সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান, পরিবেশের মামলা, অভিযুক্ত বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ- কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং কোয়ারির পাথর লুট। অভিযোগ রয়েছে- আগে পাথর লুটের নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা, আর ৫ আগস্টের পরে বিএনপি। তবে ইতোমধ্যে দলীয় অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিএনপি। অভিযোগ পেলে আরও নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারিও প্রদান করেছে। এরপরও জাফলংয়ের বল্লাঘাট-জিরোপয়েন্টসহ বিভিন্ন কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে রাত-দিন চলছে বালু-পাথর লুট। এছাড়া শ্রমিকদের কাছ থেকে অবৈধ চাঁদা আদায়ও করছে পাথরখেকো চক্র। জাফলং নয়াবস্তি বেড়িবাঁধ ধ্বংস করে পাথর লুটপাট পাথর উত্তোলন করছেন পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ,সবেদ ড্রাইভার, আজগরসহ একটি প্রভাবশালী চক্র।
স্থানীয়রা জানান- সিলেট জেলা বিএনপির সদ্য বহিস্কৃত নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনের ভাগনে আজির উদ্দিন স্থানীয় কোয়ারিগুলোর পাথর লুটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা শ্রমিক দিয়ে দিন-রাত প্রকাশ্যে লুট করাচ্ছেন পাথর। দুদিন আগে টাস্কফোর্স অভিযানে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের উপর শ্রমিক দিয়ে হামলা করান তারা। ৫ আগস্টের পর পর বড় অংকের পাথর লুটের পেছনে অভিযুক্তদের হাত রয়েছে। জাফলং বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স, তার সহযোগী সেলিম জমিদার, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সভাপতি আমজাদ বক্স, তার সহযোগী সেলিম জমিদার, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন।
স্থানীয়রা আরও জানান- সম্প্রতি রাতের বেলা বল্লঘাট জিরোপয়েন্টে নৌকা দিয়ে পাথর চুরির বিষয়টি দেখতে পেয়ে তিনি প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৮ অক্টোবর রাতে তার উপর হামলা চালানো হয়। পরে তিনি এ বিষয়ে থানায় হত্যাচেষ্টা মামল দায়ের করেন। কিন্তু এরপর প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেনি। অথচ আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এলাকায়।
এদিকে, পরিবেশের মামলায় মূল অভিযুক্তদের রেখে নিরীহ শ্রমিকদের আসামি করা হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে ইসমাইল হোসেন বলেন- মামলা থেকে নিরীহ শ্রমিকদের বাদ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি মূল পাথরখেকোদের আসামি করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। তা না হলে জাফলং এলাকার কোয়ারিগুলো থেকে বালু-পাথর লুট ও চাঁদাবাজি বন্ধ হবে না।
এসব বিষয়ে জনতে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আমজাদ বক্স ও ছাত্রদল নেতা আজির উদ্দিনের মুঠোফোনে কল দিলে তারা রিসিভ করেননি।
জানা যায়, বালু-পাথর আহরণে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি হওয়ায় প্রকৃতি সুরক্ষায় গোয়াইনঘাটের ডাউকি-জাফলংকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করার পর ডাউকি-পিয়ান নদীর মোহনায় জমেছিল কয়েক স্তরে হাজার হাজার ঘনফুট পাথর। বছর বছর পরিমাপ করে রাখা এসব পাথর ৫ আগস্টের পর নতুন করে লুটের মুখে পড়ে। এক রাতের লুটপাটে এক কোটি ঘটফুট পাথর চুরি হয়ে গেছে বলে সরকারি হিসেবে উঠে আসে। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী লুট করা পাথরের মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান- সর্বশেষ গত ২৬ জুলাই পরিমাপ অনুযায়ী জাফলংয়ে পাথর মজুত ছিল ৩ কোটি ৭৪ লাখ ঘনফুট। ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে সেখানে ব্যাপক লুটপাটে প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর উধাও হয়ে যায়। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সেখানে সেনা সদস্যরাও যেতে পারেননি। এই পাথর লুটের পর এর সঙ্গে আরও কয়েকজনসহ জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরান সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ উঠে। পরে বিএনপি খোঁজ নিয়ে এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শাহ পরানের দলীয় পদ স্থগিত করে।
অপরদিকে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গোইয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনকে ওই সময় বহিষ্কা করেছিলো বিএনপি। তিনিও বর্তমানে পাথর লুটপাটে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনকারী মো. ইসমাইল হোসেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd