, নং ৮০, খতিয়ান নং ১০১৫, এস,এ ২১০৭ দাগের ৫. ৫৩ একর টিলা শ্রেনীর জায়গা দখলে নেন। আব্দুর রহমান আব্দুল ভুয়া কাগজ পত্র দেখিয়ে টিলার জায়গা বিক্রি করেন দেলোয়ার হোসেন রানা, জিয়া আহমদ, তোফায়েল হোসেন, পরিমল চন্দ্র, মিসবা, পরিতোষ, শোভাষ, লোকমান সহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির নিকট। তারা সবাই টিলা কর্তন করে টিলার ঢালে ঢালে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেন। পাশাপাশি আব্দুর রহমান আব্দুল নিজেও টিলা কেটে সেখানে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন।
ঠিক একইভাবে, ২০১১ সালের দিকে কুমারগাঁও মৌজার জে, এল, নং ৮০ এস,এ ২১৪০ নং দাগের বি,এস সরকারি ৬.৬০ একর টিলা দখলে নেন সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মির্জা জামাল পাশা। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাঁটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের নামে জামাল পাশা শুরু করেন প্লট বানিজ্য ও বিক্রি। মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্দ না পেলেও এরকম প্রায় শতাদিক প্লট বিক্রির বদৌলতে হাতিয়ে নেন কয়েক কোটি টাকা। এ সময় জামাল পাশার অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেন টিপকল সুহেল, যুবলীগ নেত্রী মাহমুদা আক্তার রিনা, শমসের ও লাভলু। বর্তমানে তারা সহ সবাই টিলা কেটে ঢালে ঢালে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাসরত।
এ ব্যাপারে জামায়াত নেতা মেহেদী হাসান সুহেলের সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- একটা মিটিংয়ে আছেন একটু পর তিনি কল দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান আব্দুল স্থানীয় এক সাংবাদিকের বরাত দিয়ে জানান- তিনি এসবে জড়িত নয় তবে ওই সাংবাদিক এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন এমনকি ওই সাংবাদিক এর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানার জন্য তিনি বলেন।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মির্জা জামাল পাশা ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য সংগ্রহ করা যায় নি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd