সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে বরযাত্রী, বিদেশ-যাত্রী ও পর্যটকদের কাছে আতঙ্কের অপর নাম ‘হিজড়া’। অযৌকক্তিক চাঁদা দাবি, জোড়পূর্বক নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ খারাপ ও অশোভন আচরণ থেকে রেহাই পান না কেউই। জাফলংয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে আগত পর্যটক, সাধারণ পথচারি, দোকানদার এমনকি যানবাহন চাকলদের গুনতে হয় হিজড়াদের চাহিদা মতো চাঁদা। এমনকি দিতেও বাধ্য হয়। তা না হলেই নানাভাবে নাজেহাল হতে হয় তাদের কাছে।
এরা নামধারী হিজড়া তাদের অনেকের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। আবার অনেকের বিয়ের জন্য পাত্রি খুঁজছেন। এরা জন্মগত ভাবে কোন হিজড়া নয়। এরা নিজেদের মেয়েলি স্বভাবের মনে করে তাই তারা নিজেকে হিজড়া হিসাবে তৈরি করেছে। মেডিসিন সেবনের মাধ্যমে নিজের দেহ পরিবর্তন করছেন। আবার কিছু সংখ্যক লোক সার্জারির মাধ্যমে নিজের লিঙ্গ কর্তন করেছেন। নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন আসল হিজড়া। সত্যিকার অর্থে সিলেটে কোন অরিজিনাল হিজড়া নেই। সমাজসেবা স্বীকৃতি দিয়েছে তাদেরকে হিজড়া। এই পরিচয়ে তারা চলা ফেরা করছেন।
সিলেট নগরীসহ পুরো বিভাগে চলছে তাদের চাঁদাবাজি। বর্তমানে এদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট সিলেটবাসী। সম্মানের ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করায় দিন দিন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদেরকে গণপিটুনি দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। এই হিজড়া নামধারীদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সকলের কর্তব্য। এরা সুস্থ সবল পুরুষ হয়ে তারা কোন কাজ না করে নারীদের বেশ ধরে চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছে।
২০২০ সালে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর নির্দেশনায় হিজড়া নামধারীদের চাঁদাবাজি বন্ধে অভিযান করেছে জেলার প্রতিটি থানা পুলিশ। এরপর জেলা এলাকায় তাদের চাঁদাবাজি কিছুটা বন্ধ হয়। কিন্তু পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের বদলির পর এরা পূনরায় শুরু করে চাঁদাবাজি। এদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট মানুষ।
সিলেটের সাংবাদিক মশাহিদ আলী বলেন, গত মঙ্গলবার জগন্নাথপুর উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে তার ভাইয়ের বিয়ে ছিলো। বিয়ের খবর শুনে বিশ্বানাথের হিজড়া নামধারী মালেকার নেতৃত্বে ৪-৫জনের একটি দল আমাদের বাড়িতে এসে তাদেরকে ২ হাজার টাকা দিতে দাবি করে। প্রথমে ৫০০ টাকা দিলেও নিতে রাজি হয়নি। তখন মালেকা বলে তাদেরকে ১৫০০ টাকা দিয়ে দিলে বিশ্বনাথ উপজেলার মধ্যে তার দলের আর কেউ আটকাবে না। পরে তাদেরকে ১৫০০ টাকা দেই।
তিনি বলেন, আমরা বরযাত্রী নিয়ে মিয়ারবাজার এলাকায় যাওয়া মাত্র মুন্নি নামে আরেক হিজড়া জগন্নাথপুরের জব্বারের লোক বলে পরিচয় দেয়। আমরা বাড়িতেও টাকা দিয়েছি বলে চাঁদা দিতে অপরগতা প্রকাশ করি। সাথে সাথে এরা গাড়ীর সামনে উলঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করে সেও মালেকার মতো তাকে টাকা দিয়ে দিলে কেউ আর সেন্টারে যাবে না। তখন তাকে ৬০০ টাকা দেই।কিন্তু মুন্নিও ছিল মালেকার লোক। পরবর্তীতে সেন্টারে জব্বারের একটি পার্টি আসে তখন প্রতিবাদ জানালে তারা অশ্লীল ভাষা শুরু করে। সম্মানের ভয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে বাধ্য হই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার এক হিজড়া নেত্রী বলেন, হিজড়া কেন চাঁদাবাজি করবে। আমাদের ঢাকার কোন হিজড়া কখনো বিয়ের গাড়ী আটক করে না। যারা মানুষের শুভ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্ষ্যবদ্ধ ভাবে প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। এরা কাজ করে খায় না কেন। হিজড়াদের কাজ কি শুধু চাঁদাবাজি করা? হিজড়াদের জন্য সরকারি অনেক সুবিধা রয়েছে। চাঁদাবাজি করবে কেন? যারা চাঁদাবাজি করে এদেরকে আইনের হাতে তোলে দেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd